ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

কয়েক হাজার অভিযোগ জমা পড়লেও ব্যবস্থা নিতে পারেনি বিটিআরসি

সাইবার অপরাধ দমনে কোন কাজেই আসছে না নতুন শর্টকোড নাম্বার

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২৫ আগস্ট ২০১৮

 সাইবার অপরাধ দমনে কোন কাজেই আসছে না নতুন শর্টকোড নাম্বার

ফিরোজ মান্না ॥ সাইবার অপরাধ দমনে বিটিআরসি নতুন শর্টকোড নাম্বার চালু করলেও ওই নাম্বার গ্রাহকদের কোন কাজেই আসছে না। ইতোমধ্যে নতুন শর্টকোড নাম্বারে কয়েক হাজার সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়লেও কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি বিটিআরসি। গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন অভিযোগ জানানোর জন্য বিটিআরসি নতুন শর্টকোড নাম্বার চালু করে। নতুন শর্টকোড নাম্বার ‘১০০’ কে বেছে নেয়া হয়েছে। এই নাম্বারে ডায়াল করলে বেশিরভাগ সময় কেউ তা ধরেও না। বিটিআরসি জানিয়েছে, ২০১৬ সালে ‘২৮৭২’ নাম্বারের একটি শর্টকোড চালু করা হয়েছিল। ওই শর্টকোড কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এবার পুরনো নাম্বার বাতিল করে নতুন শর্টকোডের মাধ্যমে সাইবার ক্রাইমসহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ জানানো সহজ হবে। এখন থেকে বিটিআরসির ‘কমপ্লেনস ফর টেলিকমিউনিকেশনস সার্ভিসের (সিটিএস)’ মাধ্যমে কলসেন্টার পরিচালনা করা আরও সহজ হয়েছে। বিটিআরসি বলেছে, এই শর্টকোডের মাধ্যমে গ্রাহকরা উপকৃত হবেন। বিটিআরসির চালু করা শর্টকোড নাম্বারে কয়েক হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু কোন অভিযোগেরই সমাধান দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। বিটিআরসির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের সমাধান ও এ সংক্রান্ত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য কমিশনের গঠনকৃত ‘কমপ্লেন ম্যানেজমেন্ট টাস্কফোর্স’ সামগ্রিক বিষয়টি তদারকি করবে। কলসেন্টার থেকে বিভিন্ন অভিযোগের সমাধান করা হবে। টেলিযোগাযোগ অপারেটরদের অনিষ্পত্তিকৃত অভিযোগ বিটিআরসির কলসেন্টার আমলে নেবে। কলসেন্টার থেকে প্রাপ্ত অভিযোগ বিটিআরসির অভিযোগ ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কর্তৃক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট অপারেটরদের কাছে পাঠানো হবে। অপারেটর থেকে অভিযোগের সমাধান বিটিআরসিকে জানানোর পর তা গ্রাহকদের জানানো হবে। বর্তমানে বিটিআরসি থেকে টেলিযোগাযোগ সেবার জন্য মোট লাইসেন্স সংখ্যা ২ হাজার ২৫টি। এই বিপুল সংখ্যক লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রহীতারা বিভিন্ন সময় নানা বিড়ম্বনার শিকার হন। গ্রাহকদের এই বিড়ম্বনার হাত থেকে রক্ষা করতে বিটিআরসি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। গ্রাহকরা যাতে নানা অনিয়মের প্রতিকার পান সেজন্য বিটিআরসির চালু করা কলসেন্টারের কাছে তারা ১০০ নাম্বারে ডায়াল করে তাদের অভিযোগ জানাতে পারবেন। বিটিআরসি জানিয়েছে, বর্তমান সরকার রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বিটিআরসি ২০২১ ভিশন বাস্তবায়নে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। দেশে ফোরজি সেবা চালু করা হয়েছে। ফোরজি সেবার মধ্য দিয়ে দেশ টেলিযোগাযোগ খাতে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে। প্রযুক্তির প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে বিপদ বাড়ছে। সাইবার ক্রাইমের ঝুঁকিও বেড়েছে। এজন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিটিআরসিও সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এছাড়া গ্রাহকদের মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে নানা ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। এসব প্রতিকূল অবস্থার সমাধান করতে বিটিআরসি একটি শর্টকোড নাম্বার দিয়েছে। ১০০ নাম্বারের শর্টকোড নাম্বারে ফোন করে যে কোন গ্রাহক যে কোন স্থান থেকে অভিযোগ জানাতে পারবেন। মোবাইল অপারেটরদের বিভিন্ন অফার ও ইন্টারনেট প্যাকেজ থেকে শুরু করে কলড্রপ সব কিছু মনিটর করা হবে। এতে গ্রাহকরা সুবিধা পাবেন। কিন্তু নতুন শর্টকোড চালুর পর গ্রাহকদের কোন অভিযোগই বিটিআরসি সমাধান করতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহক স্বার্থের কথা মাথায় রেখে বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) বোর্ড সভায় সম্প্রতি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিটিআরসির অনুমোদন ছাড়াই বিভিন্ন প্যাকেজ ও অফার দিচ্ছে মোবাইল অপারেটররা দিতে পারবে না। এসব অফার পাঠিয়ে গ্রাহকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে। গ্রাহকরা এসব অফার গ্রহণ করে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। একইভাবে ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও অফার দিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে মোবাইল অপারেটরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বলেন, এসব কিছু মাথায় রেখেই বিটিআরসি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গ্রাহক স্বার্থ রক্ষাসহ অপারেটরদের ব্যবসা পরিচালনার বিষয়টিও রয়েছে। অপারেটরদের কোন প্রকার অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না। নতুন কলরেটের পরে মোবাইল অপারেটররা যেসব অফার দেবে তা বিটিআরসির কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদন ছাড়া কেউ অফার দিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি।
×