ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রাউড ফান্ডিং পারে ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে

প্রকাশিত: ২১:০৬, ৬ জুন ২০২০

ক্রাউড ফান্ডিং পারে ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের বাঁচাতে

আইটি ডটকম প্রতিবেদক ॥ কোভিড-১৯-এর কারণে অন্যান্য অনেক খাতের মতোই-কমার্স খাত ও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এসব ক্ষতি পোষানোর জন্যই-ক্যাব থেকেও নেয়া হয়েছে নানা রকম উদ্যোগ। পরিস্তিতি স্বাভাবিক হলে বিজনেস সেক্টর কি গতি ফিরে পাবে? এ রকম নানা প্রশ্ন ঘুরে-ফিরে আসে আমাদের মাঝে। এসব নিয়ে ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর ডিরেক্টর সাঈদ রহমান জনকণ্ঠের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন। করোনার কারণে ই-কমার্স সেক্টর কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিশাল ক্ষতি হয়েছে ই-কমার্স সেক্টরে। একটি চারা গাছের উপর দিয়ে অনেক বড় একটি ঝড় বয়ে গেলে যা হয়। ই-ক্যাবে আমাদের যে জরিপ হয়েছিল তাতে দেখা যায় এই সেক্টরে করোনার কারণে মাসিক ক্ষতির পরিমাণ ৬৬৬ কোটি টাকা। আরও সহজ ভাষায় বলতে গেলে বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও তারা আর অপারেশনে ফিরতে পারবে না। কারণ হবে লোকসান এবং পুঁজি সঙ্কট। আমরা তো জানি যে, করোনার কারণে মানুষ গৃহ বন্ধী থাকায় ই-কমার্স পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। কারণ মানুষ বাধ্য হয়ে অনলাইনে কেনাকাটা করেছে। তাহলে এই সেক্টরে ক্ষতির মাত্রা অন্যদের চেয়ে কম হওয়ার কথা নয়কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যাপারটা আসলে তা নয়। যারা মুদি, খাবার কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করেন তাদের ব্যবসা ২শ-৩শ শতাংশ বেড়েছে এটা সত্য। কিন্তু এদের সংখ্যা তো হাতেগোনা কয়েকটা। মোট ৫ শতাংশ কোম্পানি খাদ্যপণ্য সেবা দেয়। ৩ শতাংশ কোম্পানি রয়েছে লজিস্টিকস সেবাদাতা। তাহলে বাকি ৯২ শতাংশ কোম্পানির ব্যবসা বন্ধ ছিল। এখন ৮ শতাংশ কোম্পানির ব্যবসা যদি ৩ গুণ বৃদ্ধি পায় তাতে কি পুরো সেক্টরকে নির্দেশ করে? করে না। তাছাড়া আপনাকে মনে রাখতে হবে ওই ৫ শতাংশ কোম্পানির পণ্য ডেলিভারি করে ৩ শতাংশ কোম্পানি। তাহলে মূলত আসলে ৫% শতাংশ ব্যবসা চলমান ৯৫ শতাংশ বন্ধ। সুতরাং ক্ষতির মাত্রা কোন অংশেই কম নয় এবং কারও কারও চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ডেলিভারিম্যানের অভাবে ব্যবসার পরিধি বাড়ানো সম্ভব হয়নি। এমন কি ঈদের আগ মুহূর্তে অনুমতি পাওয়ার পরও পূর্ণভাবে ডেলিভারি দিতে পারেনি তারা। আর যেখানে ঈদ ঠিকভাবে হবে না সেখানে ঈদের পোশাক কেনার ব্যাপারে মানুষের আগ্রহও দেখা যায়নি। কিন্তু ব্যবসা বন্ধ থাকলেও খরচ তো বন্ধ থাকে না। এই ক্ষতিপূরণের উপায় নিয়ে কি ভাবছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে এই ক্ষতি আসলে কখনও পূরণ হবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যদি বেচাকেনা শুরু হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানরা টিকে থাকার লড়াইটা চালিয়ে যেতে পারবে। কারণ, কোভিডের কারণে ক্রেতাদের আয়ের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়েছে। তাই আমরা চাইলেও সহসা সবকিছু স্বাভাবিক হবে না। মাঝারিমানের ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানিগুলোর সহজশর্তে ব্যাংক লোন দরকার এবং কম ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানিগুলোর জন্য দরকার বিনিয়োগ বা কিছু সেলস জেনারেট করা। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ক্ষুদ্রই-কমার্স এবং ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের ঘুরে দাঁড়ানো। এদের টিকিয়ে রাখতে আমার মতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ক্রাউড ফান্ডিং। ই-ক্যাব থেকে কি ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, ই-ক্যাব এ ব্যাপারে শুরু থেকে সচেতন। প্রথমে জরুরী পণ্য, পরে তৈরি খাবার, ইলেকট্রনিক্স, পোশাক এবং বই অনলাইনে বিক্রয়ের অনুমতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে গ্রহণ করেছেই ক্যাব এবং একটি জরিপের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে এনে সেটা সরকারের কাছে তুলে ধরেছে।
×