ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাণ্ডায় নষ্ট হচ্ছে বোরো বীজতলা ॥ বিপাকে কৃষক

প্রকাশিত: ০৪:২১, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

ঠাণ্ডায় নষ্ট হচ্ছে বোরো বীজতলা ॥ বিপাকে কৃষক

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ মণিরামপুরের জলকর রোহিতা গ্রামের চাষি আবুল খায়ের। প্রতিবছর চার থেকে সাড়ে চার বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেন তিনি। এবারও সমপরিমাণ জমিতে বোরো চাষের ইচ্ছে তার। সেই লক্ষ্যে ২০/২৫ দিন আগে তিন কাঠা জমিতে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করেছেন তিনি। কিন্তু গজানোর পর চারাগুলো লালচে হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেক চেষ্টা করেও তিনি বীজতলা টেকাতে পারছেন না। আবুল খায়ের বলেন, বীজতলা রক্ষার জন্য অন্যবারের তুলনায় এবার চারগুণ বেশি খরচ করেছি। টেকাতে পারিনি। সব চারা লালচে হয়ে পুড়ে যাচ্ছে। এবার বোরো চাষ করতে পারব বলে মনে হচ্ছে না। একই গ্রামের কৃষক গোলাম হোসেন। তারও তিন কাঠা জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, পাতোখোলায় (বীজতলায়) গেলে কান্না আসে। জলকর রোহিতা গ্রামের চাষি জয়নাল বলেন, আমরা তিনজনে মিলে দশ কাঠা জমিতে বীজতলা তৈরি করেছি। পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। বোরো মৌসুমের শুরুতে এসব চাষি হোঁচট খেলেও এই বিষয়ে কোন খোঁজই রাখেন না সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা, এমন অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের। এদিকে, খবর নিয়ে জানা গেছে, জলকর রোহিতার মতো উপজেলার খেদাপাড়া, গালদা, চাঁদপুর, দীঘিরপাড়, হানুয়ার, হরিদাসকাঠি, মহাদেবপুর, খানপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় চলতি মৌসুমে কৃষকরা বোরো ধানের বীজতলা রক্ষা করতে পারছেন না। ঠা-াজনিত কারণে এবার বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি উপজেলা কৃষি অফিসের। এমন পরিস্থিতিতে আশামিল বা রিডোমিল গোল্ড কিংবা থিয়োভিট নামে ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরামর্শ কৃষি অফিসের। এই ক্ষেত্রে কৃষকরা বিকেলে বীজতলায় গরম পানি ঢুকিয়ে সকালে বের করে দিলে প্রতিকার পাবেন বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস। মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরককুমার সরকার বলেন, তীব্র শীতের কারণে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হচ্ছে। যারা অফিসে আসছেন তাদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি। কৃষকদের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, কোন্ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষকদের কাছে যাচ্ছেন না বা তাদের পরামর্শ দিচ্ছেন না, এমন অভিযোগ কৃষকরা করলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবার বোরো মৌসুমে মণিরামপুরে ২৯ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে উপজেলা কৃষি অফিস।
×