ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

আরসিজি সম্মেলন শেষ

বাংলাদেশের আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা শরিক দেশগুলোর

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২৭ জানুয়ারি ২০১৯

বাংলাদেশের আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা শরিক দেশগুলোর

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সুশৃঙ্খল ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো ঢাকায় অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সিভিল মিলিটারি মানবিক সহায়তা কার্যক্রম সমন্বয় গ্রুপের (আরসিজি) আন্তর্জাতিক সম্মেলন। শরিক দেশগুলো বাংলাদেশের এই আয়োজনকে ভূয়সী প্রশংসা করেছে। সমাপনী দিনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বলেছেন, এই রকম সাজানো গোছানো এবং সুশৃঙ্খল পরিবেশে এ পর্যন্ত অন্য কোন দেশে সম্মেলন হয়নি। এছাড়া অন্য কোন দেশের রাষ্ট্র প্রধান এই সম্মেলনে যোগদান করেনি। এ ক্ষেত্রে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আরসিজি-এর চেয়ারম্যানশীপ পরিবর্তন হয়। এক বছরের (২০১৯ সালের জন্য) জন্য এবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মেজর পেটচ্যারট লিমপারসার্ট। এর আগে চেয়াম্যান ছিলেন বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শাহ কামাল। শুক্রবার তিনি নতুন চেয়ারম্যানের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব দুর্যোগ প্রস্তুতি ও সাড়াদানে বাংলাদেশ সরকার ও রয়েল থাইল্যান্ড সরকারের যৌথ কার্যক্রমের প্রস্তাবনা পেশ করেন। প্রস্তাবনাসমূহ হচ্ছে- বড় ধরনের দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় ডিজাস্টার রেসপন্স এক্সারসাইজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ আয়োজনে বাংলাদেশ সহায়তা করতে পারে, যৌথ উদ্যোগে এক্সরসাইজ কো-অর্ডিনেটেট রেসপন্স আয়োজন, আগাম সতর্কবার্তা ও প্রযুক্তি বিষয়ে তথ্য ও জ্ঞান বিনিময়, দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় শিক্ষা সফরের আয়োজন, সন্ধান ও উদ্ধার বিষয়ে সক্ষমতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ আয়োজন। বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। এই রোল মডেল সম্ভব হয়েছে দেশটি সকল ধরনের জনগণকে দুর্যোগ মোকাবেলায় সম্পৃক্ত করার কারণে। সকল শ্রেণী পোশার মানুষ যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলার যোগ্য। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়, আগমী ৪ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি সুইজারল্যান্ডে জেনেভায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মলনে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বাংলাদেশের এই অর্জন সকলকে জনাতে হবে। বাংলাদেশকে রোল মাডেল হিসেবে ধরে সকলকে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশের কাছ থেকে অনেক কিছু জানা ও শেখার আছে। বিশেষ করে এই দেশে সিভিল-মিলিটারি সমন্বয়ে যেভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা করা হয়, তা সকলের কাছে অনুকরণীয়। পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেমন সাফল্য দেখিয়েছে, ভূমিকম্প নিয়েও বাংলাদেশকে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। তিন দিনব্যাপী ‘রিজিওনাল কনসাল্টেটিভ গ্রুপে’র (আরসিজি) চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলন আগামী ২৪ থেকে ২৬ জানুয়ারি ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রূপসী বাংলা গ্র্যান্ড রুমে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ২৬টি সদস্য রাষ্ট্রসহ ২৪টি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ১২০ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৪ জানুয়ারি সকাল ১০টায় সম্মেলন উদ্বোধন করেন। তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনে উদ্বোধনী ও কারিগরি মিলিয়ে ১৮টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এসব সেশনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় শিখন ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি আঞ্চলিক সহায়তা উন্নয়নে ভবিষ্যত কর্মকৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সফলতা উপস্থাপন করাসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আবারও বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা প্রমাণে ভূমিকা রাখা সম্ভব হয়। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থা ইউএনওসিএইচএ-এর উদ্যোগে সিভিল-মিলিটারি সমন্বয়ের মাধ্যমে বড় ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা কার্যক্রম জোরদারে ২০১৪ সালে মানবিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে রিজিওনাল কনসাল্টেটিভ গ্রুপ (আরসিজি) গঠন করা হয়।
×