ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১ নভেম্বর ২০১৮

আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে অবহিত করতে আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বে বেলা চারটার দিকে বঙ্গভবনে এই সাক্ষাত অনুষ্ঠান হবে। সাক্ষাত অনুষ্ঠানে আগামী নির্বাচনের দিন, তারিখ এবং তফসিল ঘোষণার বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হবে বলে জানা গেছে। ইসি সচিব জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত শেষে ইসির বৈঠকে নির্বাচনের তফসিল নিয়ে আলোচনা করা হবে। এর পরে তফসিল ঘোষণা করা হবে। এদিকে কমিশনের পক্ষ থেকে তফসিলের বিষয়ে আলোচনা করতে শনিবার নির্বাচন কমিশনের সভাও ডাকা হয়েছে। তবে ইসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী তিন নবেম্বর বৈঠকের পর ৪ তারিখেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। গতবারের মতো এবারও টেলিভিশন ভাষণের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণার করা হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা জাতির উদ্দেশে ভাষণে তফসিল ঘোষণা করবেন। তবে নির্বাচনের দিন তারিখ নির্ধারিত না হলেও ইসি সূত্রে জানা গেছে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পরপরই একাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে পারে। এদিকে ইসি সচিব বুধবার নির্বাচন নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন এক সপ্তাহের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান ’৯১ পর প্রায় সব জাতীয় নির্বাচনেই ৪২ থেকে ৪৭ দিন সময় হাতে রেখে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল দেয়া হয়েছে। এই হিসেবে প্রথম সপ্তাহে তফসিল হলে তৃতীয় সপ্তাহেই যে কোন দিন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ইসির রয়েছে বলে জানা গেছে। ইসি সূত্রে জানা গেছে মনোনয়ন দাখিল, বাছাই, প্রত্যাহারের শেষ সময় এবং প্রতীক বরাদ্দ শেষে প্রচারের পর্যাপ্ত সময় দিয়ে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত ৪০-৪৫ দিন সময় রাখা হতে পারে। এর আগে গত ৫টি নির্বাচনের সবগুলোর ক্ষেত্রে ৪২ থেকে ৪৭ দিন সময় হাতে রেখে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। তফসিল ঘোষণার ক্ষেত্রে ২৫ ডিসেম্বর খ্রীস্টান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বড় দিন মাথায় রেখেও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের নেতারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত করে ২০ ডিসেম্বরের পরে বা বড় দিনের আগে পরে বা কাছাকাছি সময়ে ভোটের দিন নির্ধারণ না করতে আবেদন জানিয়েছেন। তাদের পক্ষে থেকে ইসিতে লিখিত প্রস্তাবে ২০ ডিসেম্বরের আগে অথবা জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের ভোটের দিন নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখেই নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ডিসেম্বরে একাদশ নির্বাচন করতে চায় ইসি। এক্ষেত্রে খ্রীস্টান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বড়দিনের বিষয় মাথায় রেখে তফসিল দেয়া হলে ২০ ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনে অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন। এদিন থেকে নির্বাচনী ট্রেন ভোটের গন্তব্যে রওনা হয়েছে। নির্বাচনে যাত্রার প্রথম দিনেই বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসে ইসি। বৈঠকে একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে, সারাদেশে ভোট কেন্দ্র প্রস্তুত, স্কুল কলেজ সমূহের বার্ষিক পরীক্ষ সম্পন্ন, অস্ত্র উদ্ধার ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে এমন মাদকসেবী ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব ধরনের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে। ৪১ হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্রকে নির্বাচনের উপযোগী রাখা, সংস্কার ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রস্তুত রাখার জন্য বলা হয়েছে। ১০ ডিসেম্বরের আগে সব বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করতে বলা হয়েছে, যাতে প্রতিষ্ঠানের ভোটকেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা সম্ভব হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে জানিয়ে বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে-পরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে জননিরাপত্তা বিভাগকে বলা হয়েছে। সন্ত্রাসী, মাদকসেবী এবং নির্বাচন ভ-ুল করতে পারে এমন বিশৃঙ্খলাকারীদের গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পার্বত্য জেলার ৩৪টি কেন্দ্রে নির্বাচনী মালামাল ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের পরিবহনে হেলিকপ্টার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের নীতিমালা সহজ করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে কোন প্রার্থী ঋণখেলাপী বলে প্রমাণিত হলে, মনোনয়নপত্র দাখিলের এক সপ্তাহ আগে তা পরিশোধের নির্দেশনা ছিল। সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আইন (আরপিও) অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিনও এই বিল পরিশোধ করা যাবে। হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, নির্বাচন-পূর্ব সময়ে আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য বিপুল সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজন। তাই জনপ্রশাসনকে পর্যাপ্ত সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনের যে বিভিন্ন প্রচার বা আমাদের নির্দেশনাগুলো টেলিভিশন, বেতার এবং অন্য সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়, সে জন্য সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। বিদেশ থেকে যেসব পর্যবেক্ষক আসবেন, তাদের ভিসা প্রসেসিং যাতে খুব সহজীকরণ হয় এবং তাদের ভেটিংগুলো যাতে জননিরাপত্তা বিভাগ খুব দ্রুত দেয়, সেভাবে তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
×