ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পানিশূন্যতায় অস্তিত্ব হারাচ্ছে মানস নদ

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ২৪ জানুয়ারি ২০২০

  পানিশূন্যতায় অস্তিত্ব হারাচ্ছে মানস  নদ

আবু জাফর সাবু, গাইবান্ধা ॥ গাইবান্ধা সদর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের খরস্রোতা মানস নদ এখন যৌবন হারিয়ে মৃতপ্রায় খালে পরিণত হয়েছে। মাঘ মাসের প্রারম্ভে শীর্ণকায় রূপ নেয়া নালাসদৃশ এই নদীটির এখন কোথাও পানি আছে আবার কোথাও নেই। যেখানে পানি আছে সেখানে অতিসহজেই হেঁটে পারাপার হচ্ছে মানুষ। অথচ বর্ষাকালে এই মানস নদী পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। নদীর বুকে তখন নৌকাও চলাচল করে। মাঝিরা মাছ ধরে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মানস নদী বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বগুড়া এবং সিরাজগঞ্জ জেলার একটি নদী। নদীটি গাইবান্ধা জেলায় প্রবেশ করে ব্রহ্মপুত্র নদীতে মিলেছে। মানসের দৈর্ঘ্য ১৭ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৫০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। তবে এবার ফাল্গুন, চৈত্রমাস আসার আগেই মানস নদীর অধিকাংশ স্থান পানিশূন্য হয়ে কৃষিজমিতে পরিণত হয়েছে। নদীর বুকে এবং দু’পাশজুড়েই বোরো ধানের বীজতলায় ছেয়ে গেছে। লক্ষ্মীপুর-মালিবাড়ি-দারিয়াপুর-ঘাগোয়া-গিদারির ওপর দিয়ে একেবেঁকে বয়ে যাওয়া শীর্ণকায় মানস নদী এখন সবুজের সমারোহ। শীর্ণকায় নালায় যে সমস্ত এলাকায় সামান্য পরিমাণ পানির প্রবাহ আছে তা বোরো মৌসুমে সেচ কাজে ব্যবহৃত হবে বলে কৃষকরা জানালেন। এলাকার কৃষকরা জানান, মানস নদীর এ অবস্থা আগে ছিল না। কিন্তু এখন পৌষ মাসের শুরু থেকেই নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় এই মানস নদী অকাল পানিশূন্যতার শিকার হয়ে নাব্য হারিয়ে ফেলেছে বলে জানালেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। এই নদী থেকে মাছের উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জেলায় মাছের সরবরাহ ব্যাপক হারে কমে গেছে। ফলে নদীনির্ভর মৎস্যজীবীরা পড়েছে চরম বিপাকে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই এই মানস নদী তার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন এলাকার কৃষিজীবী ও মৎস্যজীবীরা।
×