ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

মুমূর্ষু রোগীদের কাছে আতঙ্কের নাম করোনামুক্ত সনদ

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ১৩ মে ২০২০

মুমূর্ষু রোগীদের কাছে আতঙ্কের নাম করোনামুক্ত সনদ

নিখিল মানখিন ॥ হাসপাতাল গুলোতে ভর্তি চিকিৎসাগ্রহণ ও ভর্তি হতে যাওয়া রোগীদের কাছে আতঙ্কের নাম ‘করোনামুক্ত সনদ’। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত এবং মুমূর্ষু রোগীদের কাছে আতঙ্কের মাত্রা যেন কয়েকগুণ বেশি। ‘করোনামুক্ত সনদ’ ছাড়া সরকারী ও বেসরকারী বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা মিলছে না। করোনার নমুনা টেস্ট করেই এই করোনামুক্ত সনদ পাওয়া সম্ভব। এমন শর্ত পূরণ করতে কিডনি, লিভার, ক্যান্সার, হৃদরোগসহ জটিল অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করার লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। ল্যাবরেটরিতে গেলেই মিলছে না করোনার নমুনা পরীক্ষা। নানা বিড়ম্বনা পেরিয়ে পরীক্ষা করার সুযোগ পেলেও রিপোর্ট পেতে কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা না পেয়ে রোগীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে। নমুনা পরীক্ষার অপেক্ষাধীন অবস্থায় ইতোমধ্যে বেশ কিছু সংখ্যক জটিল ও মুমূর্ষু রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। একের পর এক নির্দেশনা দিয়েও হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার আরেকটি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। মঙ্গলবার পাঠানো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের করোনা প্রতিরোধ স্বাস্থ্য মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব মোঃ মাইদুল ইসলাম প্রধান স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত সোমবার চলমান করোনা পরিস্থিতিতে নন কোভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে দেশের সকল হাসপাতালে কোভিড-১৯ চিকিৎসার পাশাপাশি নন-কোভিড রোগীদেরও চিকিৎসা প্রদানের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৩টি জোরালো নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনাগুলো হচ্ছে- সকল বেসরকারী হাসপাতাল/ ক্লিনিকসমূহে সন্দেহভাজন কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ব্যবস্থা থাকতে হবে। চিকিৎসা সুবিধা থাকা সত্ত্বেও জরুরী চিকিৎসার জন্য আগত কোন রোগীকে ফেরত দেয়া যাবে না। রেফার করতে হলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ‘কোভিড হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ কক্ষের’ সঙ্গে যোগাযোগ করে রোগীর চিকিৎসার বিষয়টি সুনিশ্চিত করে রেফার করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে যে সকল রোগী কিডনি ডায়ালিসিসসহ বিভিন্ন চিকিৎসা গ্রহণ করছেন তারা কোভিড আক্রান্ত না হয়ে থাকলে-তাদের চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল পাঠানো স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, সরকারী হোক বা বেসরকারী- যে কোন হাসপাতালে করোনা সন্দেহভাজন রোগী এলে তা স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষে জানাতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়, সরকারী বা বেসরকারী হাসপাতালে কোন মুমূর্ষু রোগী কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত বলে যদি সন্দেহ হয়, কোন কারণে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো যদি সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে রোগীকে অপেক্ষমাণ রেখে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের চারটি নম্বরের যে কোনটিতে ফোন করে ওই রোগীর চিকিৎসা বা ভর্তি-সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ নিতে হবে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। কিন্তু নির্দেশনাটি আমলে নিচ্ছে না হাসপাতালগুলো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা রোগীদের জন্য নির্বাচিত হাসপাতালগুলোতে গিয়ে চিকিৎসক দেখিয়ে অথবা নির্ধারিত ল্যাবগুলোতে নমুনা পরীক্ষা করিয়ে আতঙ্কে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালগুলোর স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা। চিকিৎসক ও রোগী উভয়ই ভুগছে করোনা আতঙ্কে। একের পর এক হাসপাতাল লকডাউনের শিকার হচ্ছে। বেড়েই চলেছে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের সংখ্যা। সংক্রমিত হওয়ার আতঙ্কে তারা নানা অজুহাতে হাসপাতালে আগত রোগীদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন। বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে বেশ কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। আর করোনা আক্রান্ত হাসপাতালে গেলেই করোনায় অক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে আতঙ্কে ভুগছেন সাধাণ রোগীরা। জটিল রোগে আক্রান্ত এবং অতি প্রয়োজন না হলে হাসপাতালমুখী হচ্ছেন না অনেক সাধারণ রোগী বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে, নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসাবঞ্চিত হওয়ার এবং চিকিৎসা না পেয়ে রোগী মৃত্যুর ঘটনা বেড়েই চলেছে। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর সরকারী-বেসরকারী ছয়টি হাসপাতালে সারাদিন ঘুরেও ভর্তি হতে পারেননি শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা রেবেকা সুলতানা চৌধুরী। করোনাভাইরাস নেই- এমন নথি দেখাতে না পারাসহ নানা অজুহাতে ওই নারীকে কোন হাসপাতালেই ভর্তি রাখা হয়নি। করোনা পরীক্ষার জন্য সরকারী তিনটি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য বাতায়নের ৩৩৩ নম্বরে স্বজনরা বারবার ফোন দিলেও সাড়া মেলেনি। শেষ পর্যন্ত ৯ ঘণ্টা ধরে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ঘুরতে ঘুরতে বিকেল ৫টার দিকে এ্যাম্বুলেন্সেই তার মৃত্যু হয়। স্বজনরা জানান, অসুস্থ হওয়ার পর রোগী নিয়ে তারা বিআরবি, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, বারডেম হাসপাতাল, আয়েশা মেমোরিয়াল, যা বর্তমানে ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়েছিলেন। পরীক্ষার জন্য মুগদা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়েও গিয়েছিলেন। কোন হাসপাতালই রোগীকে ভর্তি করেনি। করোনার পরীক্ষাও করাতে পারেননি তারা। করোনার উপসর্গ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে ভোরের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার আসলাম রহমানের মৃত্যু হয়। সম্প্রতি শ্বাসকষ্টসহ করোনার উপসর্গ দেখা দেয়ায় তিনি নমুনা পরীক্ষা করেন। বুধবার পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। কিন্তু বৃহস্পতিবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে তাকে রাজধানীর ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু লক্ষণ-উপসর্গ দেখে করোনা সন্দেহ হওয়ায় ওই হাসপাতাল তাকে ভর্তি করেনি। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এভাবেই হাসপাতালে রোগী ভর্তি না করে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। করোনা সংক্রমণের এই সময়ে অন্যান্য রোগের চিকিৎসা মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। চিকিৎসা না পেয়ে অন্য রোগে আক্রান্তদের কেউ মারা যাচ্ছেন, কেউ ভোগান্তিতে পড়ছেন। রামপুরা বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা মোঃ সাইফুল (৪৫) গত বছরের মাঝামাঝিতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় হাঁটুতে মারাত্মক আঘাত পেয়েছিলেন। চিকিৎসার পর তা ভাল হয়ে যায়। কিন্তু গত মাসের শেষ দিকে হাঁটুতে ব্যথা অনুভূত হয়। সেই সঙ্গে শরীরে ছিল সামান্য জ¦র। সর্দি-কাশি ও শ^াসকষ্ট কোনটাই ছিল না। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, গত ৩০ এপ্রিল তিনি রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম। জ¦র থাকার কথা শুনতেই চিকিৎসক আমাকে করোনা রোগীদের জন্য নির্বাচিত হাসপাতালে যেতে বলেন। বারবার বলার পরও অনেক আগের সড়ক দুর্ঘটনায় আঘাত পাওয়ার বিষয়টি শুনতেই চাননি চিকিৎসক। এক পর্যায়ে জরুরী বিভাগের ওই চিকিৎসকের সঙ্গে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসি। পরবর্তীতে এলাকার একটি ক্লিনিকে সাময়িক চিকিৎসা গ্রহণ করে হাঁটুর ব্যথা কমানো হয়েছে বলে জানান মোঃ সাইফুল। সর্দি জ¦র, কাশি নিয়ে রাজধানীর ধানম-ির সেন্ট্রাল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গিয়েছিলেন পশ্চিম রাজাবাজারের বাসিন্দা জুবায়ের আহমেদ (৩৭)। সর্দি, জ¦র ও কাশির কথা শোনার পর তাকে চিকিৎসক দেখানোর সুযোগ দেয়া হয়নি। মোঃ জুবায়ের জানান, পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালেও আমি একই পরিস্থিতির শিকার হয়েছি। আশপাশে সরকারী হাসপাতাল না থাকায় শমরিতা হাসপাতাল থেকে বিতাড়িত হয়ে সেন্ট্রাল হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ডাক্তার দেখানোর সুযোগ না দিয়ে আমাকে সরকারী হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে জানান মোঃ জুবায়ের আহমেদ। শুধু মোঃ সাইফুল ও জুবায়ের আহমেদ নন, প্রতিদিন চিকিৎসাসেবা না পেয়েই শত শত রোগীর বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী হাসপাতাল থেকে বিদায় নেয়ার ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় সরকারী- বেসরকারী হাসপাতালের উদ্দেশে জারি করা স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, তারা ওই রোগীর চিকিৎসা কিংবা ভর্তিও বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হটলাইনে যোগাযোগ করেছিলেন কিনা? ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী বলেন, ওই রোগীকে তাদের হাসপাতালে কয়েক ঘণ্টা রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল। রোগীর স্বজনরা হৃদরোগজনিত সমস্যার কথা বলার পর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। এরপর আরও দুই চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ইসিজি থেকে শুরু করে কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়। এতে তার হৃদরোগসহ অন্য কোন শারীরিক সমস্যা খুঁঁজে পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা তাকে করোনা সন্দেহভাজন হিসেবে গণ্য করে তাকে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দেন। এরপরই স্বজনরা রোগী নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হটলাইনে জানানোর নির্দেশনার বিষয়ে অবহিত নন বলে জানান প্রীতি চক্রবর্তী। হার্ট ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহজাদী ডলি বলেন, মারা যাওয়া শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা রেবেকা সুলতানা চৌধুরী রোগী বিআরবি হাসপাতালে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতেন। তাকে হার্ট ফাউন্ডেশনে রেফার করা হয়। চিকিৎসকরা কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখতে পান, রোগীর কিডনিজনিত সমস্যার পাশাপাশি বহুবিধ রোগ রয়েছে। কিন্তু হার্ট ফাউন্ডেশনে কিডনি ডায়ালাইসিসহ ওইসব রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় ভর্তি করা হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনার বিষয়ে তারাও অবহিত নন বলে জানান। বারডেম হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ জাফর আহমেদ লতিফ বলেন, সম্প্রতি করোনা সংক্রমিত এক রোগী তাদের হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হয়েছিলেন। এতে আরও চারজন রোগী, কয়েকজন চিকিৎসক ও নার্স আক্রান্ত হয়েছেন। পরে আইসিইউ লকডাউন করে দেয়া হয়। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, করোনা নেগেটিভ ছাড়া কাউকে ভর্তি করা হবে না বলে জানান অধ্যাপক ডাঃ জাফর আহমেদ লতিফ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগী ভর্তি সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবসম্মত নয় উল্লেখ করে ডাঃ জাফর আহমেদ লতিফ বলেন, শুধু নির্দেশনা দিলেই তো হয় না, সেটি কার্যকরের বিষয়ও এর সঙ্গে জড়িত থাকে। হাসপাতাল থেকে রোগী ফিরিয়ে দেয়া যাবে না- এই নির্দেশনা দেয়ার আগে সব হাসপাতালে মানসম্মত পিপিই ও মাস্ক সরবরাহ করা প্রয়োজন ছিল। আবার রোগীর লক্ষণ-উপসর্গ দেখে চিকিৎসক স্বাস্থ্য অধিদফতরের হটলাইনে ফোন করে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা নেবেন, এটিই বা কেমন কথা? এমবিবিএস পাস করা একজন চিকিৎসক কি বুঝবেন না রোগীর জন্য কী করতে হবে? বারডেম কেন, কোন সরকারী হাসপাতাল কি ওই নির্দেশনা মানছে? কারণ, করোনা পজিটিভ রোগীরাও তথ্য লুকিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এটি সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ওপর ঝুঁকি তৈরি করছে। সুতরাং বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে বলে মনে করেন ডাঃ জাফর আহমেদ লতিফ। আইইডিসিআর’র উপদেষ্টা অধ্যাপক ডাঃ মুশতাক হোসেন বলেন, চিকিৎসক-নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যসেবা যারা দিচ্ছেন তাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলেই কেবল এ সমস্যার সমাধান হবে। একইসঙ্গে যারা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ রয়েছে তাদের উচিত হবে প্রতিটি সেকশনে সবার কাজ সুনির্দিষ্টভাবে ভাগ করে দেয়া। দরকার হলে যেসব হাসপাতালে টেস্ট হচ্ছে সেখানে পাঠাবে অথবা সেসব সেন্টার থেকে এসে স্যাম্পল নিয়ে যেতে হবে। এভাবে করলে চিকিৎসা নিয়ে যে অনিশ্চয়তা হচ্ছে সেটা কেটে যাবে। কিন্তু এ অবস্থার শেষ হতে হবে এর কোন বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসমূহকেও রোগীদের আস্থা অর্জন করতে হবে। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম এ আজিজ বলেন, ঝুঁকি নিয়েও দায়িত্ব পালন করছেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সন্দেহজনক করোনা রোগীদের তাদের জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে পাঠিয়ে দেয়া হয়ে থাকে। এখন রোগীদের মধ্যেই করোনা আতঙ্ক বেশি কাজ করছে। হাসপাতালগুলোতে যাওয়া রোগীর সংখ্যা অনেক হ্রাস পেয়েছে। অতি প্রয়োজন বা জটিল কোন সমস্যা না হলে হাসপাতালমুখী হচ্ছেন না অনেক সাধারণ রোগী। আর করোনা আক্রান্ত হয়ে একের পর এক হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম হুমকিতে পড়ার কারণেও রোগী ভর্তি নেয়ার ক্ষেত্রে একটু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে। এক সময় এটা দূর হয়ে যাবে।
×