ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

বেগম জিয়ার আন্দোলনের হুমকি আসলে আগুনসন্ত্রাসের হুমকি ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২৭ আগস্ট ২০১৮

  বেগম জিয়ার আন্দোলনের হুমকি আসলে আগুনসন্ত্রাসের হুমকি ॥ তথ্যমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বেগম জিয়ার আন্দোলনের হুমকিকে নাশকতার হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ফেরেশতা বা গণতন্ত্রের মা না, বরং জঙ্গী-সন্ত্রাসের আসল মা খালেদা জিয়ার আন্দোলনের হুমকি প্রকৃত অর্থে নাশকতারই হুমকি। এই হুমকি আসলে আগুন সন্ত্রাসের হুমকি, নির্বাচন বানচালের হুমকি, অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরির হুমকি। এই হুমকি থেকে রক্ষা পেতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে ঈদের পর প্রথম কর্মদিবসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি অপরাধীরা দ্রুত শাস্তি পাবে। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে খালেদা জিয়া কারাগারের ভেতর থেকে আন্দোলনের যে হুমকি দিচ্ছেন, তার আসল উদ্দেশ্য নির্বাচন বানচাল করা উল্লেখ করে ইনু বলেন, বিএনপি যাই বলুক না কেন, বেগম জিয়া গণতন্ত্রের মা নন, তিনি হচ্ছেন জঙ্গী রাজাকারতন্ত্রের আসল মা। ইনু বলেন, বেগম জিয়াকে নিয়ে বিএনপি মিথ্যাচার করছে। খালেদা জিয়া এবং বিএনপির দুষ্কর্ম, হত্যা, খুনের রাজনীতি, নির্বাচন বানচালের রাজনীতি, খুনীদের আশ্রয় দেয়ার রাজনীতিÑ এসব আড়াল করার জন্যই খালেদা জিয়াকে ফেরেশতার আসনে বসানোর চেষ্টা করছে বিএনপি। ঈদের মধ্যেও বিএনপি নির্বাচন, খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও একুশে আগস্টের মামলা নিয়ে তির্যক মন্তব্য করেছে উল্লেখ করে ইনু বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন ও বড় বড় অপরাধকর্মের বিচার ও রায়ের সময় বিএনপি শোরগোল করে। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চায়নি, একুশে আগস্টে জঘন্য হত্যাকা-ের বিচার চায়নি, এমনকি আগুন-সন্ত্রাসের নির্মম খুনেরও বিচার চায়নি। যখনই এসব অপরাধের বিচার শুরু হয় এবং আদালত রায়ের দিকে এগিয়ে যায়, তখনই বিএনপি হৈচৈ শুরু করে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এই হৈচৈয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে, এই খুনীদের দুষ্কর্ম আড়াল করা এবং ফেরেশতা তকমা দিয়ে চোখের মণির মতো বিএনপি দলে স্ব-স্ব আসনে বহাল রাখা। এটা বিএনপির একটা বদঅভ্যাস হয়ে গেছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য আদালত প্রাঙ্গণে হট্টগোল করা আদালত অবমাননার শামিল। তিনি বলেন, একুশ আগস্টে গ্রেনেড হামলায় সরাসরি আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্যরা খুনীদের বিচার ও সর্বোচ্চ সাজা দাবি করলে তা আদালতের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল নয়। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে রায়ের আগের দিন পর্যন্ত সারাদেশের জনগণ সোচ্চার ছিল, এটা বাদীপক্ষের গণতান্ত্রিক অধিকার, আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ নয়। বরং আদালতের ভেতরে দ-প্রাপ্ত আসামির পক্ষে হৈচৈ করাটা আদালত অস্বীকার করা ও তোয়াক্কা না করার শামিল। সদ্য উদযাপিত ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এবারের ঈদে দেশের মানুষের শহর থেকে গ্রামে যাওয়া এবং ফেরা ছিল নির্বিঘœ। ঈদের জামাতগুলো ছিল শান্তিপূর্ণ। জঙ্গী-সন্ত্রাসের হুমকি থেকে শেখ হাসিনার সরকার ঈদের জামাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। ঈদের ছুটির আগে এ বিষয়ে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলেছেন। তবে এই মুহূর্তে কোন অগ্রগতি পাননি তিনি। অফিস খুলল। এই বন্ধের মধ্যে আমি আমার তদবির অব্যাহত রেখেছি। আশা করি হামলাকারীরা আইনের আওতায় আসবে, সাজা পাবে। এবার ঈদ উদযাপনের বিষয়ে জাসদ সভাপতি বলেন, অতীতের মতো ঈদের জামাত নিয়ে জঙ্গী-সন্ত্রাসের যে আশঙ্কা হুমকি তা থেকে শেখ হাসিনা সরকার নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হয়েছে। এবার কোন হুমকির খবর আসেনি। এবার মুসল্লিরা নির্বিঘেœ ঈদের জামাতে অংশ নিতে পেরেছেন। খালেদা জিয়া কারাগার থেকে আবার আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন। বারবার বলি বিএনপি যাই বলুক না কেন- খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের মা নন, তিনি হচ্ছেন জঙ্গী ও রাজাকারতন্ত্রের আসল মা। তথ্যমন্ত্রী বলেন, হত্যা-খুনের রাজনীতি, নির্বাচন বানচালের রাজনীতি, খুনীদের আশ্রয় দেয়ার রাজনীতি- খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্রের লেবেল এঁটে এসব দুষ্কর্ম আড়ালের চেষ্টা করা হচ্ছে। খালেদা জিয়াকে ফেরেশ্্তার আসনে বসানোর চেষ্টা করছেন তারা।
×