স্টাফ রিপোর্টার ॥ কাগজপত্র না থাকায় রাজধানীর দোয়েল পরিবহন কোম্পানির সব বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সোমবার মালিক-শ্রমিক সমন্বয়ে গঠিত ভিজিলেন্স টিম পুলিশের মাধ্যমে কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ করে। এ তথ্য জানিয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ জনকণ্ঠকে বলেন, ঈদের পর মালিক-শ্রমিকদের সমন্বয়ে গঠিত চারটি ভিজিলেন্স টিম রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ শুরু করেছে। প্রতিদিনই গণপরিবহনের নানা অনিয়ম ও নৈরাজ্য আমাদের কাছে ধরা পড়ছে। এসব বিষয়ে ভিজিলেন্স টিম প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর হোটেল রেডিসনের বিপরীত পাশের জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের ঢালের সামনের রাস্তার ওপর জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাস রেষারেষি করতে গিয়ে একটি বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ওপর উঠে পড়ে। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত ও ৯ জন আহত হয়। নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী দিয়া খানম মীম (১৬)। এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন।
বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর ঢাকাসহ সারাদেশে ছাত্ররা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে। প্রায় এক সপ্তাহ অচল হয়ে যায় সারাদেশ। এরপর সরকারের দেয়া আশ্বাসে ঘরে ফিরে শিক্ষার্থীরা। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকেও নেয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। এর মধ্যে পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে রাজধানীতে চুক্তিতে আর বাস চলাতে দেয়া হবে না। চুক্তিতে বাস চালানো দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলা হচ্ছে। এছাড়াও চালক ও গাড়ির বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কোন বাস রাজধানীতে চলতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দূরপাল্লার বাসও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া চলতে না দেয়ার ঘোষণা দেন মালিক-শ্রমিকরা। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে চারটি ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়। এই টিম নগরীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালসহ সড়কে কাজ শুরু করে।
পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা জানান, সোমবারের অভিযানে বংশাল এলাকায় ফিটনেস না থাকায় বৈশাখী পরিবহনসহ আরও দুটি বাস ডাম্পিংয়ে পাঠানো হয়। এছাড়া মহাখালী, সায়েদাবাদসহ মিরপুর এলাকায় ভিজিলেন্স টিন দিনভর অভিযান চালায়। খন্দকার এনায়েত জানান, দোয়েল পরিবহনটি অবৈধভাবে রাজধানীতে বাস পরিচালনা করছিল। কোম্পানির বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। তাই কোম্পানির বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।