ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

জরুরী সভা শেষে অর্থমন্ত্রী

শেয়ারবাজারে সূচকের ওঠানামা নিয়ে চিন্তা নেই

প্রকাশিত: ১১:০৯, ২৩ এপ্রিল ২০১৯

শেয়ারবাজারে সূচকের ওঠানামা নিয়ে চিন্তা নেই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পৃথিবীর সব দেশের শেয়ারবাজারে সূচকের ওঠানামা হয়। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। তাই সূচকের ওঠানামা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। বর্তমান শেয়ারবাজার সঠিক অবস্থানে রয়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পিই রেশিও শেয়ার কেনার মতো পর্যায়ে রয়েছে। সোমবার বিকেলে চলমান শেয়ারবাজার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) আয়োজিত এক জরুরী সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার সঠিক অবস্থানে রয়েছে। তবে গত কিছু দিনের পতনের পেছনে কেউ জড়িত থাকতে পারে। তাদের খুঁজে বের করা হবে। এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, এর আগে ১৯৯৬ এবং ২০১০ সালের দরপতনের পেছনেও কেউ না কেউ জড়িত ছিলেন। এবারও সেটির ব্যতিক্রম ঘটছে না। অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, শেয়ারবাজারে ভাল কোম্পানি তালিকাভুক্ত হতে চায় না। ভাল কোম্পানি বাজারে আসলে খারাপ কোম্পানির সঙ্গে মিশে যায়। যার কারণে ভাল কোম্পানি কর্তৃপক্ষের তালিকাভুক্তিতে আগ্রহ কম থাকে। মুস্তফা কামাল বলেন, অতীতে কোন কোন সময় কোম্পানির পিই রেশিও ৯০ এর ঘরে ছিল। কিন্তু এখন বেশিরভাগ কোম্পানির পিই রেশিও ১৫-২০ মধ্যে রয়েছে। সাধারণত কোম্পানির পিই রেশিও ১৫ হলে তা গ্লোবালি স্ট্যান্ডার্ড। তাই পিই রেশিও দেখে বোঝা যাচ্ছে বাজার ভাল অবস্থানে রয়েছে। বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মোঃ আসাদুল ইসলাম, বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন ও কমিশনারগণ উপস্থিত ছিলেন। বিকেল ৩টা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুটা পর শুরু হয়। বাজারের স্বার্থে বাজার সংশ্লিষ্টরা গত কিছুদিন ধরে স্থিতিশীলতা ফেরাতে দফায় দফায় বৈঠক করে বাজারের সমস্যাগুলো তুলে আনেন। এসব সমস্যা সমাধানে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে তারা প্রস্তাবও দেয়। বাজারের স্বার্থে সর্বশেষ বৃহস্পতিবারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নিকট বেশ কিছু প্রস্তাব দেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এসব প্রস্তাব বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে বাজারের স্বার্থে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেয় বিএসইসি। কিন্তু অর্থমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় বাজার পরিস্থিতি নিয়ে বিএসইসি বৈঠক করতে পারেনি। অর্থমন্ত্রী দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে বাজারের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানায় বিএসইসি। আর বাজারের স্বার্থে দেরি না করে সরকারী ছুটির দিনেই বৈঠক করার সময় নির্ধারণ করে দেয় অর্থমন্ত্রী। সেই অনুযায়ী সোমবার বিকেল ৩টায় কমিশন অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। তবে বৈঠক শেষে ডিএসইর প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিএসইসির আনুষ্ঠানিক কোন ঘোষণা আসেনি। উল্লেখ্য, গত ৩ মাস ধরে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। গত ২৪ জানুয়ারির ডিএসইর সার্বিক সূচক ৫ হাজার ৯৫০ থেকে কমে ২১ এপ্রিল ৫ হাজার ৩২৪ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এ সময় সূচক কমেছে ৬২৬ পয়েন্ট বা ১০.৫২ শতাংশ। আর ৪ লাখ ১৯ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার বাজার মূলধন নেমে এসেছে ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকায়। অর্থাৎ শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে ২৩ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার দাম কমেছে। এই টানা পতনের কারণে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফলিতে লোকসান বেড়েছে। আর লোকসান সইতে না পেরে রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হয়েছে তারা। নিয়মিত ডিএসইর সামনে পতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভও করছে। ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগও দাবি করেন।
×