ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নীতিমালা উপেক্ষা করে চলছে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ব্যবসা

প্রকাশিত: ০৯:২৩, ৯ মার্চ ২০১৯

 নীতিমালা উপেক্ষা করে চলছে  গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ব্যবসা

নিজস্ব সংবাদদাতা, লাকসাম, কুমিল্লা, ৮ মার্চ ॥ লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা ও পৌরসভাসহ ১৯টি ইউনিয়নের সকল হাট-বাজারে চলছে সিলিন্ডার গ্যাসের রমরমা ব্যবসা। জ্বালানি অধিদফতরের নীতিমালা উপেক্ষা করে দুই উপজেলার সকল হাট-বাজারে, ফুটপাথে যত্রতত্র, ঝুঁকিপূর্ণ এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা এখন দেদার চলছে। ফলের দোকান, পান-সিগারেটের দোকান থেকে শুরু করে কসমেটিকসের দোকান পর্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় বিক্রি হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ। ফলে যে কোন সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঘটতে পারে অগ্নিকা-সহ ভয়াবহ দুর্ঘটনা। বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স ছাড়াই অধিকাংশ ব্যবসায়ী দোকানের সামনে এমনকি পেছনে ফুটপাথে সিলিন্ডার ফেলে রেখে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা নির্বিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর এলাকা ও পৌরসভার বাইরের বাজারগুলোতে যত্রযত্র গ্যাসের সিলিন্ডার রেখে চালিয়ে যাচ্ছে এ ব্যবসা। আবার পৌরশহরের বিভিন্ন রোডের পাশে সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে গ্যাসের সিলিন্ডার ও গ্যাসের চুলা। এমনিভাবে লাকসাম বাজারের চৌদ্দগ্রাম রোড, উত্তর বাজার, ধান বাজার নোয়াখালী রোড, কলেজ রোড, রাজঘাট, নশরতপুর, জংশন বাজার, সিএনজি স্টেশন, মনোহরগঞ্জ বাজার, লক্ষণপুর, নাথেরপেটুয়া, খিলাবাজারসহ রাস্তার পাশে পেট্রোল, ডিজেল ও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, পানদোকান, চা দোকান, মুদি দোকান, ফাস্টফুড, মেশিনারিজ দোকান ও ফার্মেসি দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাস। এলপি গ্যাস সিল্ডিারগুলো দোকানের সামনে ও পেছনে খোলামেলা অবস্থায় রাখার ফলে যে কোন সময় ঘটতে পারে বিস্ফোরণ ও প্রাণহানির ঘটনা। প্রত্যেক গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম রাখার নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ ব্যবসায়ী তা মানছে না। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ এসব দেখেও না দেখার ভান করে চলছে। শীঘ্রই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এসব বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজ। পেট্রোল ও এলপি গ্যাস ব্যবসায়ীরা জানান, এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ক্ষেত্রে বিস্ফোরক অধিদফতর থেকে লাইসেন্স করতে হবে তাও জানেন না। কেউ এ বিষয়ে তাদের অবহিত করেনি। ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার, পেট্রোলজাতীয় দ্রব্য ও ডিজেল মজুদ রেখে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কোন কোন দোকানে গ্যাসের সিলিন্ডার থাকলেও তার মেয়াদ নেই। ফলে মেয়াদ উত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার বাসাবাড়িতে যে কোন মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জ্বালানি অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বিস্ফোরক আইনে লাইসেন্স ছাড়া ১০টির অধিক গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ রাখা যাবে না। কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করেই লাকসাম-মনোহরগঞ্জে অবাধে চলছে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ও পেট্রোলজাতীয় দ্রব্যসামগ্রীর ব্যবস্যায়। একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী মনগড়াভাবে যেখানেসেখানে এসব সিলিন্ডার ফেলে রেখে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসা। ঝুঁকিপূর্ণ এসব জ্বালানির যথাযথ নিরাপত্তা নেই বললেই চলে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে লাকসাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা মোঃ সফিকুর রহমান বলেন, আমি এ মুর্হূতে নাঙ্গলকোট আছি। নাঙ্গলকোটের হাসপাতালগুলোতে এ বিষয়ে দেখছি। অধিকাংশরেই অনিয়ম ধরা পড়েছে। লাকসাম-মনোহরগঞ্জে খোলা বাজারে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। খোলা বাজারে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে, মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ভানু শান্তি জনকণ্ঠকে জানান, খোলা বাজারে গ্যাস সিলিন্ডার ও পেট্রোলজাতীয় দ্রব্য বিক্রির কোন সুযোগ নেই। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×