ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

দুশানবেতে প্রেসিডেন্ট ইমোমালির সঙ্গে আবদুল হামিদের বৈঠক

‘যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনে আগ্রহী বাংলাদেশ ও তাজিকিস্তান

প্রকাশিত: ১০:২৪, ১৫ জুন ২০১৯

 ‘যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনে আগ্রহী বাংলাদেশ ও তাজিকিস্তান

বিডিনিউজ ॥ বাংলাদেশ ও তাজিকিস্তানের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলো কাজে লাগাতে ‘যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। বৃহস্পতিবার তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমোনের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। ‘কনফারেন্স অন ইন্টারেকশন এ্যান্ড কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস ইন এশিয়ার (সিআইসিএ) পঞ্চম সম্মেলনে যোগ দিতে স্থানীয় সময় রাত ১০টায় দুশানবেতে পৌঁছান রাষ্ট্রপতি। পরে প্রেসিডেন্ট রাহমোনের কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। সাক্ষাত শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন সিআইসিএ সম্মেলন আয়োজনের জন্য রাষ্ট্রপতি তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। ‘রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। টেকসই উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশ ও তাজিকিস্তান একসঙ্গে কাজ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ফোরামে বাংলাদেশ এবং তাজিকিস্তানের পারস্পরিক সমর্থন ও সহযোগিতার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, ভবিষ্যতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলেই তার বিশ্বাস। বাংলাদেশে বিশ্বমানের তৈরি পোশাক, ওষুধ, পাট ও পাটজাত পণ্য উৎপাদনের কথা তুলে ধরে এসব পণ্য আমদানির জন্য তাজিকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি হামিদ। প্রেস সচিব বলেন, বাণিজ্য সম্ভাবনা বাড়াতে দুই দেশে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সফর বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমোন বৈঠকে বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন। প্রেস সচিব জানান, সাক্ষাতের সময় আবদুল হামিদ রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাজিকিস্তানের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। ইমামোলি রাহমোন এ বিষয়ে তার দেশের সমর্থনের আশ্বাস দেন। অন্যদের মধ্যে তাজিকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিরোজিদিন মুহরিদিন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপাক্ষিক) কামরুল আহসান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সিআইসিএ সম্মেলন শেষ করে ১৬ জুন উজবেকিস্তান যাবেন রাষ্ট্রপতি। সেখান থেকে ১৯ জুন তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। দুশানবেতে রাষ্ট্রপতিকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ॥ সিআইসিএ সম্মেলনে যোগ দিতে তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে পৌঁছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে রাষ্ট্রপতিকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ‘হংসবলাকা’ দুশানবে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে অবতরণ করে। দুশানবেতে নামার পর রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানান তাজিকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষের চেয়ারম্যান এবং দুশানবের ডেপুটি মেয়র। বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতিকে ‘স্ট্যাটিক গার্ড’ ও লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। বিমানবন্দর থেকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে হোটেল আভেস্তায় যান রাষ্ট্রপতি। দুশানবেতে এই হোটেলে অবস্থান করবেন তিনি। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রসারে কাজ করে সিআইসিএ। কাজাখস্তানের রাজধানী নূর সুলতানে এই সংস্থার সদর দফতর অবস্থিত। বর্তমানে ২৭ দেশ এই সংস্থার সদস্য। সদস্য দেশগুলো হলো আফগানিস্তান, আজারবাইজান, বাহরাইন, বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, চায়না, মিসর, ভারত, ইরান, ইরাক, ইসরাইল, জর্ডান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মঙ্গোলিয়া, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া, শ্রীলঙ্কা, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান এবং ভিয়েতনাম। এছাড়া, বেলারুশ, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, লাওস, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র এর পর্যবেক্ষক হিসেবে রয়েছে। জাতিসংঘ ছাড়াও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-আইওএম, লিগ অব আরব স্টেটস, অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি এ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপ, পার্লামেন্টারি এ্যাসেম্বলি অব দ্য টার্কিক স্পিকিং কান্ট্রিজ-এর সিআইসি’র পর্যবেক্ষক। এশিয়াভিত্তিক এই সংস্থার বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে আছে তাজিকিস্তান। প্রেস সচিব জানান, দুশানবেতে সম্মেলন শেষে রাষ্ট্রপতি উজবেকিস্তান সফর করবেন।
×