ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতা কাপ ফুটবল ॥ বিজেএমসির হার ১-০ গোলে

জামালের দর্শনীয় গোলে সাইফের শুভসূচনা

প্রকাশিত: ০৭:২৭, ২ ডিসেম্বর ২০১৮

জামালের দর্শনীয় গোলে সাইফের শুভসূচনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দু’দলের কেউই এই আসরে এর আগে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। ফাইনালে খেলা তো দূরে থাক। তবে স্বাধীনতা কাপ ফুটবল হচ্ছে এমনই এক আসর, যে আসরে বড় দলগুলো প্রায়ই হোঁচট খায়, আর নতুন, ছোট বা মাঝারি শক্তির দলগুলো সাফল্য পায়। উদাহরণ হিসেবে ২০১১ সালে ফরাশগঞ্জ, ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম আবাহনী এবং ২০১৮ সালে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত) আরামবাগের নাম উল্লেখ করা যায়। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব এবং টিম বিজেএমসিও এই স্বপ্ন দেখতেই পারে। শনিবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দশম এই আসরের পর্দা ওঠে এই দু’দলের ম্যাচ দিয়ে। যাতে বিজেএমসিকে ১-০ গোলে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে ‘এ’ গ্রুপের দল সাইফ। পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপের উর্ধতন কর্মকর্তা এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন। ‘সোনালি আঁশের দল’ খ্যাত বিজেএমসি এবং সাইফ দু’দলই সদ্য সমাপ্ত ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত খেলেছিল। শনিবার জয় কুড়িয়ে নিয়ে তিন পয়েন্ট পেয়ে এই আসরের শেষ আটে নাম লেখানোর পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল সাইফ। যদিও ম্যাচের প্রায় পুরোটাই সাইফকে আটকে রাখতে সক্ষম হয়েছিল বিজেএমসি। লড়াইও করেছিল প্রায় সমানতালেই। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারেনি তারা। ম্যাচের শুরুতেই ফ্রি কিক পেয়েছিল সাইফ। কিন্তু ৬ মিনিটে সেটা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ২০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে শট নেন বিজেএমসির ওটাবেক। গোল লাইনে প্রস্তুতই ছিলেন সাইফ গোলরক্ষক জিয়াউর রহমান। বল সরাসরি গ্রিপে নেন। ২১ মিনিটে সাইফের নাসির বক্সে বল পাঠিয়েছিলেন জাফর ইকবালের উদ্দেশে। কিন্তু তিনি বল নিয়ন্ত্রণে নেবার আগেই তা বিপদমুক্ত করেন বিজেএমসির ডিফেন্ডাররা। ৩৮ মিনিটে সাইফের ফ্রি কিক বক্সে বিপদমুক্ত করেন মোবারক। পরের মিনিটে সাইফ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়ার দূরপাল্লার শট বক্সে পড়লেও প্রস্তুত ছিলেন বিজেএমসির গোলরক্ষক সোহাগ। তাই বিপদ হয়নি। ৪৫ মিনিটে জামাল ভুঁইয়ার কর্নার বক্সে হেড নেন কোরিয়ান ফরোয়ার্ড পার্ক। কিন্তু হেডে বল সরিয়ে দেন বাইবেক। ইনজুরি টাইমে বিপজ্জনক স্থানে ফ্রি কিক পায় বিজেএমসি। কিন্তু ওটাবেকের মাপা স্পটকিকও আটকে দেন গোলরক্ষক জিয়া। সাইফের অন্যতম ভরসা জামাল ভুঁইয়া এবং পার্ক, বিজেএমসির হয়ে ফেডারেশন কাপে হ্যাটট্রিক করা ওটাবেকও প্রথমার্ধে একটি গোল এনে দিতে পারেননি দলকে। তাই প্রথমার্ধ গোলশূন্য থেকেই বিশ্রামে যায় উভয় দল। দ্বিতীয়ার্ধে উভয় দলই গোল পেতে মরিয়া হয়ে মাঠে নামে। ৪৭ মিনিটে কর্নার আদায় করে নেয় সাইফ। জামাল ভুঁইয়ার কর্নার কিক বিজেএমসির রক্ষণ ভাঙ্গতে পারেনি। ৪৯ মিনিটে পার্কের মাটিঘেঁষা কিক গোলরক্ষক সোহাগ গ্রিপে নেন। ৮৬ মিনিটে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন সাইফ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। ৮৫ মিনিটে ফ্রি কিক পায় সাইফ। তাদের ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাত বল নিয়ে বিজেএমসির বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলে তাকে ফাউল করে ফেলে দেন বিজেএমসির ফরোয়ার্ড মোবারক হোসেন। রেফারি সুজিত ব্যানার্জি ফ্রি কিকের নির্দেশ দেন। গোল করার জন্য ওটা ছিল বিপজ্জনক একটি স্পট। সাইফের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার-অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া ডানপায়ের চমৎকার বাঁকানো শট নেন। বিজেএমসির গোলরক্ষক সোহাগ হোসেন ঝাঁপিয়ে পড়েও বলটি রুখতে পারেননি। বল আশ্রয় নেয় জালে। এগিয়ে যায় সাইফ (১-০)। বিজেএমসির রক্ষণ দেয়াল হয়ে যারা দাঁড়িয়েছিলেন তারাও লাফিয়ে উঠেও আটকাতে পারেননি জামালের এই জাদুমাখা শটটি। অনেকেই বলেছেন, এটা বিশ্বমানের এক গোল। শেষ পর্যন্ত এই গোলেই পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মৌসুমের দ্বিতীয় টুর্নামেন্টে শুভসূচনা করে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব।
×