ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

৩১ বছর ধরে একাকী দাঁড়িয়ে আছে সেতু

প্রকাশিত: ০৮:৫৫, ৪ মে ২০১৯

 ৩১ বছর ধরে একাকী  দাঁড়িয়ে আছে  সেতু

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ৩ মে ॥ ৩১ বছর আগে বন্যায় যে সেতুটির দুই পাশের রাস্তা ভেসে গিয়ে শুধু মাঝখানের একটি অংশ দাঁড়িয়েছিল। আজও সে সেতুটি সেভাবেই একাকী দাঁড়িয়ে আছে। দীর্ঘ এ সময়ের মধ্যে সেতুর পাশের রাস্তা দুটি নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী অসংখ্যবার বিভিন্ন দফতরে আবেদন-নিবেদন, মানববন্ধন এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে তদ্বির করেছেন। এরপরও আজ এ ব্যাপারে কোন কাজ না হওয়ায় তাদের মাঝে ক্ষোভ জমে উঠেছে। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল খালেকসহ স্থানীয়রা জানান, ১৯৮৮ সালে বন্যায় জাবরহাট ইউনিয়নের খাড়িপাড়া এলাকায় টাঙ্গন নদীর ওপর নির্মিত আমসারা ব্রিজের দুই পাশের রাস্তা বন্যার পানি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পীরগঞ্জ এবং সেতাবগঞ্জ উপজেলার সহজ যাতায়াতের সড়ক। দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই পড়ে রয়েছে ব্রিজটির একটি অংশ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ব্রিজটি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৩১ বছর যাবত অনেক এমপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু ভোট শেষ হওয়ার পর আর কোন নেতাকে এলাকায় দেখা যায় না। ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ার ৩১ বছর পার হলেও মেরামতের কোন খবর নেই। সেতুটি ভেঙ্গে পড়ায় বিপদের মুখে পড়েছেন দুটি উপজেলার ২০টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। নতুন একটি ব্রিজের অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই। জাবরহাট ইউনিয়নের বাসিন্দ আব্দুল মজিদ জানান, একটি সেতু অভাবে পাশের সেতাবগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে আমাদের সহজ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ব্রিজের পাশের বাজারে আমাদের অনেক ব্যবসা রয়েছে। প্রতিদিন যেতে হয়। খরা মৌসুমে সমস্যা না হলেও বর্ষার সময় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জাবরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মুনমুন নামের এক শিক্ষার্থী জানায়, ব্রিজের পূর্ব পাশের্^। তার বাড়ি আর পশ্চিম পাশের্^ স্কুল। সেতু সড়কটি মেরামত না করায় সারা বছর নদীর পানি ভেঙ্গে স্কুলে আসতে হয়। খরা মৌসুমে কষ্ট একটু কম হলেও বর্ষাকালে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। সে সময় স্কুলের জন্য দুটি করে স্কুল ড্রেস নিয়ে আসতে হয়। একটি ড্রেস ভিজিয়ে ব্রিজ এলাকা পার হয়ে অন্য একটি ড্রেস পরতে হয়। আবার স্কুল থেকে ফেরার সময়ও হয় একই অবস্থা। সে কারণে ব্রিজের পূর্বপাশের অনেক শিক্ষার্থী জাবরহাট স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। জাবরহাট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবির মুখে এখানে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় একাধিকবার প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সেই অনুযায়ী উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে ডিজাইন পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী কান্তেশ্বর বর্মণ জানান, ব্রিজটির বাস্তব অবস্থা দেখে সেটি মেরামতের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্টিমেট দাখিল করা হয়েছে। সেটি বর্তমানে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলে দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ করা হবে। সেতু নির্মিত হলে পীরগঞ্জ ও সেতাবগঞ্জ উপজেলার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।
×