ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুচির ‘ফ্রিডম অব এডিনবরা’ সম্মাননা প্রত্যাহারের প্রস্তাব

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ২৫ আগস্ট ২০১৮

 সুচির ‘ফ্রিডম অব এডিনবরা’ সম্মাননা প্রত্যাহারের প্রস্তাব

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর দমনপীড়নের নিন্দা না জানানোয় মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী আউং সান সুচি আরেকটি সম্মাননা হারাতে যাচ্ছেন। প্রস্তাব উঠেছে তাকে দেয়া ফ্রিডম অব এডিনবরা পুরস্কারটি বাতিলের। খবর ওয়েবসাইট। গতবছর রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতার পর সমালোচনার মুখে থাকা সুচি এ পর্যন্ত যত খেতাব বা সম্মাননা হারিয়েছেন, সেই তালিকায় এটি হতে যাচ্ছে সপ্তম সম্মাননা। এর আগে সুচির অক্সফোর্ড, গ্লাসগো এবং নিউক্যাসলের ফ্রিডম অব সিটি পুরস্কারও বাতিল করা হয়। গত বছর আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ঘটনায় মুখ না খোলায় সমালোচনার মুখে পড়েন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর সুচি। রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে গত আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রোহিঙ্গা সঙ্কটকে এশিয়ার এ অঞ্চলে সম্প্রতি সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে। মিয়ানমারের বাহিনীর ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা। তবে মিয়ানমার সরকার তা অস্বীকার করে বলে আসছে, ওই অভিযান চালানো হয়েছে ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে’। সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের আন্দোলনের কারণে দীর্ঘদিন গৃহবন্দী থাকা সুচিকে ২০০৫ সালে ফ্রিডম অব এডিনবরা সম্মাননা দেয়া হয়েছিল। সে সময় তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তুলনা করে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ লড়াইয়ের প্রতীক’ বলা হয়। রোহিঙ্গা সঙ্কট বিষয়ে এডিনবরা নগর কর্তৃপক্ষের লর্ড প্রভোস্ট ফ্রাঙ্ক রস গত নবেম্বরে সুচির কাছে লেখা এক চিঠিতে তার ‘সেই বিশাল সাহস এবং প্রভাব’ কাজে লাগিয়ে রোহিঙ্গাদের রাখাইনে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের অনুমতি দেয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু সুচির কাছ থেকে কোন সাড়া না পেয়ে ফ্রাঙ্ক রস গত বৃহস্পতিবার তাকে দেয়া সম্মাননা প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন। এডিনবরার ২০০ বছরের ইতিহাসে সুচির আগে ১৮৯০ সালে আইরিশ জাতীয়তাবাদী নেতা চার্লস পারনেলের এই পুরস্কার বাতিল করা হয়েছিল কেলেঙ্কারির এক ঘটনায়। বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে গত বছরের ২৩ নবেম্বর বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সম্মতিপত্রে সই করে। এর ভিত্তিতে দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয় এবং ১৬ জানুয়ারি ওই গ্রুপের প্রথম বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিভিন্ন বিষয় ঠিক করে ‘ফিজিক্যাল এ্যারেঞ্জমেন্ট’ স্বাক্ষরিত হয়। এরপর প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমার সরকারকে আট হাজারের মতো রোহিঙ্গার একটি তালিকা দেয়া হলেও কেউ এখনও রাখাইনে ফিরতে পারেনি।
×