ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন দেশী পেঁয়াজ এক শ’ থেকে ১২০ টাকা কেজি

প্রকাশিত: ১১:০৫, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯

নতুন দেশী পেঁয়াজ এক শ’ থেকে ১২০ টাকা কেজি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দুই দিনে ২০ টাকা কমে চীনা বড় সাইজের প্রতিকেজি সাদা পেঁয়াজ খুচরা বাজারে এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে টিসিবির ট্রাকসেলের ৪৫ টাকার পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতার ভিড় নেই। সাধারণ ভোক্তারা লাইন ছাড়াই চাহিদামতো পেঁয়াজ কিনতে পারছেন ট্রাক থেকে। সোমবার সরকারী ছুটি থাকায় সকাল থেকে রাজধানীর ভোগ্য ও নিত্যপণ্যের বাজারে ভিড় বাড়তে থাকে। ভোক্তাদের কেনাকাটা অন্যদিনের চেয়ে বেশি ছিল বাজারগুলোতে। বেশি বেচাবিক্রিতে খুশি মুদিপণ্যের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তবে পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি ক্রেতারা। দেশী জাতের পাশাপাশি বাজারে এখন আমদানিকৃত চীনা, মিসর, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার ও তুরস্কের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি কমেছে চীনা পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহখানেক আগেও প্রতিকেজি চীনা পেঁয়াজ ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন সেই পেঁয়াজ ভোক্তারা ৬০ টাকায় কিনতে পারছেন খুচরা বাজার থেকে। এছাড়া টিসিবি থেকে এই পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় কেনা যাচ্ছে। ৪৫-৬০ টাকার মধ্যে পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ায় বাজারে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ প্রসঙ্গে কাপ্তান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মোঃ মিজানুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, সবচেয়ে বেশি কমেছে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম। নতুন ওঠা দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমে আসছে। এছাড়া ট্রাকসেলে বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় দাম কমে গেছে। জানা গেছে, বাজারে নতুন ওঠা দেশী পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১০০-১২০, চীনা পেঁয়াজ মানভেদে ৬০-৭০, মিসরের কালো পেঁয়াজ ৭০-৮০, মিয়ানমার ৯০-১০০ এবং পাতা পেঁয়াজ ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। ধীরে ধীরে পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বাজারে আমদানিকৃত পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং দাম কমে আসার কারণে টিসিবি ট্রাকসেলে ক্রেতা কমে গেছে। লাইন ধরে কেনার চাপ না থাকায় টিসিবির ট্রাকভর্তি পেঁয়াজ যেন শেষ হয় না। এ কারণে সাধারণ ভোক্তারাই এখন রাষ্ট্রীয় বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার (টিসিবি) ভরসা। দক্ষিণ শাহজাহানপুর ট্রাকসেলে পেঁয়াজ বিক্রি করছিলেন তৈয়ব আলী। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, সপ্তাহখানেক আগেও টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে দীর্ঘ লাইন ধরে নিতে হতো। এখন আর লাইনের কারবার নেই। একজন দুজন করে পথচারীদের কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ভিড় না থাকা ও বাজারের চেয়ে দাম কম হওয়ায় ট্রাক থেকে মধ্যবিত্তরাও পেঁয়াজ কিনে নিচ্ছেন। প্রসঙ্গত, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত রফতানি বন্ধ করে দিলে অভ্যন্তরীণ পেঁয়াজের বাজার বেসামাল হয়ে পড়ে। প্রতিকেজি ৪০-৫০ টাকার পেঁয়াজ দাম বাড়তে বাড়তে ৩০০ টাকায় গিয়ে ওঠে। অতি দামের কারণে পেঁয়াজ খাওয়া কমিয়ে দিতে বাধ্য হন সাধারণ ভোক্তারা। বাজারে অস্বস্তি তৈরি হয়। এ অবস্থায় মিসর, তুরস্ক, মিয়ানমার ও চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। এস আলম, সিটি, মেঘনাসহ অন্যান্য কয়েকটি বড় শিল্প গ্রুপ দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করানো হয়। বাজারে এখন পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। আমদানিকৃত পেঁয়াজের পাশাপাশি বাজারে উঠছে নতুন পেঁয়াজ। জানা গেছে, রমজান মাস সামনে রেখে ইফতারিতে ব্যবহার এমন সব পণ্যের দাম কমাতে কাজ শুরু করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আমদানি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বাজারে দেশী নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় এমন ১৫টি জেলায় এখন নতুন পেঁয়াজ তোলা হচ্ছে। এতে আগামী সপ্তাহ নাগাদ পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে। ঢাকার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে প্রতিকেজি নতুন দেশী পেঁয়াজ মানভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
×