ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

খাগড়াগড়েই গড়ে তোলা হয়েছিল জেএমবির অস্ত্র কারখানা

প্রকাশিত: ১১:০৬, ৩০ জানুয়ারি ২০১৯

খাগড়াগড়েই গড়ে তোলা হয়েছিল জেএমবির অস্ত্র কারখানা

শংকর কুমার দে ॥ দেশ থেকে পালিয়ে কলকাতায় গিয়ে আত্মগোপন থাকা জেএমবির জঙ্গীরাই গোপনে বোমা তৈরির কারখানা গড়েছিল পশ্চিমবঙ্গের খাগড়াগড়ে। বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় কদর কাজী ও হাবিবুর ওরফে সাজ্জাদ নামে জেএমবির দুই জঙ্গীকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে এ ধরনের তথ্য পেয়েছে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা কাওসারকে জেরা করেই চার বছর আগের খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় আটক জেএমবির দুই জঙ্গী কদর কাজী ও হাবিবুর ওরফে সাজ্জাদ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলেছেন, খাগড়াগড়ে বোমা বিস্ফোরণের কারখানা গড়ে তোলার জন্য জেএমবির লক্ষ্য, জেহাদের মাধ্যমে বাংলাদেশে জামায়াতের সরকার প্রতিষ্ঠা। আর সেই জিহাদের জন্য চাই বিস্ফোরক, বোমা। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের তৎপরতায় নিষিদ্ধ জেএমবির বোমা তৈরির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় খাগড়াগড়ে এসে বোমা তৈরির কারখানা গড়ে জঙ্গীরা। খাগড়াগড় থেকে বোমা, বিস্ফোরক, অস্ত্র, গোলাবারুদ সীমান্তের চোরাপথে বাংলাদেশে পাঠিয়ে নাশকতা চালিয়ে জামায়াতের সরকার গঠনের চক্রান্ত ছিল জঙ্গীদের। পশ্চিমবঙ্গে এসে বাংলাদেশের জঙ্গীরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও জেএমবির জন্য জঙ্গী সংগ্রহ করে জিহাদে উদ্বুদ্ধ করে জেএমবি। খাগড়াগড় ছিল সে রকমই একটি বোমা তৈরির কেন্দ্র। এ নিয়ে ভারতের তদন্ত সংস্থা এনআইএর যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে ঢাকার গোয়েন্দা সংস্থা। ঢাকার গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, চার বছর আগে ’১৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় কাওসার ছাড়াও আরও তিন বাংলাদেশি জেএমবি নেতাকে খুঁজছে সিআইডি। তারা হলো হাতকাটা নাসিরুল্লাহ, সাকিব এবং সাজিদ, বোমারু মিজান, সালেহীনসহ কয়েকজনের বিষয়ে ঢাকার গোয়েন্দা সংস্থার কাছে সন্ধান চেয়েছিল ভারতের তদন্ত সংস্থা এনআইএ। ভারতের তদন্ত সংস্থা ঢাকার গোয়েন্দাদের জানান, তালিকাভুক্ত জেএমবি জঙ্গীরা পশ্চিমবঙ্গের খাগড়াগড়ের মতো বিভিন্ন আস্তানা থেকে বিস্ফোরক ও বোমার চালান পাঠাতো বাংলাদেশে। ঢাকায় শেখ হাসিনা সরকারের হাত এড়িয়ে বিস্ফোরক তৈরির কাজ হাসিল করতেই এ রাজ্যে বছরের পর বছর বসে থেকে জঙ্গী নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিল তারা। ওই বিস্ফোরকের একটা অংশ ভারতে নাশকতার কাজে ব্যবহার করাও জঙ্গীদের উদ্দেশ্য ছিল বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ। বাংলাদেশের টাঙ্গাইল থেকে ভারতে ঢুকে শাকিল আহমেদ খাগড়াগড়ের আস্তানায় বিস্ফোরণে মারা যায়।
×