ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

জাপার সাবেক এমপি হান্নানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ২৮ মে ২০১৯

 জাপার সাবেক এমপি হান্নানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহের জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হান্নান ও তার ছেলেসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সাত ধরনের ছয় অপরাধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন পক্ষের আনা সাক্ষীদের জবানবন্দী গ্রহণ করার জন্য আগামী ১৪ জুলাই দিন নির্ধারণ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ওই দিন মামলার (ওপেনিং স্ট্যাটমেন্ট) সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ঠিক করা হয়েছে। আট আসামির মধ্যে ৫জন গ্রেফতার আছেন। অন্যদিকে তিন আসামি এখনও পলাতক রয়েছেন। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার উপরোক্ত আদেশ প্রদান করেছেন। শুনানিতে প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন, প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ, ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল ও রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট আব্দুস সুবহান তরফদার। এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গঠন করা হয়। এই নয় বছরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ৩৭টি মামলায় রায় ঘোষণা করেছে। ৩৭টি মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছে ৫৯ জনকে, আমৃত্যু কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে ২৪ জনকে। আর একজনকে যাবজ্জীবন করাদন্ড প্রদান, একজনকে ৯০ বছরের দন্ড একজনকে ২০ বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের দন্ডে বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে ৭টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। যার মধ্যে ৬জনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। আর একজনকে আমৃত্যু কারাদন্ড প্রাদন করা হযেছে। বর্তমানে আপীল বিভাগে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া দন্ডের বিরুদ্ধে ২৯টি মামলা আপীল শুনানি নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। ময়মনসিংহের যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক এমপি এম এ হান্নান, তার ছেলে রফিক সাজ্জাদ (৬২), ডাঃ খন্দকার গোলাম সাব্বির আহমদ (৬৯), মিজানুর রহমান মিন্টু (৬৩), ও মোঃ হরমুজ আলী (৭৩)। অন্যদিকে পলাতক রয়েছেন মোঃ ফখরুজ্জামান, মোঃ আব্দুস সাত্তার ও খন্দকার গোলাম রব্বানী। মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, তদন্ত সংস্থা ২০১৬ সালের ১১ জুলাই মামলার তদন্ত শেষ করে ৪১তম প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ২০১৫ সালের ২৮ জুলাই অভিযুক্ত আট আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়ে ২০১৬ সালের ১১ জুলাই তা শেষ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মোঃ মতিউর রহমান। এর ওপর ভিত্তি করে আসামিদের বিরুদ্ধে ৬টি অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে প্রসিকিউশন টিমের পক্ষ থেকে। এর আগে গ্রেফতার হওয়া আসামিদের সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ২০১৫ সালের ১৯ মে এমপি হান্নানসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন। মামলায় এম এ হান্নান ছাড়াও জামায়াত নেতা ফকরুজ্জামান ও শহরতলীর গোলাম রব্বানীকে আসামি করা হয়। পরে তদন্তে আরও পাঁচজনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় এ মামলার আসামি হয়েছেন মোট আটজন। ২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করলে ওই দিনই হান্নানকে গুলশানে তার বাড়ি থেকে এবং ছেলে রফিক সাজ্জাদকে ওই এলাকার একটি অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়।
×