ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

অপপ্রচার ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে হবে সাইবার কাউন্সিল

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৩ আগস্ট ২০১৮

  অপপ্রচার ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে হবে সাইবার কাউন্সিল

ফিরোজ মান্না ॥ অপপ্রচার ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে সরকার ‘ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি কাউন্সিল’ গঠন করবে। ইতোমধ্যে কাউন্সিল গঠনের একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এই কাউন্সিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব ও সাইবার ইনসিডেন্ট এক্সপার্ট টিমও গঠন করা হবে। সব কিছু মিলে সাইবার সিকিউরিটি তৈরি করার কাজ দ্রুত করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে কাউন্সিল গঠনের বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও এটা করা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি স্কুলের ছাত্রদের আন্দোলনে ঢুকে জামায়াত বিএনপির অপপ্রচারের কারণে সিকিউরিটির বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। এ কারণে সিকিউরিটি কাউন্সিল গঠনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। সূত্র জানিয়েছে, প্রযুক্তির ব্যবহার ঘটিয়ে জঙ্গীবাদ ও অপপ্রচারকারীদের প্রতিরোধ করা হবে। ইতোমধ্যে অনেক নেটওয়ার্ক ভেঙে দেয়া হয়েছে। কেউ যাতে প্রযুক্তির ব্যবহার করে আপপ্রচার ও জঙ্গীবাদে উস্কানি দিতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে। ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি কাউন্সিলের বিষয়টি মন্ত্রিসভায় তোলা হবে। মন্ত্রী সভার সম্মতি পাওয়ার পরই ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি কাউন্সিল গঠনের কাজ শুরু হবে। সাইবার অপরাধ দমন ও সাইবার নিরাপত্তা বাড়াতে বিটিআরসি আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে আরও নিবিড় যোগাযোগ ও সমন্বয় করে কাজ করার সার্বিক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সাইবার অপরাধের উপর নজরদারি জোরদার, সংঘটিত ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের শনাক্ত করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা গঠনের প্রস্তাব করে বিটিআরসি। ওই প্রস্তাবে অপরাধ দমন সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও দফতরের সমন্বয়ে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা গঠনের কথা বলা হয়। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন দফতর এবং নিরাপত্তা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নিজস্ব অধিক্ষেত্র অনুসারে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে কাজ করে আসছে। সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দেশের পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী ও বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে বিটিআরসির কর্মকর্তাদের সম্প্রতি একাধিক বৈঠক হয়েছে। সাইবার অপরাধ দমনে বিটিআরসির পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে সাইবার অপরাধ দমনে আরও উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাক, চিন্তা ও যোগাযোগের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার পাশাপাশি সুস্থ ও সাবলীল সামাজিক মাধ্যম গঠনে বিটিআরসি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়াসহ সাইবার অপরাধ দমনে বিদ্যমান জনবল ও কারিগরি সক্ষমতা দিয়ে বিটিআরসি সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা দিয়ে আসছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অপপ্রচারকারীরা বিদেশী জঙ্গী গোষ্ঠীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন মাধ্যমে ‘সাইবার ক্রাইম’ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ এই ক্রাইমের শিকার হয়ে নিজেদের মানসম্মান ধরে রাখতে পারছেন না। এমন কি নিজ ঘরের ছেলেমেয়েদেরও এখান থেকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ইন্টারনেট জগতে হাজার হাজার ‘সাইট’ রয়েছে, এই সাইটগুলো আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে বা সুন্দর প্রচ্ছদের মাধ্যমে নীরবে, নিভৃতে সাইবার জগতে টেনে নিচ্ছে তরুণ প্রজম্মকে। শুধু তরুণ প্রজম্ম এই সাইটগুলো ব্যবহার করছে-তাই নয়। এর মূল ব্যবহারকারীরা হচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র। একবার যারা ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে শুরু করে তাদের নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের অশ্লীল সাইটের সদস্য করে ফেলে। তখন অনেকেই নিজের ‘এ্যাড্রেস’ ও ‘পাসওয়ার্ড’ লিখে পর্ন ব্লগের সদস্য হচ্ছে। ‘সাইবার ক্রিমিনালদের’ হাতে বহু তরুণী শিকার হয়ে সমাজে নানাভাবে হেয় প্রতিপণ্য হয়েছে। সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ সম্পর্কে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, আইটিইউয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। কোন ওয়েব পোর্টাল অপব্যবহার হচ্ছে কিনা এমন তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া বিটিআরসির একটি টিম এ ধরনের সাইট বা ব্লগগুলো খুঁজে বের করার জন্য ওয়েব পোর্টালগুলো ‘সার্চ’ করে যাচ্ছে। সন্দেহজনক সাইটগুলো বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।
×