ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

শহিদুল আলমকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ হাইকোর্টের

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৮ আগস্ট ২০১৮

শহিদুল আলমকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ হাইকোর্টের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে উস্কানিমূলক মিথ্যা প্রচারের অভিযোগে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের মামলায় রিমান্ডে থাকা আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজত থেকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে আগামী বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে শহিদুলের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অন্যদিকে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় দায়ের করা শিশু সালমান সামি হত্যা মামলায় তিন জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছে। রিমান্ডে থাকা আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজত থেকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। শহিদুলকে রিমান্ডে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং তাকে হাসপাতালে পাঠানোর আবেদন জানিয়ে তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদের এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মোঃ ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেয়। রিট আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন ও সারা হোসেন। এছাড়া আইনজীবী শাহদীন মালিক, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও তানিম হোসেইন শাওন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। আদেশের পর ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, যেহেতু আদালত দ্রুত উনাকে হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা আশা করি, সেই পর্যন্ত তার রিমান্ড স্থগিত থাকবে। শিশু সামি হত্যায় ৩ জনের ফাঁসি হাইকোর্টে বহাল ॥ রাজধানীর দারুস সালাম থানায় দায়ের করা শিশু সালমান সামি হত্যা মামলায় তিন জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি কৃষ্ণাদেব নাথ ও বিচারপতি শহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ে সামি হত্যায় তিন আসামি মোঃ রাকিব (২০), মোঃ সৈকত খান (২০) ও মোঃ জানে আলমের (২০) মৃত্যুদ-ের সাজা বহাল রাখা হয়। একই সঙ্গে রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, আট বছরের একটি নিরপরাধ শিশু, যার জীবন এখন শুরুই হয়নি তাকে এভাবে খেলার মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার সাজা ফাঁসিরই উপযুক্ত। আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আব্দুল বাসেত মজুমদার, ফজলুল হক খান ফরিদ ও শহিদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির, সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম ও মিজানুর রহমান। মামলার বিবরণে জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১১ সালের ২৭ মে শিশু সালমান সামিকে পেয়ারা খাওয়ার কথা বলে ক্রিকেট খেলার মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে আসামিরা। পরে তারা শিশুটির লাশ কাউন্দিয়া খালে ফেলে দেয়। শিশুটির লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় শিশু সামির বাবা মোঃ হোসেন ওই দিনই দারুস সালাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। তারপরও ছেলের কোন খোঁজ না পেয়ে তিন দিন পর রাকিবকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় রাকিবকে পুলিশ গ্রেফতার করে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করলেও রাকিবের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর হয়। ডিবি এ ঘটনায় জড়িত সৈকত ও জানে আলম নামে আরও দুইজনকে গ্রেফতার করে। পরে তিন আসামিই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। ওই বছরের ১৭ অক্টোবর এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে এ মামলার শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মোতাহের হোসেন তিন জনের ফাঁসির আদেশ দিয়ে রায় দেন।
×