ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঐতিহাসিক ১০ এপ্রিল আজ

প্রকাশিত: ১১:২০, ১০ এপ্রিল ২০১৯

ঐতিহাসিক ১০ এপ্রিল আজ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আজ ঐতিহাসিক ১০ এপ্রিল। ১৯৭১ সালের এদিন মানুষের প্রতি মমতা, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয়। এটি ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার। সরকার গঠনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র (প্রোক্লেমেশন অব ইন্ডিপেন্ডেস) পাঠ করা হয়। এদিন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকেও অনুমোদন করা হয়। এটি ছিল একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। ঘোষণায় বলা হয়, স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ-রাষ্ট্রপতি থাকবেন। সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমেদ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ভাষণ দেন। এ ভাষণ অবরুদ্ধ দেশবাসীকে আরও সাহস জোগায় ও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উজ্জীবিত করে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর এ ভাষণে বলেন, আমাদের এ মুক্তিযুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে না বলে স্থির বিশ্বাস। প্রতিদিনই আমাদের শক্তি বাড়ছে। আর এ সংগ্রাম বিশ্ববাসীর স্বীকৃতি লাভ করছে। ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। সারাদেশে তা-ব সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বিচারে গণহত্যাযজ্ঞ চালায় তারা। এ অবস্থায় তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নেন প্রবাসী সরকার গঠনের লক্ষ্য দেশকে হানাদারমুক্ত করা, বাঙালীর স্বাধীনতা নিষ্কণ্টক করা। প্রথম সরকার গঠনের ধারাবাহিকতায় ১৩ এপ্রিল ৬ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম এবং মন্ত্রীদের মাঝে দফতর বণ্টন করা হয়। ১৪ এপ্রিল কর্নেল এমএজি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। সরকার গঠনের পর শপথ গ্রহণের প্রয়োজনীয় দেখা দেয়। ১৭ এপ্রিল আমাদের ইতিহাসে আরেক গৌরবোজ্জ্বল দিন। মেহেরপুর সীমান্ত লাগোয়া বৈদ্যনাথতলার এক বিশাল আম বাগানে অতি গোপনে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণের আয়োজন করা হয়। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে নতুন সরকার শপথ নেয়। স্থানটির নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। রাজনৈতিক কর্মকা-, কূটনৈতিক ও প্রচার ক্ষেত্রে বিশ্ব জনমত গঠন করতে সক্ষম হয়েছিল অস্থায়ী এই সরকার। মুজিবনগর সরকার সফলতার সঙ্গে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন। এই সরকারের দক্ষতার ফলেই মাত্র নয় মাসে বাংলাদেশ হানাদার পাকিস্তানীদের দখলমুক্ত হয়েছিল। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। তাই ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয়, অমলিন একটি দিন।
×