ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

পুরনো প্রশ্নে জেএসসি পরীক্ষা ॥ তদন্ত কমিটি

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ৩ নভেম্বর ২০১৮

 পুরনো প্রশ্নে জেএসসি পরীক্ষা ॥ তদন্ত  কমিটি

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২ নবেম্বর ॥ জেএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন একটি কেন্দ্রের ৪৮ পরীক্ষার্থীর বাংলা পরীক্ষা ২০১৭ সালের সিলেবাস অনুযায়ী প্রশ্নপত্রে নেয়া হয়েছে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর বিষয়টি ধরা পড়লে পরীক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাহিড়ি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। লাহিড়ি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেন্দ্র সচিব মোঃ জিল্লুর রহমান জানান, দিনাজপুর বোর্ড থেকে যেভাবে প্রশ্ন এসেছে তিনি সেভাবেই রুমে রুমে পাঠিয়েছেন। পরিদর্শকরা খেয়াল না করায় এই বিপত্তি হয়েছে। এই কেন্দ্রে বিভিন্ন স্কুলের ১২৫৯ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। কিন্তু ৪৮ জনের কাছে ভুলক্রমে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য ২০১৭ সালের সিলেবাস অনুযায়ী তৈরি প্রশ্ন বিলি করা হয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ভূপেন্দ্র নাথ জানান, খবরটি পেয়ে তিনি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নূর কুতুবুল আলম সরেজমিনে কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসক ড. কে এম আখতারুজ্জামান সেলিম জানান, তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন। তিনি জানান, এই ভুল কেন-কিভাবে হলো এবং কে এ জন্য দায়ী তা নির্ধারণের জন্য তিনি একটি তদন্ত টিম গঠন করেছেন। নওগাঁ নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ থেকে জানান, বৃহস্পতিবার রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ে জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে ২০১৭ সালের পুরনো প্রশ্নপত্র দিয়ে ৬৪ পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতায় ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষার শুরু থেকে প্রায় আধাঘণ্টা জেএসসির বাংলা পরীক্ষা দিতে হলো আবাদপুকুর কেন্দ্রের দুই কক্ষের ৬৪ পরীক্ষার্থীকে। এরা উপজেলার শফিকপুর উচ্চ বিদ্যালয় এবং করজগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ নিয়ে পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল জলিল। শফিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম জানান, জেএসসি আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৪ ও ১৫ নম্বর কক্ষে শফিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩২ এবং করজগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩২ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। ওই কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ৮শ’ ৫৭। পরীক্ষার শুরুতে বাংলা পরীক্ষার জন্য ওই দুই কক্ষে ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। অনেক পরীক্ষার্থী প্রশ্নপত্রে সাল না দেখে লেখা শুরু করে। কোন কোন পরীক্ষার্থী ১০/১৫ মিনিটে ৩/৪টি প্রশ্নের উত্তর লিখে ফেলে। এ অবস্থায় কয়েক শিক্ষার্থী ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র দিয়ে তারা পরীক্ষা দিচ্ছে বুঝতে পেরে বিষয়টি কক্ষের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের জানায়। তারা পরীক্ষার্থীদের কথায় কোন কর্ণপাত না করে বরং ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র ঠিক আছে এবং এই প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা দিতে বলেন। এতে কিছু পরীক্ষার্থী প্রতিবাদ করে পরীক্ষা দিতে অস্বীকার করলে প্রায় ২৫/৩০ মিনিট পর ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র পাল্টিয়ে পরীক্ষার্থীদের ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। এর ফলে প্রায় আধাঘণ্টা সময়ের ক্ষতি হলেও ওই ৬৪ পরীক্ষার্থীকে কোন বাড়তি সময় দেয়া হয়নি। আবাদপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব মোঃ আব্দুস সোবহান ২০১৭ সালের প্রশ্নপত্র দিয়ে মাত্র ৩/৪ মিনিট পরীক্ষা নেয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্নপত্র পাল্টিয়ে দিয়েছি। এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল জলিল বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে আমি পুরোপুরি অবগত নই। কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×