ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

১৬ জনের মৃত্যুদণ্ড চাওয়া হবে

প্রকাশিত: ১১:০৫, ২৯ মে ২০১৯

১৬ জনের মৃত্যুদণ্ড চাওয়া হবে

নিয়াজ আহমেদ লাবু ॥ ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ১৬ জনকে আসামি করে চার্জশীট চূড়ান্ত করেছে পিবিআই। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- চাওয়া হবে। আজ বুধবার তা আদালতে জমা দেয়া হবে। সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়ার আগে মঙ্গলবার রাজধানীর ধানম-িতে পিবিআই সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার এ তথ্য জানান। তিনি জানান, নুসরাতকে সরাসরি পুড়িয়ে মারায় অংশ নেয় পাঁচজন। এদের মধ্যে জাবেদ, পপি ও মনি নামে তিন শিক্ষার্থী নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার পর ঠা-া মাথায় সেদিন পরীক্ষায়ও অংশ নেয়। এ ছাড়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। আর স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা রুহুল আমীন ও মাকসুদ আলমকেও আসামি করা হয়েছে। ডিআইজি বনজ কুমার জানান, তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম যে, এ মামলার আসামিরা কেউ ছাড় পাবে না। বিচার চলাকালে আদালতে সব আসামি উপস্থিত থেকে নিজ চোখে তাদের বিচার দেখবে। আমরা পেরেছি, সব আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে আসামিরা কাজ করেছে। নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার পর তার তিন সহপাঠী পরীক্ষার হলে ঢুকে আলিম পরীক্ষাও দিয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক শাহ আলম তার ৭২২ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে যাদের আসামি করছেন, তাদের সবাই ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১২ জন আদালতে ১৬৪ ধরায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। এ মামলার বাদী নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানসহ মোট ৯২ জনকে অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হচ্ছে। তার মধ্যে সাতজন আদালতে জবানবন্দীও দিয়েছেন। নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার জন্য কেরোসিন তেল বহনের কাজে ব্যবহৃত পলিথিন, নুসরাতের গায়ে সেই কেরোসিন ছিটানোর কাজে ব্যবহৃত একটি কাঁচের গ্লাস, দেয়াশলাইয়ের কাঠি, তিনটি কাল রঙের বোরকা, আসামি শামীমের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন, আসামি রুহুল আমীনের সঙ্গে তার কথোপকথনের রেকর্ড এবং অধ্যক্ষের অপকর্মের বিবরণ লেখা নুসরাত জাহান রাফির ডায়েরি এ মামলার আলামত হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করা হবে। পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানান, নুসরাত মাদ্রাসার সব অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। তাই সবাই মিলে নুসরাতকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। পরস্পর লাভবান হওয়ার জন্য। তিনি জানান, তদন্তে ১৬ আসামির বিরুদ্ধে নুসরাত জাহান রাফিকে অগ্নিদগ্ধ করে হত্যা এবং হত্যার পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ ও হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করার অপরাধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৪(১) ও ৩০ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ॥ ধারা ৪ (১): যদি কোন ব্যক্তি দহনকারী, ক্ষয়কারী অথবা বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা কোন শিশু বা নারীর মৃত্যু ঘটান বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন। ধারা ৩০: যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা জোগান এবং সেই প্ররোচনার ফলে উক্ত অপরাধ সংঘটিত হয় বা অপরাধটি সংঘটনের চেষ্টা করা হয় বা কোন ব্যক্তি যদি অন্য কোন ব্যক্তিকে এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেন, তাহা হইলে ওই অপরাধ সংঘটনের জন্য বা অপরাধটি সংঘটনের চেষ্টার জন্য নির্ধারিত দণ্ডে প্ররোচনাকারী বা সহায়তাকারী ব্যক্তি দণ্ডনীয় হইবেন। যারা আসামি ॥ হুকুমের আসামি সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা (৫৭), নূর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মাকসুদ আলম (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), মোহাম্মদ শামীম (২০), মাদ্রাসার গবর্নিং বডির সহসভাপতি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমীন (৫৫) ও মহিউদ্দিন শাকিল (২০)। নুসরাতকে পুড়িয়ে ঠা-া মাথায় পরীক্ষা দেয় জাবেদ পপি ও মনি ॥ ফেনীর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন দেয় পাঁচজন। এর মধ্যে তিনজনই ছিল পরীক্ষার্থী। ওই দিন পরীক্ষা থাকায় এই ঘটনার পর পরীক্ষায়ও অংশ নেয় তারা। পিবিআই বলছে, রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে প্রচার ও প্রত্যক্ষ হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচজনের তিনজনই এই অপকর্ম শেষে হলে ঢুকে পরীক্ষা দেয়ায় পূর্বপরিকল্পনা বোঝা কঠিন ছিল। নুসরাত হত্যায় কার কী ভূমিকা ॥ অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা- হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ না নিলেও এর চেয়ে বেশি করেছেন। তার বিরুদ্ধে নুসরাতের যৌন হয়রানির মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। তাতে কাজ না হলে নুসরাতকে ভয়-ভীতি দেখানো এবং প্রয়োজনে নুসরাতকে হত্যার নির্দেশনা দেন তিনি। কিভাবে হত্যা করতে হবে তারও নির্দিষ্ট দিক নির্দেশনাও দেন অধ্যক্ষ সিরাজ- উদ-দৌলা। পুড়িয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার পরামর্শও দেন তিনি। নুর উদ্দিন-হত্যাকাণ্ডের আগে যে কক্ষে বোরকা রাখা ছিল, সেটি পরিদর্শন করে আসেন তিনি। ঘটনার সময় ভবনের নিচের পরিস্থিতিটা খুব চাতুরতার সঙ্গে সামলে নেন। পুরোটা সময় নাটকের মতো চিত্রায়ন করতে সহায়তা করেন। শাহাদাত হোসেন শামীম- হত্যাকাণ্ডের আগে পরিকল্পনার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শামীম। কিভাবে কে কী করবে তার পুরো পরিকল্পনা সাজান শামীম। তিনি কাউন্সিলর মাকসুদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেন। যে টাকা দিয়ে বোরকা ও কেরোসিন কেনা হয়। তার জবানবন্দী অনুযায়ী পরে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বোরকা ও নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢালতে ব্যবহৃত গ্লাস উদ্ধার করা হয়। মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর ॥ ২৮ মার্চ সিরাজের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে অংশ নেন তিনি। শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে না থাকলে আইসিটি পরীক্ষায় নম্বর কম দেয়ার হুমকি দিতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন। হত্যাকাণ্ডের জন্য তিনি ১০ হাজার টাকা দেন। ঘটনার সবকিছু জানলেও ঘটনার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে ফেনীতে অবস্থান করছিলেন তিনি। সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের ॥ তিনি ঘটনাস্থলে নুসরাতকে শোয়ানোর পর পা বেঁধে দেন। নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢালার পর শামীমের নির্দেশে নিজের সঙ্গে থাকা ম্যাচ দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন- তিনি নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢালেন। নুসরাতকে আগুন ধরিয়ে দিয়ে খুবই ঠাণ্ডা মাথায় পরীক্ষার হলে চলে যান। পরে চিৎকার শুনে ছুটে এসে নুসরাতকে দেখতে যান, এমন ভাব করে যেন কিছু জানেন না। হাফেজ আব্দুল কাদের ॥ তিনি নুসরাতের ভাই নোমানের বন্ধু। ঘটনার সময় মেইন গেটের বাইরে পাহাড়ায় ছিলেন। নুসরাত পরীক্ষার হলে ঠিকমতো পৌঁছেছে কি না, ভাই নোমান দেখতে চাইলে কাদের তাকে বাধা দেন। কাদেরের কাছে নুসরাতের বিষয় জানতে চাইলে কাদের জানান, ২ মিনিট পর জানাচ্ছি। পরে তিনি জানান, নুসরাত গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। আবছার উদ্দিন ॥ ঘটনার সময় তিনি গেট পাহারার দায়িত্বে ছিলেন। ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও আগের মামলার বাদীকে ফোন করে মামলা তুলে নিতে চাপ দেন। কামরুন নাহার মনি ॥ শামীম তাকে ২ হাজার টাকা দিয়ে বোরকা ম্যানেজ করতে বলেন। এ টাকায় ২টি বোরকা ও হাতমৌজা কেনেন। কেনা ২টি বোরকাসহ তার নিজের কাছ থেকে একটি মিলিয়ে মোট তিনটি বোরকা ওই ভবনের তৃতীয় তলায় রেখে আসেন। ছাদে ওঠানোর পর নুসরাতকে শুইয়ে ফেলতে সহায়তা করেন এবং বুকের উপর চাপ দিয়ে ধরে রাখেন। ঘটনার পর ঠাণ্ডা মাথায় এসে তিনিও পরীক্ষায় অংশ নেন। উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা ওরফে শম্পা ॥ নুসরাতকে ছাদে ওঠানোর পর মামলা তুলে নিতে প্রথমে চাপ দেয় সে। রাজি না হওয়ার নুসরাতের গায়ে ওড়নাটি বের করে পপি। এরপর ওড়নাটি ২ ভাগ করে দেয়, যা দিয়ে নুসরাতের হাত ও পা বাঁধা হয়। নুসরাতের হাত পেছন দিয়ে বাঁধার পর কেরোসিন ঢালার গ্লাসটি নুসরাতের হাতে ধরিয়ে দেয়। যাতে বোঝা যায় নুসরাত আত্মহত্যা করেছে। আব্দুর রহিম শরীফ ॥ তিনি বাইরের গেটে পাহারায় ছিলেন। নুসরাতের ভাই ভেতরে ঢুকতে চাইলে বাধা দেন তিনি। ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন ও মহিউদ্দিন শাকিল ॥ তারা গেটে পাহারায় ছিলেন। সবকিছু স্বাভাবিক বুঝাতে যা যা করণীয় তা করছিলেন তারা। মোহাম্মদ শামীম ॥ তিনি প্রথমে পপির সঙ্গে ভবনটির গেটে পাহারায় ছিলেন। যাতে কেউ সে সময় ভবনে উঠতে না পারে এবং এর ফলে অন্য কাউকে খুন করতে না হয় সেজন্য সতর্ক ছিলেন তিনি। রুহুল আমিন ॥ ঘটনার পর মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে পুলিশ-প্রশাসন সবকিছু ম্যানেজ করার আশ্বাস দেন তিনি। হত্যাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করেন। ঘটনার পর শামীমের সঙ্গে দুই দফা ফোনে কথা বলে সবকিছু নিশ্চিত হন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ- দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিলেন চলতি বছরের আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত। গত ২৬ মার্চ নুসরাতের মা শিরীনা আক্তার মামলা করার পরদিন সিরাজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই মামলা প্রত্যাহার না করায় ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার হল থেকে মাদ্রাসার একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন দেয় বোরকা পরা কয়েকজন। আগুনে শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাত ১০ এপ্রিল রাতে হাসপাতালে মারা যান। নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার পর ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান অধ্যক্ষ সিরাজকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন। নুসরাতের মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আর দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মধ্যে মামলার তদন্তভার থানা পুলিশ থেকে দেয়া হয় পিবিআইয়ের হাতে। মৃত্যুর আগে হাসপাতালে পুলিশকে দেয়া জবানবন্দীতে নুসরাত তার গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে যান। পরে আসামিরা একে একে গ্রেফতার হতে থাকে। আদালতে তাদের দেয়া জবানবন্দী থেকে হত্যাকাণ্ডের আদ্যোপান্ত জানতে পারেন তদন্তকারীরা। অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা কারাগারে থেকেই নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন বলে উঠে আসে পিবিআইয়ের তদন্তে।
×