ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাছ বৃষ্টির দেশ!

প্রকাশিত: ১০:১৯, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 মাছ বৃষ্টির দেশ!

মধ্য আমেরিকার দেশ হন্ডুরাসে প্রতিবছর আকাশ থেকে লাখ লাখ মাছ পড়ে বৃষ্টির মতো। রাস্তা-ঘাট, বাড়ির সামনে, ছাদে পড়ে মাছ। প্রতিবছরই এ ধরনের ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকেন হন্ডুরাসের মানুষ। প্রতিবছরের মে থেকে জুলাইয়ের মধ্যে এ ধরনের ‘মাছবৃষ্টি’ হন্ডুরাসের বিভিন্ন জায়গায় হয়ে থাকে। স্থানীয়রা এ ঘটনাকে বলেন ‘জুভিয়া দে পেতেস’। স্প্যানিশ এই শব্দের অর্থ হলো ‘মাছের বৃষ্টি’। আকাশ থেকে পড়তে থাকে মাছ, ব্যাঙসহ জলজ প্রাণী। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই সময় রীতিমতো লোক নামিয়ে রাস্তাঘাট পরিষ্কার করাতে হয়। ওই অঞ্চলের বহু মানুষের বিশ্বাস, এক দেবতার আশীর্বাদে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। ১৯ শতকের মাঝামাঝি খ্রীস্টান যাজক হোসে সুবিরানা হন্ডুরাসে যান। ওই সময় হন্ডুরাসের বেশিরভাগ মানুষ অত্যন্ত অনটন আর দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাতেন। তাদের দুর্দশা দূর করার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন তিনি। হোসে সুবিরানার প্রার্থনার পর থেকেই দারিদ্র্যের কষ্ট দূর করতে সৃষ্টিকর্তা আকাশ থেকে ‘মাছের বৃষ্টি’ দেন বলে বিশ্বাস করতে শুরু করেন ওই অঞ্চলের মানুষজন। ১৯৭০ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ দল পাঠানো হয় হন্ডুরাসে। ওই দলের সদস্যরা ‘মাছের বৃষ্টি’র ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের সদস্যরা জানান, ওই অঞ্চলে আকাশ থেকে যেসব মাছের বৃষ্টি হয়, তা কোন সমুদ্রিক মাছ নয় বরং সেগুলো মিষ্টি পানির মাছ। আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো ঝরে পড়া মাছগুলো কোন নদী, পুকুর বা হ্রদের মতো মিষ্টি পানির জলাশয়ের মাছ। শুধু তাই নয়, বেশিরভাগ মাছই প্রায় একই প্রজাতির। যদিও ১৯৭০ সালে হন্ডুরাসে মাছের বৃষ্টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সদস্যদল পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করেনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। যে এলাকায় প্রতিবছর এক বা দুইবার মাছের বৃষ্টি হয়, আটলান্টিক মহাসাগর তার থেকে প্রায় দুই শ’ কিলোমিটার দূরে। অনেকে মনে করেন, টর্নেডো বা সামুদ্রিক ঝড় আটলান্টিক মহাসাগরের বিভিন্ন অংশের মাছ উড়িয়ে ওই অঞ্চলে ফেলে। কিন্তু এমন ঘটনা প্রতিবছর কীভাবে সম্ভব, সে ব্যাপারে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। -নিউইয়র্ক টাইমস
×