ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় কলেজছাত্রী ছুরিকাঘাতের ঘটনায় বখাটে এখনও গ্রেফতার হয়নি

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 বগুড়ায় কলেজছাত্রী ছুরিকাঘাতের ঘটনায় বখাটে এখনও গ্রেফতার হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ায় কলেজ ছাত্রী ও বিউটিশিয়ানের শরীরের বিভিন্ন অংশে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় সরাসরি অভিযুক্ত একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের বখাটে ছেলে ও তার কয়েক সহযোগীকে রবিবার এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্রেফতার করতে না পারায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নগরীতে বলাবলি হচ্ছে, একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান বলেই কী পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে! তবে বিষয়টি খ-ন করে দিয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা সাফ জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গেই কলেজ ছাত্রী ও তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে। ঘটনার দু’দিন পর ছুিরকাঘাতে আহত ওই ছাত্রীর বাবা জাহিদুর রহমান বাদী হয়ে শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়া সদর থানায় বখাটেসহ ৪/৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। রবিবার সকালে এই বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। বগুড়া শহরতলির পালশা এলাকার স্বল্প আয়ের চাকুরে জাহিদুর রহমানের তিন সন্তানের মধ্যে বড় জান্নাতুল ইসলাম জিতু (১৮) বগুড়া সরকারী মজিবর রহমান মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। লেখাপড়ার পাশাপাশি সংসারের খরচ জোগাতে সে কাটনারপাড়ায় অবস্থিত রূপছায়া বিউটি পার্লারে বিউটিশিয়ানের কাজ করত। জিতুর পরিবার জানায়, জিতুর কলেজ যাওয়া-আসার পথে উপশহরের এক বখাটে যুবক কাওসার অভি (২২) ও তার সহযোগীরা প্রায় নিত্যদিন উত্ত্যক্ত করত। অভির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জাহিদুর রহমান তার মেয়ে জিতুর বিয়ে ঠিক করে। এই ঘটনা জানার পর অভি ও তার সহযোগীরা বৃহস্পতিবার বিকেলে চারদিকে দুইটি মোটরসাইকেলে চেপে কাটনারপাড়া করনেশন স্কুলের সামনে জিতুর পথ রোধ করে। এ সময় জিতু বাড়িতে ফিরছিল। তারপর অভি জিতুকে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলে প্রকাশ্যে জিতুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করা হয়। লোকজন প্রথমে ভয়ে কিছু বলেনি। পরে অভি ও সহযোগীরা শাসিয়ে চলে যাওয়ার পর লোকজন জিতুকে উদ্ধার করে। তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানেও অভির পরিবারের লোকজন গিয়ে শাসিয়ে আসে। ঘটনাটি মিডিয়া ও পুলিশকে জানালে জীবনের হুমকিও দেয়া হয়। জিতুকে শুক্রবার হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। পুলিশ বিষয়টি জেনে জিতু ও তার পরিবারকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে থানায় মামলা করতে বলে। জিতুর বাবা জাহিদুর রহমান শনিবার সন্ধ্যায় সদর থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় কাওসার অভির সঙ্গে আরও ৪/৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
×