ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টঙ্গীতে বিশ্ব এজতেমা ও জোড় অনুষ্ঠানে হস্তক্ষেপ কামনা প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৮ নভেম্বর ২০১৮

টঙ্গীতে বিশ্ব এজতেমা ও জোড় অনুষ্ঠানে হস্তক্ষেপ কামনা প্রধানমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ৩০ নবেম্বর শুক্রবার থেকে টঙ্গীর এজতেমা ময়দানে ৫ দিনের জোড় শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তবলীগ জামাতের মূলধারার মুরব্বি ও সাথীরা। একই সঙ্গে ১১ থেকে ১৩ জানুয়ারি বিশ্ব এজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করারও দাবি জানিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়ে মুরব্বি ও সাথীরা বলেছেন, জোড় বানচাল করতে একটি মহল মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্রদের হাতে লাঠিসোটা দিয়ে এজতেমা মাঠ দখলের চেষ্টা করছে। পাকিস্তানের ইন্ধনে বিশ্ব এজতেমাকে বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে দিতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন এ্যাডভোকেট মোঃ ইউনুস মোল্লা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মেজর জেনারেল (অব) মোঃ রফিক, খাদ্য বিভাগের সাবেক ডিজি রুহুল আমিন, ব্যারিস্টার গাজিউর রহমান, এ্যাডভোকেট আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা সাইফুল্লাহ প্রমুখ। মুরব্বি ও সাথীরা বলেছেন, ৩০ নবেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জোড়কে বানচাল করতে একটি মহল দারুল উলুম দেওবন্দের নাম ব্যবহার করে কাওমি মাদ্রাসার কিছু ওলামায়ে কেরাম তবলীগের মতো অরাজনৈতিক সংগঠনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। অথচ দারুল উলুম দেওবন্দ তবলীগের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তারপরও একটি স্বার্থান্বেষী মহল মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্রদের হাতে লাঠিসোটা দিয়ে এজতেমা মাঠ দখলের চেষ্টা করছে। যাতে করে এই জোড় কার্যক্রম ব্যাহত হয়। কুচক্রীমহল শান্তিপূর্ণ জোড় ও দাওয়াতি কার্যক্রম অহিংস করে তোলার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে অভিযোগ তুলে তবলীগের মুরব্বি ও সাথীরা বলেছেন, এই অবস্থায় কোন প্রকার দুর্ঘটনা, সংঘর্ষ বা সংঘাত ঘটলে তার দায়ভার কওমি মাদ্রাসা, শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসার ওস্তাদ, মহতামিম, কমিটি ও তবলীগের মূলধারাচ্যুত বিদ্রোহী মুরব্বিদেরই নিতে হবে। মুরব্বিরা বলেন, অর্ধশত বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ সরকার ও সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতায় বিশ্বের ৮০টি দেশের অংশগ্রহণে বাংলাদেশের টঙ্গীতে বিশ্ব এজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি একটি মহল পাকিস্তানের ইন্ধনে বিশ্ব এজতেমা বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে দিতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এটি সেই ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ মাত্র। এ সকল ষড়যন্ত্র রুখে ইসলামের দাওয়াতি কাজ বিশ্ব এজতেমাকে সুষ্ঠুভাবে সংগঠিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। লিখিত বক্তব্যে মুসল্লিরা বলেছেন, বিশ্ব তবলীগ জামাতের মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত তবলীগ জামাত বাংলাদেশের নিয়মতান্ত্রিক ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনায় বহিরাগত প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের বাধা প্রদানের প্রতিবাদ করছি আমরা। এছাড়া তবলীগ জামাতের আসন্ন তিন চিল্লা সাথীদের ৩০ নবেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিনে জোড় এবং ১১, ১২, ১৩ জানুয়ারি টঙ্গী বিশ্ব এজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এক প্রশ্নের জবাবে মুরব্বি ও সাথীরা বলেছেন, ভারতের দিল্লীর নিজামুদ্দিন বিশ্ব মার্কাজ মসজিদের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনায় বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী শান্তিপূর্ণ দ্বীনের দাওয়াত ও তবলীগের মেহনতের ইতিহাস শতবর্ষের। অর্ধশত বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতায় বিশ্বব্যাপী সুনামের সঙ্গে প্রায় ৮০টি দেশের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বাংলাদেশের টঙ্গীর বিশ্ব এজতেমা। যা সমগ্র বিশ্বে বাংলাদেশকে গৌরান্বিত করেছে। সম্প্রতি একটি মহল নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে ভুল তথ্য দিয়ে টঙ্গী ময়দানে দাওয়াত ও তবলীগের মেহনতের ওপর স্থগিতাদেশ প্রদান করায় ঢাকাসহ বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় দ্বীনের দাওয়াত ও তবলীগের মেহনতের সহিত সংশ্লিষ্ট লাখ লাখ পুরুষ ও মহিলার পক্ষে আমরা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের দাবি করছি। তারা আরও বলেন, একটি প্রতিক্রিয়াশীল স্বার্থান্বেষী মহল দ্বীনের দাওয়াত ও তবলীগের মেহনতকে/সাথীদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বাংলাদেশের তবলীগের সঙ্গে ইতোপূর্বে সংশ্লিষ্ট মাওলানা যোবায়ের, মাওলানা রবিউল, মাওলানা ওমর ফারুকসহ কতিপয় ব্যক্তি প্রতিক্রিয়াশীল-ষড়যন্ত্রকারীদের পক্ষ অবলম্বন করে দ্বীনের দাওয়াত ও তবলীগের সাথীদের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার হীন লক্ষ্যে জুলুম ও নির্যাতন চালাচ্ছে। সমগ্র দেশের মসজিদের গাস্ত, তালিম, মসজিদ আবাদের মেহনত, জোড়, এজতেমাসহ তবলীগের যাবতীয় কর্মকা- জোরপূর্বক বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। কাকরাইল মসজিদে দখলদারী, মারামারি, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ ভয়ঙ্কর ফৌজদারি অপরাধও করছে।
×