ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

চ্যালেঞ্জের মুখে উপকূল ও হাওড়ে টেকসই ওয়াশ কার্যক্রম

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ১৮ অক্টোবর ২০১৮

চ্যালেঞ্জের মুখে উপকূল ও হাওড়ে টেকসই ওয়াশ কার্যক্রম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির কারণে উপকূলীয় ও হাওড় এলাকায় নিরাপদ পানি, উন্নত স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ক ‘টেকসই ওয়াশ কার্যক্রম’ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিশেষত উপকূলীয় এলাকায় পানিতে মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততা, আর্সেনিকের উপস্থিতি, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া, পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় উন্নত ও স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া পাহাড়ী ও দুর্গম এলাকায় পানির তীব্র সঙ্কট এবং ব্যয়সাশ্রয়ী প্রযুক্তির উপকরণের অভাবে ওয়াশ কার্যক্রম বাস্তবায়ন দুরূহ ব্যাপার। তাই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি-৬) অর্জনে নিরাপদ পানি, উন্নত স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) নিশ্চিত করতে জনসচেতনতার পাশাপাশি সমন্বিত পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বুধবার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত ‘টেকসই ওয়াশ কার্যক্রম: তৃণমূলের অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যত দিক নির্দেশনা’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। এসডিজি-৬ অর্জনে ওয়াশ কর্মসূচীকে জোরদার করা এবং সুপারিশসমূহ তুলে ধরার লক্ষ্যে ব্র্যাক এই আয়োজন করে। এতে সাম্মানিক অতিথি ও প্যানেল আলোচক ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি পিটার ডি ভ্রিস, ওয়াটার এইডের আবাসিক প্রতিনিধি ডাঃ খায়রুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মুকতাদির, এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথের নির্বাহী পরিচালক এস এম এ রশীদ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের ওয়াশ স্পেশালিস্ট শফিকুল আলম ও ব্র্যাকের কমিউনিকেবল ডিজিজ ও ওয়াশ কর্মসূচীর পরিচালক ড. আকরামুল ইসলাম। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ডাঃ মুহাম্মাদ মুসা। অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত উপস্থাপনা তুলে ধরেন ব্র্যাকের ওয়াশ ও ম্যালেরিয়া কর্মসূচীর প্রধান ডাঃ মুকতাদির কবির। অনুষ্ঠানে ডাঃ খায়রুল ইসলাম টয়লেট ব্যবস্থাপনায় জনবলের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, এই সেক্টরে সুযোগ-সুবিধার অভাবে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের অধিকাংশই ‘ড্রপ আউট’ হন। তাই কর্মীদের সুযোগ-সুবিধায় বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার। পিটার ডি ভ্রিস বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত টয়লেট ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে নতুন উদ্যোগ, সক্ষমতা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় করণীয় নিয়ে নেদারল্যান্ডস সরকার বিনিয়োগে আগ্রহী। ওয়াশ কর্মসূচীর ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডস সরকার আর্থিক সহায়তা দেয়ায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে ডাঃ মুহাম্মাদ মুসা বলেন, এসডিজি অর্জন করতে হলে আমাদের কয়েকটি বিষয়কে অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেÑ দুর্গম ও পাহাড়ী এলাকার প্রতিবন্ধকতাগুলো নিরসনে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া, সরকারী-বেসরকারী সংস্থার সমন্বয়, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ওয়াশ কার্যক্রম জোরদার এবং মাঠ পর্যায় ও নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আরও এ্যাডভোকেসি করা। আলোচনায় যেসব সুপারিশ উঠে আসে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনে টেকসই ও নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার, পাহাড়ী ও দুর্গম এলাকায় পানির অভাব দূরীকরণে বিশেষ ব্যবস্থা, প্রত্যন্ত এলাকায় উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া, এসডিজি-৬ অর্জনে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের অংশীদারিত্ব ও সমন্বয় বাড়ানো, সরকারের কর্মসূচীর সঙ্গে স্থানীয় সুধীজনকে অন্তর্ভুক্ত করে জনসচেতনতা তৈরি, স্যানিটেশন সুবিধা বাড়াতে বেসরকারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, স্বাস্থ্যবিধি ও পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সরকারের আরও অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি, দেশের বিভিন্ন স্কুল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ওয়াশ কর্মসূচী জোরদার করা ইত্যাদি।
×