ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রী চাইলে আরও এক বছর দায়িত্ব পালন করতে পারি

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ২ জানুয়ারি ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী চাইলে আরও এক বছর দায়িত্ব পালন করতে পারি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইলে ফের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কোন কিছু বললে আমি না করি না। তাঁর নির্দেশেই সব সময় কাজ করেছি। এ কারণে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) চাইলে আমি আরও এক বছর দায়িত্ব পালন করতে পারি। মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে অফিস করেন অর্থমন্ত্রী। ওই সময় তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টানা দশ বছর তিনি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। আর গত দশ বছরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সময় দেশের সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে। এই সময়ে দারিদ্র্য মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি হ্রাস পেয়েছে। সরকারী খাতের বিনিয়োগ বাড়িয়ে অবকাঠামো খাতের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বেড়েছে বাজেটের আকার। অর্থনীতির সব সূচকে এখন ভাল অবস্থা দেখা যাচ্ছে। বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল এখন বাংলাদেশ। এই কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তাই প্রধানমন্ত্রী চাইলে আর কিছুদিন অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত রয়েছি। অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অসাধ্য সাধন করবে। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকার কারণে আশা করছি, আগামী পাঁচ বছরেই বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত দেশে পরিণত হবে। তবে কিছু সংখ্যক মানুষ সব সময় সরকারের ওপর নির্ভরশীল থাকে। দারিদ্র্য নিরসনে সব থেকে ভাল করেছে মালয়েশিয়া, তারপরও সেখানে সাত শতাংশ মানুষ দরিদ্র রয়েছে। তিনি বলেন, শপথ গ্রহণের পর নতুন সরকারের প্রধান কাজ হবে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। একাদশ জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবার ভোট ভাল হয়েছে। উন্নত দেশে ৪০ শতাংশ ভোট পড়লে তারা খুশি হন। কিন্তু আমাদের দেশে সাধারণত ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট হলে ভাল নির্বাচন বিবেচনা করা হয়ে থাকে। তবে এবার ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। এর কারণ হলো-জনগণ জেনে গেছে শেখ হাসিনা ছাড়া উন্নয়ন হবে না। তাই এ নির্বাচনে জনগণ বেশি ভোট দিয়েছে। প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থীরা রেকর্ড সংখ্যক আসনে নিরঙ্কুশ বিজয়ী হয়েছে। আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হতে পারে। কিন্তু এবার রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার কথা বলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি আবুল মাল আবদুল মুহিত। ওই আসনে এবার মহাজোটের প্রার্থী হয়ে অর্থমন্ত্রীর সহোদর এ কে আবদুল মোমেন নির্বাচিত হয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগের নতুন মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন, সেই আলোচনায় মুহিতের নামও আসছে। সংসদে না থাকলেও মুহিতকে আরও কিছুদিন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে দেখা যেতে পারে বলে গুঞ্জন চলছে। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি হেসে বলেন, আমার সবকিছু তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ওপরে নির্ভর করে। তিনি চাইলে তো আমি না করতে পারব না। এদিকে, গত সরকারের গত দুই মেয়াদে টানা দশটি বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী মুহিত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মুহিতের অবদানও কম নয়। সরকারের ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি আয় বাড়ানোরও বাস্তবমুখী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তিনি। বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা হিসেবে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গেও তার সখ্যতা রয়েছে। তবে দীর্ঘ এই সময়ে তাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, খেলাপী ঋণ ও ঋণ কেলেঙ্কারির মতো অনেক ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে রেমিটেন্স, রফতানি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং রফতানি খাতের চ্যালেঞ্জগুলো তিনি দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার পর পর দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার কারণে যে ধারাবাহিকতার সৃষ্টি হয়েছিল, সেজন্যই দেশের এত উন্নয়ন হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে অবিশ্বাস্য উন্নয়ন হবে বলে আমি মনে করি। ২০৩০ সালের মধ্যে যে দারিদ্র্য নির্মূল করতে চেয়েছিলাম সেটা আর লাগবে না। ২০২৫ সালের মধ্যে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে যাব।
×