ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

রবিরশ্মির সুরের ধারা ‘বসন্তের মাধুরী উৎসবে’

প্রকাশিত: ১১:১০, ২ এপ্রিল ২০১৯

রবিরশ্মির সুরের ধারা ‘বসন্তের মাধুরী উৎসবে’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রকৃতিতে চলছে ঋতুরাজ বসন্তের শেষ সময়। আর মাত্র কয়টি দিন পেরুলেই বিদায় নেবে দখিনা বাতাস মাখা ঋতুরাজ। বসন্তের সেই বিদায়ী যাত্রালগ্নে জানানো হলো বন্দনা। সুরে সুরে এই বসন্ত বন্দনার আয়োজন করে সঙ্গীত সংগঠন রবিরশ্মি। সোমবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘বসন্তের মাধুরী উৎসবে’ শীর্ষক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সঙ্গীতের সঙ্গে ছিল কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে আবৃত্তি পরিবেশনা। এছাড়া এ অনুষ্ঠানে প্রদান করা হয় ২০১৯ সালের রবিরশ্মি সম্মাননা। দুই পর্বে বিভক্ত আয়োজনের প্রথম পর্বে প্রদান করা হয় রবিরশ্মি সম্মাননা। এ সম্মাননা প্রদান করা হয় ভারতের আগরতলার দুই অধিবাসী কবি কল্যাণ গুপ্ত এবং সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অমিত ভৌমিককে। তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন রবিরশ্মির পরিচালক এবং অনুষ্ঠানের সভাপতি রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মহাদেব ঘোষ। অনুষ্ঠানের অতিথি ছিলেন আগরতলা থেকে আগত রবীন্দ্র ও নজরুলসঙ্গীত শিল্পী রীতা চক্রবর্তী ও সর্বানী দাস দত্ত। সম্মেলক সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় পরিবেশনা পর্ব। অনেকগুলো কণ্ঠ মিলে যায় এক সুরে। সম্মিলিত কণ্ঠে গীত হয় ‘বিশ্ববীনা রবে বিশ্বজন মোহিছে’, ‘ওহে গৃহবাসী খোর দ্বার খোল’, ‘আহা আজি এ বসন্তে’, ‘আজি দখিন দুয়ার খোলা’ ও ‘বসন্তে ফুল গাঁথলো’। শ্রোতার মাঝে ¯িœগ্ধতার পরশ ছড়িয়ে সম্মেলক সঙ্গীত শেষে শুরু হয় একক কণ্ঠের পরিবেশনা। শারমিন আক্তার স্বর্ণা গেয়ে শোনান ‘ও আমার চাঁদের আলো’। ময়না রানী দাসের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় ‘আজ জ্যোৎ¯œা রাতে’। শামীম আরা বেগম শুনিয়েছেন ‘বসন্তে আজ ধরার চিত্ত’ শিরোনামের সঙ্গীত। মাকসুদ জামিল তুলির গাওয়া গানের শিরোনাম ছিল ‘যদি তারে নাই চিনি গো’। কেয়া হায়দারের কণ্ঠে গীত হয় ‘একটুকু ছোঁয়া লাগে’। সাবিকুন নাহার শুনিয়েছেন ‘মোর বীনা ওঠে’। দখিনা বাতাসের বারতা ছড়িয়ে মানসী সাধু গেয়েছেন ‘এই উদাসী হাওয়ার পথে পথে মুকুলগুলি ঝরে’। লিলিয়েন পাল নীলা শুনিয়েছেন ‘ধীরে ধীরে বও’। এছাড়াও একক কণ্ঠে গান শোনান সাঈদ মাহমুদ শুভ, আশরাফুল করিম চৌধুরী, তন্বী বিশ্বাস, সায়েমা সাইফ, শাহনাজ সিদ্দিকী, উত্তম কুমার শর্মা, উষা ভট্টাচার্য, অনামিকা ত্রিপুরা, বেবী রানী কর্মকার, রীতা চক্রবর্তী, সর্বানী দাস দত্ত ও মহাদেব ঘোষ। তাদের পরিবেশিত কয়েকটি গানের শিরোনাম ছিল ‘এতদিন যে বসেছিলাম’, ‘আমার মল্লিকা বনে’, ‘আমার ভাঙ্গা পথের’, ‘ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায়’ ও ‘আকাশ আমায় ভরলো আলো’। আবৃত্তি পরিবেশন করেন শাহাদাত হোসেন নীপু। কবিতা শেঠের সুফি সঙ্গীত সন্ধ্যা ॥ ভারতের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী কবিতা শেঠ। বলিউডি ছবির গানের পাশাপাশি সুফি গানেও অনন্য এই শিল্পীর কণ্ঠস্বরটি। আকাশ সংস্কৃতির সুবাদে তার গাওয়া ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় গানগুলো এ দেশের শ্রোতাদের কাছে দারুণ পরিচিত। ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ওয়েক আপ সিড’ চলচ্চিত্রের ‘গুনঝারা সা একতারা’ গানটিও এখনও মুখে মুখে ফেরে সঙ্গীতপ্রেমীদের। সে গান গেয়ে ফিল্ম ফেয়ারসহ বিভিন্ন সম্মাননা অর্জন করেছেন এই শিল্পী। সোমবার চৈতালী সন্ধ্যায় ঢাকার শ্রোতারা সরাসরি শুনতে পেল এই শিল্পীর কণ্ঠস্বর। চলচ্চিত্রের গানের পাশাপাশি সুফি ধারার গানের পরিবেশনায় কবিতা মুগ্ধ করলেন গানপ্রেমীদের। জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই শিল্পীর সুফি গানের সঙ্গীতসন্ধ্যা। সঙ্গীতানুষ্ঠানটির আয়োজন করে ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আইজিসিসি)। প্রায় দুই ঘণ্টা ব্যাপ্তির পরিবেশনায় কবিতা মুগ্ধ করেন দর্শক-শ্রোতাদের। সঙ্গীতসন্ধ্যার শুরুতেই ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক ড. নীপা চৌধুরী শিল্পী কবিতা শেঠকে পরিচয় করিয়ে দেন দর্শক-শ্রোতাদের কাছে। এরপর শুভাশিষ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। শ্রোতার অন্তরে আলোড়ন তুলে কবিতা শেঠ গেয়ে শোনান ‘ওয়েক আপ সিড’ চলচ্চিত্রের ‘গুনঝারা সা একতারা’, নিরজা চলচ্চিত্রের ‘জিতে হ্যায় চল’, ‘রাজনীতি’ চলচ্চিত্রের ‘মোরে পিয়া’, ‘বেগমজান’ চলচ্চিত্রের ‘প্রেম ম্যায় তোহারে’ শিরোনামের গানগুলো। এছাড়াও রাজস্থানের লোকজ গানের সুরে ‘খাড়ি খাড়ি’, ‘ছাপ তিলক সাবজানি’সহ সুফি ঘরানার বেশ কয়েকটি গান। পাশাপাশি ভারতের বিখ্যাত কবিদের কবিতাকে গানের আশ্রয়ে উপস্থাপন করেন সুর রসিকদের সামনে। কবিতা থেকে সঙ্গীতে রূপান্তরিত সেই গানগুলোও গেয়ে শোনান সুফি ধারায়।
×