ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

কোটি কোটি ভারতীয় মুসলিম ও দলিত ভোটাধিকার বঞ্চিত!

প্রকাশিত: ১০:০৮, ১২ মে ২০১৯

 কোটি কোটি ভারতীয় মুসলিম ও দলিত ভোটাধিকার বঞ্চিত!

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভারতের নির্বাচন কমিশন সে দেশের সমস্ত নাগরিককে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা বলেছে, তালিকায় নাম না ওঠায় সে দেশের কোটি কোটি মানুষ ভোটাধিকার বঞ্চিত হচ্ছে, যার একটা বড় অংশ মুসলিম ও দলিত শ্রেণীর সংখ্যালঘু। তবে কমিশন মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাতকারে দাবি করেছে, তারা নাগরিকদের তালিকাভুক্ত করতে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। খবর আনন্দবাজার, এনডিটিভি, ওয়ান ইন্ডিয়া ও সিএনএনের। এ বছরের পার্লামেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে নেয়া উদ্যোগের ফলে কোন ভোটারই বাদ পড়বে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। ওই প্রক্রিয়ায় নির্বাচনী কর্মকর্তারা গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন আর বাসিন্দাদের ভোটের প্রক্রিয়া বুঝিয়ে দিয়েছেন। এসব বাসিন্দার অনেকেই নিরক্ষর। তবে যমুনা নদীর তীরে একটি অস্থায়ী কুড়েঘরে স্ত্রী আর পাঁচ সন্তান নিয়ে বসবাসকারী মুজাবির জানান, তার বাড়িতে কেউ আসেনি। তিনি বলেন, কোন দলের লোকেরা এখানে আসে না। কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না। পর্যবেক্ষক সংস্থা মিসিং ভোটারস-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে প্রায় ১২ কোটি মানুষ ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এদের অনেকেই সংখ্যালঘু মুসলমান বা নিম্নবর্গের দলিত সম্প্রদায়ের। ওই রিপোর্টের লেখকেরা বলেন, ‘ধীর কিন্তু স্থির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংখ্যালঘুদের বঞ্চিত করা হয়েছে আর রাজনৈতিকভাবে বাদ দেয়া হয়েছে’। ভারতের নির্বাচন কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, তারা সচেতনতা প্রচারাভিযানের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নিজেদের তালিকাভুক্ত করতে যথেষ্ট সময় দিয়ে নাগরিকদের প্রয়োজনীয় নোটিস দিয়েছে। মোদিকে ‘বিভেদ গুরু’ বলে প্রচ্ছদ নিবন্ধ টাইম ম্যাগাজিনে ॥ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বর্ষপূর্তিতে নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাতকার ছেপেছিল মার্কিন পত্রিকা ‘টাইম’। আগামী পাঁচ বছরে বহু স্বপ্নের কথা সেই পত্রিকাকে বলেছিলেন মোদি। ২০১৫ সালের ১৮ মে সংখ্যার প্রচ্ছদে ছাপা হয়েছিল মোদির পূর্ণাবয়ব ছবি। ভেতরে সেই সাক্ষাতকার। প্রচ্ছদে ‘টাইম’-এর প্রশ্ন ছিল, ‘ক্যান মোদি ডেলিভার?’ মোদি কি পারবেন? প্রচ্ছদ নিবন্ধে নরেন্দ্র মোদিকে বিদ্ধ করা হয়েছে দেশে ‘বিষাক্ত ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ’ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে। লেখা হয়েছে ‘পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালের উজ্জ্বল ভারত, শক্তিশালী ভারতের স্বপ্নের এক প্রতিভূ হিসেবে উঠে এসেছিলেন মোদি, যেন এক আস্থার দেবদূত যার এক হাতে হিন্দুর পুনর্জাগরণ, অন্য হাতে দক্ষিণ কোরিয়ার ধাঁচে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কর্মসূচী। এখন শুধুই এক ব্যর্থ রাজনীতিক হিসেবে ভোট চাইতে এসেছেন মোদি, যিনি করে দেখাতে পারেননি। নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক, সেই স্বপ্ন, সেই আস্থা আজ আর তার সঙ্গে নেই।’ প্রভাবশালী মার্কিন পত্রিকার এই প্রচ্ছদ ও নিবন্ধ নিয়ে যেমন রাজনীতিতে ঝড় উঠেছে, তেতে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়াও। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা টুইটে বলেন, ‘ভাগ করে শাসন করার নীতি মোদিরও। কংগ্রেস ব্রিটিশ শাসকদের ভাগিয়েছে, এবার মোদির শাসনকেও তাড়াবে।’ ‘টাইম’ অভিযোগ করেছে, মোদি সরকারের পাঁচ বছরে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতা, উদার নীতি ও স্বাধীন সংবাদমাধ্যম ভারতীয় রাষ্ট্রগঠনের তিনটি প্রধান সুরকেই নাকচ করে দেয়া হয়েছে। পত্রিকাটিতে মোদির অর্থনৈতিক কর্মসূচী নিয়ে দ্বিতীয় একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে দেশের বেকার তরুণদের স্বনির্ভরতার স্বপ্ন দেখিয়ে ২০১৪ সালের ভোট কুড়িয়েছিলেন মোদি। কিন্তু জানুয়ারিতে সরকারেরই এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বেকারত্বের হার ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছেছে। ভোটের আগে মোদি সরকার যে এই সমীক্ষার ফল চেপে যেতে চেয়েছে, সে কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও মোদির অর্থনৈতিক কর্মসূচীর ফলকে মিশ্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
×