ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাঁশখালীতে সমাজসেবা অফিসে এনআইডি জালিয়াতি

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ৯ জুলাই ২০২০

বাঁশখালীতে সমাজসেবা অফিসে এনআইডি জালিয়াতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী ॥ চট্র্রগ্রামের বাঁশখালীর সমাজসেবা অফিসের ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের বয়স্ক ভাতার তালিকা অনুমোদন করতে গিয়ে ধরা পড়ে নকল ভুয়া জন্ম সনদ, এনআইডি কার্ডসহ নানা ধরনের সনদ । আর সে কাজে সংশ্লিষ্ট উপজেলা সমাজসেবা দফতরের কয়েকজন ব্যক্তি। আর তার প্রকৃত তথ্য বের করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার করে দেন ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। এ কমিটি বুধবার রাতে বাঁশখালী উপজেলা ও পৌরসদরের ৭টি কম্পিউটারের দোকানে অভিযান চালিয়ে পেলেন এর সত্যতা। তা নিয়ে বুধবার রাতে এ নিউজ লেখা পর্যন্ত (রাত ১০টা) পেশকার দেবাশীষ দাশ বাদী হয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বলে উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা যায় ।তবে অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে আজ বৃহস্পতিবার ওই ব্যাবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে বলে ইউএনও অফিস সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালীতে দীর্ঘদিন থেকে বয়স্কভাতায় নানা অসঙ্গতির অভিযোগ থাকায় চলতি ২০১৯-২০২০ সালের বয়স্কভাতার তালিকা অনুমোদন করতে গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তা যাচাই বাছাই করার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: আতিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল আলম এবং সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আবু সুফিয়ানকে নিয়ে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকানে জাল এনআইডি, জন্মসনদ ও বিভিন্ন ধরনের সার্টিফিকেট তৈরিতে জড়িত কিছু দোকানের নাম উঠে আসে। আর সেই কাজে সহযোগিতা করে সমাজসেবার অফিসের চাকুরীজীবী দেলোয়ার, মিলকী ও জ্যোতি নামে তিনজন সহ আরো বেশ কয়েকজন। এসব জালিয়াতির সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়ে বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র জাল করে তৈরীর অভিযোগে ৭টি ব্যবসায়িক কম্পিউটারের দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে এসব জালিয়াতির তথ্য পাওয়ায় ৫ টি কম্পিউটার জব্দ করা হয়। কম্পিউটার দোকানগুলোর মধ্যে রয়েছে বিজয় চৌধুরীর ২টি, শিব্বির আহমদের ১টি, মো. শাহাবুদ্দিনের ১টি ও মৃদুল দত্তের ১টি কম্পিউটার। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: আতিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সাল আলম ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আবু সুফিয়ান যৌথভাবে এসব অভিযান পরিচালনা করে রাতে এ সব তথ্য প্রদান করেন তাঁরা। ভুয়া কাগজপত্র পাওয়ার ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতিকুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে উপজেলা সদরের সাতটি কম্পিউটারের দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি দোকানের কম্পিউটারে জাল কাগজ বানানোর প্রমাণ মিলেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোমেনা আক্তার বলেন,দীর্ঘদিন থেকে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বয়স্কভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ ছিল। তা নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্তকালে এসব জালিয়াতির সাথে সমাজসেবা কর্মকর্তা কার্যালয়ের তিনজন কর্মচারী জড়িত রয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র সহ বিভিন্ন সনদ জালিয়াতি করে যারা এসব কাজ করেছে তাদেরকে কঠোর শাস্তি পেতে হবে।
×