ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মৃত্যু ২২, আক্রান্ত ১৭৭৩

একদিনে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের রেকর্ড

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ২২ মে ২০২০

একদিনে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের রেকর্ড

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে একদিনে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে বৃহস্পতিবার। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২২ জনের মৃত্যু এবং ১৭৭৩ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৪০৮ এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮ হাজার ৫১১ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ৩৯৫ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৬০২ জন। পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যার বিবেচনায় বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নতুন রোগী শনাক্তের হার ১৭ শতাংশের বেশি । গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ২৬২টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ১১৪টি। নমুনা পরীক্ষার ল্যাবের সংখ্যা ৪টি বেড়ে দাঁড়াল ৪৭টি। গত কয়েকদিনে হটলাইনগুলোতে করোনা সংক্রান্ত কলের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় হটলাইনগুলোতে কল এসেছে সোয়া তিন লাখ। করোনা সন্দেহে বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৩৮৯৭ জন। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২২ জনের মধ্যে ১৯ জন পুরুষ এবং তিনজন নারী। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের আটজন, সিলেট বিভাগের তিনজন ও ময়মনসিংহ বিভাগের একজন। ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা শহরের আটজন, ঢাকার অন্যান্য স্থানের একজন, নারায়ণগঞ্জের একজন, চট্টগ্রাম শহরের চারজন, কক্সবাজারের একজন, চাঁদপুরের তিনজন, ময়মনসিংহ শহরের একজন, সিলেট বিভাগের সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার একজন এবং সিলেটের অন্যান্য স্থানের দুইজন রয়েছেন। ২২ জনের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ১৬ জন, বাড়িতে মারা গেছেন পাঁচজন এবং মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় একজনকে। মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে দুইজন রয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ১৫৪ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন তিন হাজার ৮৯৭ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭৩ জন, এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ৯৬৬ জন। তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম নিয়ে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে চার হাজার ৩২ জনকে। এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৫৫ হাজার ৫৩৪ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন দুই হাজার ৫৯১ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড়া পেয়েছেন দুই লাখ এক হাজার ১৫২ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৪ হাজার ৩৮২ জন। সাড়ে তিন লাখের বেশি পিপিই মজুদ রয়েছেÑ স্বাস্থ্য অধিদফতর ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, এ পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে ২৩ লাখ ৮৯ হাজার ২৬৭টি পিপিই এবং বিতরণ করা হয়েছে ২০ লাখ ৩২ হাজার ২২২টি। বর্তমানে মজুদ রয়েছে ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫টি পিপিই। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন লাখের বেশি করোনা সংক্রান্ত কল ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য বাতায়নের নম্বরে ৫৯ হাজার ৩৭৮টি, ৩৩৩ নম্বরে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪১৩টি এবং আইইডিসিআর’র নম্বরে ২০৫১টি করোনা সংক্রান্ত কল এসেছে। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কল এসেছে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৪২টি। এ পর্যন্ত হটলাইনগুলোতে করোনা সংক্রান্ত মোট কল এসেছে ৬৭৮ লাখ ৯৮ হাজার ৫২৬টি। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২৫৬ জনÑ স্বাস্থ্য অধিদফতর ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমন্বিত করোনা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৯, কুর্মিটোল জেনারেল হাসপাতালে ৩৭ জন, রিজেন্ট হাসপাতালে ৫ জন, সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ২ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ১০৮ জন, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১১ জন, সিএমএইচ হাসপাতালে ৫৪ জন এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বার্ন ইউনিটে ২২ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এভাবে ঢাকা বিভাগে ৬১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ২০ জন, সিলেট বিভাগে ১১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২২ জন এবং রংপুর বিভাগে ৯ জন সুস্থ হয়েছেন। অর্থাৎ একদিনে সারাদেশে ৩৯৫ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট ৫৬০২ জন সুস্থ হয়েছেন বলে জানান ডা. নাসিমা সুলতানা। ৬০ বছরের বেশি বয়সী রোগীর মৃত্যুহার বেশি ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬০ বছরের বেশি ৪২ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২৭ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৯ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৭ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ৩ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ২ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী রোগীর মধ্যে কেউ মারা যাননি। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরাই বেশি আক্রান্ত ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি ৪ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৪ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ২৬ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৪ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ৩ শতাংশ। করোনায় মৃতের হার ৭১ শতাংশ পুরুষ এবং ২৭ শতাংশ নারী। আর আক্রান্তের হার ৬৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৩২ শতাংশ নারী। ঢাকা সিটিতে কাইরাইলে সর্বোচ্চ করোনা রোগী ॥ কাকরাইলে ২৯৮ জন, যাত্রাবাড়ীতে ২৮০ জন, মহাখালীতে ২৭২ জন, মোহাম্মদপুরে ২৩৫ জন, মুগদায় ২২৬ জন, রাজারবাগে ২০৮ জন, উত্তরায় ১৭১ জন, মগবাজারে ১৬৬ জন, তেজগাঁওয়ে ১৫৫ জন, বাবুবাজারে ১৩০ জন, লালবাগে ১৩০ জন, মিরপুরে ১২৯ জন, ধানমন্ডিতে ১২৫ জন, মালিবাগে ১২০ জন ও বাড্ডায় ১১৩ জন।
×