ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আলজিরিয়ায় কমিউনিস্ট কর্মীর ওপর বর্বর নির্যাতনের দায় স্বীকার ফ্রান্সের

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  আলজিরিয়ায় কমিউনিস্ট কর্মীর ওপর বর্বর নির্যাতনের দায় স্বীকার ফ্রান্সের

ছয় দশক আগে আলজিরিয়ায় কমিউনিস্ট ভাবাদর্শী এক ব্যক্তির ওপর বর্বর নির্যাতনের দায় স্বীকার করেছে ফ্রান্স। ১৯৫৭ সালে গ্রেফতারের সময় আলজিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতজ্ঞ হিসেবে কাজ করতেন ২৫ বছর বয়সী মরিস অডিন। বৃহস্পতিবার বিরল এক স্বীকারোক্তিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, অডিনকে হয় নির্যাতনের মাধ্যমে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছিল কিংবা নির্যাতনের পর ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল। বিবিসি। ফরাসী ঔপনিবেশিক আইনে কমিউনিস্ট কর্মী অডিনের ওপর এ নির্মম অত্যাচার চালানো হয়েছিল বলে ম্যাক্রোঁ স্বীকার করে নেন। সাত বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আলজিরিয়া ১৯৬২ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেয়। ব্যাটল অব আলজিয়ার্সের সময় গুম হয়ে যাওয়া অডিন ছিলেন আলজিরিয়ার স্বাধীনতার দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে দেশটিতে অবস্থান করা অল্প কয়েক ইউরোপিয়ান নাগরিকের একজন। নিখোঁজের সময় তিনি বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক ছিলেন। যুদ্ধে আলজিরীয় ও ফ্রান্স উভয় দেশের নিখোঁজ বেসামরিক এবং সৈন্যদের স্মরণে একটি আর্কাইভেরও উদ্বোধন করার কথা তার। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আলজিরিয়া সফরের সময় উপনিবেশবাদীতাকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন ম্যাক্রোঁ। যদিও ২০১৭-র শেষদিকে তিনি ঔপনিবেশিক আইনে করা অপরাধের কারণে আলজিরিয়াকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিয়েছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রায় ১৫ লাখ আলজিরীয় মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিল বলেও অনুমান করা হয়। ফ্রান্সের সঙ্গে আলজিরিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধ দেশ দু’টির সম্পর্কে যে গভীর কাল ছায়া এঁকে দিয়েছে, তার রেশ এখনও বজায় আছে। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্যারিস সে সময়কার নির্যাতন ও অত্যাচারের দায় একে একে স্বীকার করে নিচ্ছে। ২০১৬ সালে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ আলজিরিয়ার যুদ্ধে ফ্রান্সের হয়ে লড়াই করা লাখো আলজিরীয়র দায়িত্ব না নিয়ে তাদের অনেককেই যুদ্ধের পর পাল্টা আক্রমণের শিকার হতে দেয়ার দায় স্বীকার করে নিয়েছিলেন। ফ্রান্সের হয়ে লড়াই করা ওই আলজিরীয়রা হার্কিস নামে পরিচিত ছিল। এদের অনেককে পরে ফ্রান্সেও ফেরত পাঠানো হয়েছিল, সেখানেও তাদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছিল বলেও মেনে নিয়েছিলেন ওলাঁদ। এর আগে আলজিরিয়ায় ফ্রান্সের এক রাষ্ট্রদূতও ১৯৪৫ সালে সেতিফ ও গুয়েলমায় ফরাসী পুলিশের হত্যাযজ্ঞে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছিলেন।
×