ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম আজ শুরু

রাজধানীর হাট দেশী পশুতে সয়লাব

প্রকাশিত: ১১:১৭, ৮ আগস্ট ২০১৯

রাজধানীর হাট দেশী পশুতে সয়লাব

ওয়াজেদ হীরা ॥ কোরবানির ঈদের আর মাত্র তিনদিন বাকি। রাজধানীর স্থায়ী-অস্থায়ী হাট ইতোমধ্যে কোরবানির দেশী পশুতে সয়লাব। বিক্রিতে এখনও সাড়া না পেলেও শুক্রবার থেকে জমজমাট বিক্রি হবে। আর রাজধানীর হাটে একটু লাভের মুখ দেখতে পশুর ভাল দামের আশায় বুক বেঁধেছেন অসংখ্য খামারি। গত কয়েক দিনে দেশের নানাপ্রান্তের খামারিরা তাদের পশু নিয়ে এসেছেন রাজধানীর হাটে। সড়ক পথে নদী পথে প্রতি নিয়তই পশু আসছে। বুধবার গাবতলীর স্থায়ী হাটে গরুর সেবা করছিলেন মোসাদ্দেক। কুষ্টিয়া থেকে আগত এই ব্যাপারী স্থানীয়দের গরু কিনে এনেছেন ঢাকায়। ২৬টি গরু এনেছেন। মোসাদ্দেক বলেন, আমি এলাকার গরু কিনে নিয়ে এসেছি। অনেকেই নিজের গরুই নিয়ে এসেছেন। সবাই চায় একটু লাভ করতে। আর সে জন্যই তো ঢাকায় আশা। কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা গেছে, পশুর যতেœ যেন কমতি নেই বিক্রেতাদের। বুধবার দিনভর যখন তখন বৃষ্টির বাগড়া থাকায় বিক্রেতাদের অলস সময় কাটাতে বা পশুর যতেœ ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। ক্রেতাদের সমাগম কম তাই বিক্রেতাদের মনোযাগ পশুকে নিয়েই। যদিও এখনও ভারতীয় গরু আসার খবর পাওয়া যায়নি। দেশীয় গরু পর্যাপ্ত থাকার কারণে বিক্রেতারাও প্রত্যাশা করেন ভারতীয় গরু এসে যেন ক্ষতির কারণ না হয়। আজ বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হাটের কার্যক্রম শুরু হলেও আগামীকাল শুক্রবার থেকে বিক্রি বেশ বাড়বে আশা করছেন ইজারা সংশ্লিষ্টরা। গত কয়েক দিন থেকেই হাটে গরুতে ভরে গেছে। হাতেগোনা কিছু বিক্রিও হয়েছে। তবে রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনের হাট ইজারার শর্তে বলা ছিল ঈদের দিনসহ মোট পাঁচদিন হাট চলবে। সে হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হাটের কার্যক্রম চলবে। প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে বিভিন্ন হাটে গরু এসে স্থানীয়দের ভোগান্তি বাড়িয়েছে। অনেক হাটেই জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ার কারণে অলিগলি, রাস্তা, বাসাবাড়ির সামনে গরু-ছাগল রাখা হচ্ছে। এতে যাদের বাসা বাড়িতে প্রবেশ বা বের হতে মানুষ নানা বিড়ম্বনা পোহাচ্ছেন। বংশালের সামসাবাদ হাটে দেখা যায় দেশী পশুর কারণে মাঠ ছেড়ে আশপাশের অলি-গলিতে রাখা হয়েছে গরু। প্রধান সড়কে ও মহল্লার গলিতে, দোকানপাটের সামনে গরু রাখার কারণে সমস্যায় পড়ছেন স্থানীয়রা। এলাকার আব্দুল গণি বলেন, কয়েকদিন ধরেই গলিতে হাটতে পারছি না গরুর জন্য। বাসার সামনেই বেঁধে রাখা হয়েছে, গেটও অনেক সময় খোলা যায় না। এসব নিয়ে কার কাছে কি বলব আমরা। একই দৃশ্য মেরাদিয় হাটেও। আশপাশে আবাসিক বহুতল ভবন হওয়ার কারণে অনেকেই আবাসিক ভবনের সামনেই রেখেছেন পশু। বংশালের স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘনবসতিপূর্ণ পুরান ঢাকায় অধিকাংশ গলিই মাত্র ১০ থেকে ১২ ফুট চওড়া। পাশাপাশি দুটি রিক্সাই ঠিকমতো চলতে পারে না। অথচ ঈদ-উল-আজহার সাত দিন আগে থেকেই এসব গলিতে পশুর হাট বসিয়েছেন ইজারাদার। এমন অবস্থায় গলিগুলো দিয়ে হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া রাস্তায় পশুর বর্জ্য ছড়িয়ে থাকায় বাসাবাড়ির দরজা-জানালাও সব সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। কেউ কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও বের হতে পারছেন না। সামসাবাদ থেকে কিছু পূর্বে নারিন্দার কাউয়ারটেক। যে খোলা জায়গায় পশুর হাট ইজারা দেয়া হয়েছে, সেখানে ৪০ থেকে ৫০-এর বেশি গরু রাখার মতো ব্যবস্থা নেই। এমন অবস্থায় বিক্রির জন্য আনা পশু আশপাশের সব গলিতে নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। পশ্চিমে ধোলাইখাল ট্রাকস্ট্যান্ড পর্যন্ত গরু-ছাগল রাখা হচ্ছে। এতে যাত্রাবাড়ী-সদরঘাট সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। চকবাজারের রহমতগঞ্জ মাঠের চারপাশের গলিগুলোতে হাট বসা শুরু হয়েছে। এতে সেসব এলাকার বাসিন্দারা নানা সমস্যায় পড়ছেন বলে জানা গেছে। কোথায় কোথায় হাট ॥ এবার দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ১৪ স্থানে অস্থায়ী কোরবানির পশুরহাট বসবে। গত কোরবানির ঈদের ১৩ স্থানে হাট বসেছিল, এবার নতুন করে আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গায় এবার হাট বসবে।
×