ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যৌথ ব্যবস্থা নিতে একজোট যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা ও জার্মানি

রুশ গোয়েন্দা সংস্থা বড় হুমকি

প্রকাশিত: ০৩:৪৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

রুশ গোয়েন্দা সংস্থা বড় হুমকি

রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা দ্য মেইন ডিরেক্টোরেট অব দ্য জেনারেল স্টাফ অব দ্য আর্মড ফোর্সেস অব দ্য রাশিয়ান ফেডারেশনের (জিআরইউ) কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্রিটেনকে পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, কানাডা ও জার্মানি এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে কথা বলে তার পক্ষে যৌথ অবস্থান নিশ্চিত করেন। এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ব্যাসিলি নিবেনজিয়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থনে ক্রিসপালের মামলায় ব্রিটেনকে সহযোগিতা করতে রাশিয়া প্রস্তুত বলে প্রস্তাব দেন। -খবর ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও এএফপির যৌথ বিবৃতি দেয়া এই রাষ্ট্রগুলো ব্রিটেনের দাবির প্রতি সমর্থন করেছে যে, রাশিয়ার গোন্দোরা সলসবেরিতে নাভিচক হামলার পেছনে কাজ করেছে। যে অভিযানটি ভøাদিমির পুতিনের সরকার অনুমোদন দিয়েছিল। বিবৃতিতে বলা হয়, ব্রিটিশদের মূল্যায়নের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে যে সন্দেহভাজন দুই হামলাকারী রাশিয়ান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা। এ ধরনের অভিযান পরিচালনা প্রায়শই উর্ধতন সরকারী কর্মকর্তা পর্যায়ে অনুমোদিত হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মিত্ররা জিআরইউর কার্যক্রমের বিরুদ্ধে একসঙ্গে ব্যবস্থা নেবে। বুধবার মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে কথা বলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ব্রিটেনে রাশিয়ার জিআরইউর যুক্ত থাকা নিয়ে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে এক বিশেষ অধিবেশনে বসে। জাতিসংঘে ব্রিটেনের প্রতিনিধি ড্যামি কারেন পিয়ারস বলেন, রাশিয়া সলসবেরির নাগরিকের জীবন নিয়ে পাশা খেলছেন। বৈঠকে তিনি বলেন, বিদেশী সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা পরিচালিত রাশিয়ান আচরণের মারাত্মক এক প্রতিষ্ঠিত আদর্শ রয়েছে। জাতিসংঘে মার্কিন স্থায়ী প্রতিনিধি নিকি হ্যালি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটেনের পাশে সবসময় রয়েছে। এই তদন্তের ফল শুনে বিশ্বের সবারই হাড় ঠা-া হয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে রুশ স্থায়ী প্রতিনিধি ব্যাসিলি বলেন, আমরা সব দেশের প্রতি কনভেনশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অব কেমিক্যাল ওয়েপন্সের অধীনে ব্রিটিশ সরকারকে রুশ ফেডারেশনের সঙ্গে পরামর্শ শুরুর আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি ব্রিটিশ স্থায়ী প্রতিনিধি কারেন পিয়ারসকে বৈশ্বিক সম্প্রদায়কে মিথ্যা তথ্য দেয়া বন্ধ করার আহ্বান জানান। মামলাটিতে সাহায্য করার জন্য ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে কোন রকম অনুরোধ করা হয়নি। অন্যদিকে রাশিয়া অরগানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অব কেমিক্যাল ওয়েপন্সের (ওপিসিডব্লিউ) অধীনে যৌথ তদন্তের মাধ্যমে ব্রিটেনকে সবরকম সহায়তার কথা প্রস্তাব দিয়েছে। বুধবার কমন্সসভায় মে বলেন যে, সলসবেরির মারাত্মক হামলার পেছনে রাশিয়ার জিআরইউ গোয়েন্দা সংস্থার যুক্ত থাকার বিষয়ে ব্রিটেন আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। ব্রিটেন তার নিরাপত্তা ব্যবস্থার পুর্নমাত্রার ব্যবহার করবে। যার মধ্যে এম-১৫, এম-১৬ ও জিসিএইচকিউ রয়েছে। এরা মারাত্মক কার্যকলাপ ও তার নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে দেবে। আমরা একসঙ্গে জিআরইউর বিরুদ্ধে একযোগে পদক্ষেপ নেব। এ প্রেক্ষিতেই ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি ও কানাডা যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার সঙ্কেত দেন। সরকারের আত্মগোপনকারী কর্মকর্তাদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ ও সম্পদ বাজেয়াফত করা হতে পারে বলে জানান। মূলত জিআরইউর কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে এই পরামর্শ দেয়া হয়েছে। মে বলেন, সংস্থাটি আমাদের সব মিত্রদের ও আমাদের সব নাগরিকের জন্য বড় হুমকি। এখনই আমাদের যৌথভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে জিআরইউর বিরুদ্ধে। আমরা আমাদের মধ্যে জিআরইউ আমদের দেশে কি করতে পারে সে বিষয়ে বোঝাপড়া বৃদ্ধি করছি। তাদের কর্মকা-ের ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করছি। তাদের পদ্ধতিগুলো প্রকাশ করে ও তা মিত্রদের জানানোর মাধ্যমে বিষয়টির আরও গভীরে প্রবেশ করছি। জাতিসংঘে রুশ দূত ভ্যাসিলি সলসবেরির বিষক্রিয়ার বিষয়টি ব্রিটেন রুশবিরোধী মনোভাব উস্কে দিতে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন। ব্রিটেন ঘটনাটি সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলছে। ব্রিটেনে নিযুক্ত রুশ দূতাবাস অভিযোগ করেছে, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে যুক্ত হতে অনিচ্ছুক। সরকার জনসাধাণের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তাকে রাজনীতিকীকরণ করছে। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড দুজন রুশ ব্যক্তির ছবি প্রকাশ করেছে। যারা ক্রিসপালের ওপর রাসায়নিক হামলা চালিয়েছিল। আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় বলা হয়েছে, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাসায়নিক হামলা চালানোর ৪৮ ঘণ্টা আগে দুই ব্যক্তি ব্রিটেনে প্রবেশ করেছে। তারা আলেকজান্ডার পেট্রোভ ও রুসলান বশিরোভ নামে রুশ পাসপোর্টধারী। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পরীক্ষাগারের বিশেষজ্ঞরা সের্গেই ও তার মেয়ে ইউলিয়ার ওপর হামলা হওয়া রাসায়নিক কোথা থেকে এসেছে তা চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
×