স্টাফ রিপোর্টার ॥ আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজের (এএফএমসি) উদ্যোগে এবার বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে। মঙ্গলবার এএফএমসিতে এই বিষয়ে একটি সেমিনারও অনুষ্ঠিত হয়। দিনটি শুরু হয় একটি বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে। র্যালিটি এএফএমসির ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেই শেষ হয়। র্যালি শেষে সেমিনারে বক্তারা বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উপলক্ষে ‘হু’র ভূমিকা এবং তামাকের বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরেন। ৩১ মে ছিল বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস। কিন্তু এএফএমসি দিবসটি ১১ জুন পালন করেছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) পরিচালকের পক্ষে সহকারী পরিচালক মোঃ নূর ইসলাম জানিয়েছেন, ডেপুটি কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সাইদুর রহমানের স্বাগত বক্তব্য দিয়ে সেমিনার শুরু হয়। মেজর জেনারেল মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান কমান্ড্যান্ট, এএফএমসির সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি প্রফেসর মোঃ আলী হোসেন, সভাপতি, বাংলাদেশ লাংগ ফাউন্ডেশন, বিশেষ অতিথি মেজর জেনারেল মোঃ আজিজুল ইসলাম, কন্সালটেন্ট ফিজিশিয়ান জেনারেল, বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস ও মাদক বিরোধী সংগঠন ‘মানস’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রফেসর অরুপ রতন চৌধুরী।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন মেডিসিন বিভাগের বিভাগীায় প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, প্রশিক্ষক ক্যাপ্টেন মুশফিকা হক মুমু, সহকারী রেজিস্ট্রার ডাঃ কাজী অদ্রি আরাফাত রহমান প্রমুখ। পরে বিশেষ অতিথি প্রফেসর অরুপ রতন চৌধুরী এই বিষয়ে একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে এএফএমসির সব প্রফেসর, জুনিয়র শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রী বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, তামাক মুক্ত দিবস উপলক্ষে হুসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিশ্বব্যাপী আয়োজন। এই বছর প্রতিবাদ্য বিষয় ছিল ‘তামাকে হয় ফুসফুস ক্ষয় সুস্বাস্থ্য কাম্য তামাক নয়। ফুসফুসে ক্যান্সার, ব্রনকাইটিস, এ্যাজমা, যক্ষ্মা, নিউমনিয়াসহ বিভিন্ন ফুসফুসজনিত যে সব ব্যাধি আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে মূলত এগুলোর বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করা ছিল এই বছরের লক্ষ্য। মানস, আধুনিক, প্রজ্ঞাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তামাকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করে। প্রতি বছর আমাদের দেশে এক লাখ ২৬ হাজার মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করছেন। একটি সিগারেট ব্যবহারে একজন মানুষের ১১ মিনিট আয়ু কমে যায় এবং ধূমপানজনিত কারণে বিশ্বব্যাপী প্রতি ৪ সেকেন্ডে একজন মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। ফুসফুস ছাড়াও হৃদপি-, মস্তিষ্ক, পাকস্থলি, রক্তনালীসহ বিভিন্ন অঙ্গ তামাক দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তামাক নেশা থেকে বেড়িয়ে আসার ক্ষেত্রে মানুষের ইচ্ছ শক্তি সবচেয়ে বড় অবদান রাখে। এছাড়াও সেমিনারে তামাক ছাড়ার বিভিন্ন উপায় তুলে ধরা হয়। ওষুধের ব্যবহার ছাড়াও বিভিন্ন পারিবারিক এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিকালস লিমিটেডর পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত সেমিনার শেষে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে একটি কুইজ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রফেসর মোঃ আলী হোসেন, বিশেষ অতিথি মেজর জেনারেল মোঃ আজিজুল ইসলাম এবং সভাপতি কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান ধূমপান বিষয়ে সচেতনা মূলক বক্তৃতা প্রদান করেন।