ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

এখন আওয়ামী লীগ থেকেই বিএনপিতে আসার অবস্থা তৈরি হয়েছে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

এখন আওয়ামী লীগ থেকেই  বিএনপিতে আসার অবস্থা  তৈরি হয়েছে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে নয়, এখন আওয়ামী লীগ থেকেই বিএনপিতে আসার অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে শেরেবাংলানগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। সিনিয়র নেতা এম মোরশেদ খান ও লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমানের পদত্যাগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতারা পদত্যাগ করেছেন এটা এখনও আমি জানি না, এটা আমি আপনাদের মাধ্যমে জেনেছি। আরও কেউ দল ছেড়ে যাচ্ছেন কি না এমন তথ্যও আমার জানা নেই। বরং আওয়ামী লীগের অপকর্মের কারণে ওই দলটির এখন যেই অবস্থা তাতে আওয়ামী লীগ থেকেই অনেকে বিএনপিতে চলে আসবে। আওয়ামী লীগ দেউলিয়া হয়ে গেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ দলের প্রতি এখন আর কারও আস্থা নেই। এ দলের ত্যাগী নেতারাও এখন হতাশ। তারা নিজেদের দল সামলাতে পারছেন না। প্রতিদিন যুবলীগের সম্মেলন উপলক্ষে নিজেরা নিজেরা মারামারি করছে। কিন্তু তাদের পতন ঢেকে রাখার জন্য তারা অহেতুক মিথ্যা কথা বলছেন। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে তারা দেশের মানুষের অধিকার হরণ করেছে। গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। তথ্যমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীরা বিএনপির অনেক নেতাই আওয়ামী লীগে আসার জন্য যোগাযোগ করছে বলে যে কথা বলেছে তার প্রতিবাদ করে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা সবসময়ই এসব কথা বলেন। তারা নতুন নতুন গল্প তৈরি করেন। তারা সরকারে আছে বলেই গোয়েবলসীয় প্রচারের মাধ্যমে এ সরকারকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দল চালাচ্ছেন বলে এ দলের নেতাকর্মীরা চলে যাচ্ছেন বলে তথ্যমন্ত্রী যে কথা বলেছেন তার প্রতিবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, তারা সব সময় এ ধরনের অবান্তর কথা বলে। তারা তাদের নিজেদের ঘরই সামাল দিতে পারছে না তাই এখন বিএনপিকে নিয়ে মনগড়া নানান কথা বলছে। ফখরুল বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই, সুশাসন নেই। সবকছিু দলীয়করণ করেছে এ সরকার। এর মাধ্যমে এ সরকার দেশটাকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। এ অবস্থা থেকে দেশকে রক্ষা করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমেই দেশে ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। এ জন্য দেশের স্বার্থে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, তা না হলে রাজপথের আন্দোলনেই তাকে মুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে গুরুতর অসুস্থ তারপরও তাকে সুচিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। জামিনযোগ্য মামলায় তাকে জামিনও দেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন চলছে এই আন্দোলন ক্রমান্বয়ে আরও বেগবান হবে। ফখরুল বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় স্বাধীনতার যে চেতনা নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম এবং পরবর্তীকালে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম, সেই স্বৈরাচারকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে। পরবর্তীতে তাদের সংসদে নিয়ে গেছে। তাদের নিয়ে সরকারও গঠন করেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা ক’দিন আগে গণতন্ত্রকে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনকভাবে আক্রমণ করেছেন। তিনি আমাদের সকলের প্রিয় নূর হোসেন, যিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক ছিলেন, তার বিরুদ্ধে কতগুলো কথা বলেছেন, যে কথাগুলো সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। এ ধরনের কথা গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে পুরোপুরি অপমান করা, দেশের গণতান্ত্রিক মানুষকে অপমান করা। আমরা মনে করি প্রকাশ্যে সংসদে এবং অন্য সব জায়গায় মসিউর রহমান রাঙ্গার ক্ষমা চাওয়া উচিত। এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোঃ নেসারুল হক প্রমুখ।
×