ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোম্পানিভিত্তিক সমন্বিত বাস নামানোর প্রকল্প

পরিকল্পনায় চরম সমন্বয়হীনতা

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

পরিকল্পনায় চরম সমন্বয়হীনতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকার রাস্তায় কোম্পানি ভিত্তিক সমন্বিত বাস নামানোর প্রকল্পে পরিকল্পনায় চরম সমন্বয়হীনতা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক যেভাবে চেয়েছেন সেই কাজ এগিয়ে নিতে একদিকে ঢিমে তালে কাজ চলছে উত্তর ও দক্ষিণে, অন্যদিকে একই কাজ ভিন্নভাবে করতে এগিয়ে চলেছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এতে আবারও মুখ থুবড়ে পড়তে পারে এই উদ্যোগ। যাত্রী ধরতে এই রেষারেষি ঢাকার রাস্তায় নিত্যদিনের ঘটনা। এই সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। সেই খবর সবার জানা, কিন্তু দুই বছর আগের উদ্যোগে নেই দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি। কোম্পানিভিত্তিক সমন্বিত বাস পরিচালনার এই উদ্যোগে বাস নামানোর কথা সাড়ে ৪ হাজার। কোম্পানি হবে ৬টি এবং রুট হবে ২২টি। ৬ রুটে নামবে ৬ রঙের বাস। আর মালিকদের মধ্যে বাস অনুপাতে ভাগ হবে লাভের অংশ। এতে কমবে বাসে বাসে রেষারেষি। দু’বছর পর সেই উদ্যোগের বাস্তব অবস্থা চোখে পড়ছে না। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এ কাজ বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়েও একাধিক বৈঠক হয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই বিষয়টি বাস্তবায়িত হবে। তারপরও উদ্যোগ যেখানে অনেকটাই এগিয়েছে সেখানে অন্য খবরে বিধিবাম। একই সমস্যার একই রকম সমাধানে আলাদাভাবে উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ- ডিটিসিএ। ডিটিসিএ’র ভারপ্রাপ্ত সচিব (ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ার) আনিসুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছি। আপাতত কুড়িল থেকে প্রগতি সরণি হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত হবে এবং পরবর্তীতে সমস্ত ঢাকাতেই এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন পরিকল্পনায় এমন সমন্বয়হীনতার তৈরি হয়েছে দুটি উদ্যোগ। আর এই সংঘাতে ভেস্তে যেতে পারে মূল উদ্দেশ্য। পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সামছুল হক বলেন, এখন একই সঙ্গে তিনটি উদ্যোগ চলছে। এটাও একটা সমন্বয়হীনতার বহির্প্রকাশ। আরেক পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সালেহ উদ্দীন বলেন, সময় নষ্ট না করে ঢাকাজুড়েই এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করা দরকার। তবে ডিটিসিএ’র দাবি, এক্ষেত্রে নেই কোন সমন্বয়হীনতা। তবে সেটি কীভাবে তা জানাতে পারেননি আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, এ পাইলটিং প্রকল্প শুরুর পর আরও ছয়টি রুটে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। এ অবস্থায় পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত এই সংঘাতময় পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। দুই বাসের চাপায় রাজীবের ঝুলে থাকা হাতের কথা মনে আছে সবারই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যে দেশে দুই বাসের রেষারেষিতে পিষ্ট হয় মানুষের জীবন। কোম্পানিভিত্তিক বাস চালু হলে দীর্ঘদিনের এ সমস্যার সমাধান হতে পারে।
×