ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রুহুল আমিন ভূঁইয়া

‘জোছনা’ হয়ে ফিরছেন ছন্দা

প্রকাশিত: ০১:২৫, ৯ জুলাই ২০২০

‘জোছনা’ হয়ে ফিরছেন ছন্দা

গোলাম ফরিদা ছন্দা। ছোট পর্দার নন্দিত অভিনেত্রী। নব্বই দশক থেকে দর্শক তকে একই রূপে দেখে আসছে। মাঝে বেশ কিছু দিনের যাত্রা বিরতি। কিন্তু তাতে কি, দর্শক আজও ছন্দাকে মনে রেখেছে। ‘কাজল কালো দিন’ নাটকের মধ্যে দিয়ে পুনশ্চ শুরু করবেন ছন্দ। আসছে মাসের পনেরো আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেশের শীর্ষ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ক্রাউন এন্টারটেইনমেন্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য এক ডজন নাটক ‘উপহার’ দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় শোক দিবসের জন্য ‘জোছনা’ শিরোনামের একটি কাহিনীচিত্র নির্মাণ করবেন গোলাম ফরিদা ছন্দা। কাহিনীচিত্র পরিচালনার পাশাপাশি নাম ভূমিকায় নিজেই অভিনয় করবেন। শোয়েব চৌধুরীর গল্পে চিত্রনাট্য ও সংলাপ করেছেন ফেরারি ফরহাদ। এর মধ্যে দিয়ে প্রথমবার নির্মাতার খাতায় নাম লেখাতে যাচ্ছেন এ অভিনেত্রী। খুব শীঘ্রই স্বাস্থ্যবিধি মেনে নাটকটির দৃশ্য ধারণে অংশ নেবেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় ‘জোছনা’র চরিত্রে ছন্দা কেন? উত্তরে আনন্দকণ্ঠকে ছন্দা বলেন, ‘অভিনয়ের প্রতি সব সময় আমার অন্যরকম টান। তা ছাড়া বিষয়টি বঙ্গবন্ধু কে নিয়েÑ তাই চরিত্রের লোভ সামলাতে পারিনি! বঙ্গবন্ধু মানেই তো বাংলাদেশ। এমন একটি সুবর্ণ সুযোগ পেলে কে হাত ছাড়া করবে বলেন? ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এ বছর জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ক্রাউন এন্টারটেইনমেন্ট ব্যতিক্রমী একটি উদ্যোগ নিয়েছে। ক্রাউন কর্তৃপক্ষ আমাকে নির্মার্ণের প্রস্তাব দিলে বিষয়টি ভীষণভাবে আমার মনে নাড়া দেয়। কারণ এমন একটি দিবসের কাজের প্রস্তাব পেয়েছি, যা সত্যিই অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। এ জন্যই কোন কিছু না ভেবেই রাজি হয়ে যাই। এর আগেও নির্মাণের প্রস্তাব পেয়েছিলাম কিন্তু আগ্রহ করিনি। ক্রাউনের কর্ণধার শোয়েব চৌধুরীর প্রতি কৃতজ্ঞতা, ভাল একটি কাজের সঙ্গে আমাকে যুক্ত রাখার জন্য।’ চরিত্র এবং অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিনয় একটা শিল্প, গভীর ভালবেসে এটা করতে হয়। চরিত্র বা গল্প বুঝে সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে। সততা থাকলে অভিনয় কঠিন মনে হবে না। থিয়েটারের ওপর কোর্স করে অভিনয়ের যাত্রা শুরু করেন ছন্দা। থিয়েটারের সেই শিক্ষাটা তাকে অভিনয় পেশা হিসেবে নিতে সহযোগিতা করেছে। তিন দশক আগে প্রথম ক্যামেরার সামনে যেদিন দাঁড়িয়ে ছিলেন সেদিন একটিবারের জন্যও নার্ভাস ফিল করেননি ছন্দা। কারণ অভিনয়ের ‘অ’ শব্দটি শিখে যেনে বুঝে পথচলা শুরু করেন। ছন্দা পড়াশোনা করেছেন নাট্যতত্ত্ব নিয়ে। ভাললাগা থেকে অভিনয়ে আসেন। আস্তে আস্তে সেই ভাললাগাটা ভালবাসায় পরিণত হয়। সেই সময়ের সমাজ বাস্তবতায় অভিনয়ে আসা নিয়ে পরিবার থেকে বাধা ছিল। কিন্তু ছন্দার পরিবার থেকে বিষয়টা ছিল ঠিক উল্টো। শুরুতে পরিবার থেকে ভীষণ সহযোগিতা পেয়েছিলেন তিনি। বন্ধুদের সাপোর্ট না থাকলেও পরিবার অনেক সাপোর্ট করেছে। যে কোন পেশায় সফলতা অর্জন করতে হলে চড়াই-উতরাই থাকে। কোন ভাবনা থেকে অভিনয় পেশা হিসেবে নিয়েছিলেন? অভিনয়ের প্রতি টান ছিল, ভালবাসা ছিল। মায়েরও অনেক অনুপ্রেরণা ছিল। ভালবাসা থেকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। -বললেন ছন্দা। আসছে ঈদে ছন্দাকে নতুন নাটকে পাওয়া যাবে? উত্তরে ছন্দা বলেন, ‘ক্রমশ করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই এ সময়ে কাজ করছি না। যার কারণে আসছে ঈদের জন্য একটি নাটকে কাজ করেছি। তাও নিজের ঘরে থেকে শূটিং হয়েছে বলে কাজটি করা। কামরুজ্জামান সাগরের পরিচালনায় ‘বাবারা সব পারে।’ করোনার কারণে জনজীবন হুমকির মুখে এ সময়ে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করে কাজ করতে হবে। সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার অনুরোধ রইল।’ ছন্দার দৃষ্টিতে বর্তমানে অনেক ভাল ভাল নাটক নির্মাণ হচ্ছে। বাকি জীবনটা অভিনয় করেই কাটিয়ে দিতে চান সদা হাস্যোজ্জ্বল এই অভিনেত্রী। ছন্দা ছাড়াও ক্রাউন এন্টারটেইনমেন্ট প্রযোজিত এ সময়ের এগারো জন জনপ্রিয় নির্মাতা শোক দিবসের নাটকগুলো নির্মাণ করবেন। তারা হলেন গোলাম সোহরাব দোদুল, ফরিদুল হাসান, শামীম জামান, দেবাশীষ বিশ্বাস, আদিবাসী মিজান, তাজু কামরুল, মোস্তাফিজুর রহমান মানিক, সুজিদ বিশ্বাস, বন্ধন বিশ্বাস, আবু হায়াৎ মাহমুদ ও সুমন ধর।
×