ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

আন্দোলনের অংশ হিসেবে সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ১১:০৭, ৫ জানুয়ারি ২০২০

আন্দোলনের অংশ হিসেবে সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি একটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা জনগণের কাছে যেতে চাই। তাই আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কবির মুরাদের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। জিয়া পরিষদ এ স্মরণ সভার আয়োজন করে। দেশে পরিবারতন্ত্র অভিযোগ করে তিনি বলেন, সবাই তাকিয়ে দেখেন ক্ষমতাসীন দল নমিনেশন কাকে দেয়, কে কোথায় আসে, সংগঠনগুলোর প্রধান কারা হয়? তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি একটি ‘এম্পটি ভেসেল’ এর মধ্যে পড়ে গেছে। আর আওয়ামী লীগ ঢোল বাজায় উন্নয়ন উন্নয়ন করে, কিন্তু ভেতর একদম ফাঁকা। এই রাষ্ট্রকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য আওয়ামী লীগ কাজ করছে। ফখরুল বলেন, সিটি নির্বাচনের বিষয়ে অনেকেই প্রশ্ন করছেন বিগত নির্বাচনে এই অবস্থার পরও আপনারা নির্বাচনে গেছেন কেন? আমরা বলেছি নির্বাচনকে আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছি। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা জনগণের কাছে যাব এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এই সরকারকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরাজিত করব। ফখরুল বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতে নাইকো মামলায় খালেদা জিয়া অপরাধী নয় তা প্রমাণিত হয়েছে। নাইকো দুর্নীতি মামলার মূল মামলা যেটা আন্তর্জাতিক আদালতে হয়েছে তা গোপন করে সরকার এ মামলা করেছে। যে মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতে রায় দিয়ে দিয়েছে। এই মামলায় বলা হয়েছে কোন ধরনের দুর্নীতি হয়নি এবং খালেদা জিয়াসহ অন্যায়ভাবে যাদের এ মামলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল তারা নির্দোষ। এ মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতে যারা বিচারক ছিলেন তারা সবাই বিদেশী। আমাদের সরকারও সেখানে ছিল, তারা অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিল। এ ধরনের যতগুলো মামলা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে সবগুলো মামলাই মিথ্যা মামলা। তারেক রহমানকেও যে সকল মামলায় জড়ানো হয়েছে তার সঙ্গেও তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। সরকারও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারেনি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে করায়ত্ব করে রেখেছে এবং একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য। সরকার মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে টিকে থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষেও কাজ করছে। তারা সংবিধানকে ধ্বংস করেছে। এর মাধ্যমে তারা ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চাচ্ছে। ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই কোন ছোট-খাটো লড়াই নয়, জোর লড়াই। এই লড়াইয়ে সবাইকে অংশ নিতে হবে। আসুন, আমরা সবাই সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাই। এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবার জন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলকে বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় আমাদের আবার একটা নতুন নির্বাচন আদায় করে নিতে হবে। জনগণের মুক্তির জন্য সত্যিকার অর্থেই একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ফখরুল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আজকে যাদের ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেয়া হচ্ছে তাদের একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড যদি দেখেন-সবচাইতে নিম্নœমানের লোকগুলোকে নিয়ে এসে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে ভিসি পদে নিয়োগ করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে একইভাবে। জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম সলিমুল্লাহ খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, জিয়া পরিষদ নেতা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক মওদুদ হোসেন প্রমুখ।
×