ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বে করোনায় মৃত্যু বেড়ে প্রায় তিন লাখ

স্বেচ্ছায় হোমকোয়ারেন্টাইনে কসোভোর প্রধানমন্ত্রী, লাশের মিছিল মেক্সিকোয়

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ১৫ মে ২০২০

স্বেচ্ছায় হোমকোয়ারেন্টাইনে কসোভোর প্রধানমন্ত্রী, লাশের মিছিল মেক্সিকোয়

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ গতবছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে উহানে মহামারী নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। চীনের পর ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র ছিল ইউরোপের ইতালি। একটানা অনেকদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষে থাকা দেশটিতে এখন কমতে শুরু করেছে ভাইরাসটির সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্তের চেয়ে চারগুণ বেশি রোগী সুস্থ হয়েছে। আর লাতিন আমেরিকার দেশ চিলিতে সংক্রমণ বাড়ছে। কসোভোর প্রধানমন্ত্রী স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে গেছেন। করোনায় এবার আক্রান্ত হলেন মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র। অন্যদিকে সৌদি আরবে সুস্থতার রেকর্ড হওয়ার একদিন যেতে না যেতেই আবারও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ল। করোনাভাইরাসে ভারতে প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। খবর বিবিসি, সিএনএন, আনাদোলু, সৌদি গেজেট, তাস ও ওয়ার্ল্ডোমিটারের। সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সারাবিশ্বের ১১৩ দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭০৫ জনে দাঁড়িয়েছে। মারা গেছেন দুই লাখ ৯৯ হাজার ৪১৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ৩০৬ জন। ইতালির সরকারী স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একদিনে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে দুই হাজার ৮০৯ জন কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৮৮ জন। বিপরীতে একই সময়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিন হাজার ৫০২ জন কোভিড-১৯ রোগী। মারা গেছেন ১৯৫ জন। ফলে গত ৩১ মার্চের পর ইতালিতে প্রথমবারের মতো সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৮০ হাজারের নিচে নামল। ইতালিয়ান সিভিল প্রোটেকশন এজেন্সির দেয়া হিসাব অনুযায়ী, এই সুস্থতার হার সংক্রমণ কমার ইঙ্গিত। এছাড়া গত কিছুদিন যেখানে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছিলেন তাও কমেছে। প্রাদুর্ভাব শুরুর পর ইতালিতে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দুই লাখ ২২ হাজার ১০৪ জন। মারা গেছে ৩১ হাজার ১০৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১ লাখ ১২ হাজার ৫৪১ জন চিকিৎসা শেষে এখন সুস্থ। হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে এখন সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৭৮ হাজার ৪৫৭ জন। সংক্রমণ বাড়ছে চিলিতে ॥ প্রথমদিকে চিলিতে করোনার সংক্রমণের হার ছিল খুবই কম। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আরও ২ হাজার ৬৬০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটার পর এটাই একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের ঘটনা। কসোভোর প্রধানমন্ত্রী কোয়ারেন্টাইনে ॥ কসোভোর প্রধানমন্ত্রী আলবিন কুর্তি স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত হতে নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন। এখন পর্যন্ত রিপোর্ট হাতে পাননি। কসোভোর মন্ত্রিসভার এক সদস্য করোনায় আক্রান্ত এক ব্যক্তির সংস্পর্শে গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে সাক্ষাতের পরই প্রধানমন্ত্রী হোম কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার ওই ঘোষণা দেন। মেক্সিকোয় মৃত্যুর মিছিল ॥ মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এবরার্ডের মুখপাত্র রবার্তো রোসকো আলভারেজ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের একজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে করোনার সংক্রমণ দেখা দেয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রবার্তো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর খুবই ঘনিষ্ঠ একজন। সৌদিতে আরও ৯ মৃত্যু ॥ সৌদি আরবে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৯০৫ জন। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৪ হাজার ৮৩০ জনে। ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৯ জন। মোট ২৭৩ জনের মৃত্যু হলো। নতুন করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন দুই হাজার ৩৬৫ জন। সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৭ হাজার ৬২২ জন। চীনের পর ভারত ॥ ভারতে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির উৎস চীনের পরই এখন ভারতের অবস্থান। বর্তমানে চীনে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৮২ হাজার ৯২৯ জন, আর ঠিক তার পরই আছে ভারত। এ দেশটিতে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৮১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় চীনে যেখানে আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র সাত জন, সেখানে ভারতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৭৬৩ জন। এ থেকেই বোঝা যায় কোন দিকে যাচ্ছে দেশটির করোনা পরিস্থিতি। ভারতে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছিল সোমবার। একদিনে বিশ্বে মৃত্যু ও আক্রান্ত ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় সারাবিশ্বে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮ হাজার ২২০ জন। যাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত ২১ হাজার ৭১২, স্পেনে এক হাজার ৫৭৫, রাশিয়ায় দশ হাজার ২৪, ব্রিটেনে তিন হাজার ২৪২, ব্রাজিলে ১১ হাজার ৫৫৫, জার্মানিতে ৯২৭, তুরস্কে এক হাজার ৬৩৯, ইরানে এক হাজার ৯৫৮, চীনে সাত জন, পেরুতে চার হাজার ২৪৭, কানাডায় এক হাজার ১২১, বেলজিয়ামে ২০২, হল্যান্ডে ২২৭, পাকিস্তানে দুই হাজার ৬২৪ জন। মারা গেছেন পাঁচ হাজার ৩২৪ জন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছেন এক হাজার ৭৭২, স্পেনে ১৮৪, রাশিয়ায় ৯৬, ব্রিটেনে ৪৯৪, ইতালিতে ১৯৫, ব্রাজিলে ৭৫৪, ফ্রান্সে ৮৩, জার্মানিতে ১২৩, তুরস্কে ৫৮, ইরানে ৫০, পেরুতে ১১২, কানাডায় ১৩৩, বেলজিয়ামে ৮২, হল্যান্ডে ৫২, পাকিস্তানে ৩৭, সুইডেনে ১৪৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে আক্রান্ত হয়েছে ২৮ হাজার ৩৩২ জন। যার মধ্যে স্পেনে এক হাজার ৫৫১, রাশিয়ায় নয় হাজার ৯৭৪, ব্রাজিলে ৯৮০, ইরানে এক হাজার ৮০৮, ভারতে ৭৫৫, বেলজিয়ামে ৩০৭, হল্যান্ডে ২৭০, পাকিস্তানে ৪৯০, কাতারে এক হাজার ৭৩৩। এর মধ্যে স্পেনে ২১৭, রাশিয়ায় ৯৩, ব্রাজিলে ৮২, ইরানে ৭১, বেলজিয়ামে ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারীভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে।
×