ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চায় আহত রাবি ছাত্র তরিকুলের পরিবার

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ৮ জুলাই ২০১৮

প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চায় আহত রাবি ছাত্র তরিকুলের পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী/ রাবি সংবাদদাতা ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলায় আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলামের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়েছে তার পরিবার। অসহায় কৃষক পরিবারটির সদস্যরা চায় তরিকুলের চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিক। শনিবার দুপুরে তরিকুলের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম জানান, তরিকুলের পা ভেঙ্গে গেছে। পা ঠিক করতে হলে অস্ত্রোপচার করতে হবে। প্রতিদিন তরিকুলের চিকিৎসার পেছনে খরচ হচ্ছে প্রায় ৫ হাজার টাকা। তার দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার প্রয়োজন। পাঁচ সদস্যের পরিবারটির একমাত্র আয়ের উৎস তাদের বাবা। তরিকুলসহ তিন সন্তানের পড়ার খরচ যোগাতে হয় তাকে। এই অবস্থায় তার দরিদ্র বাবার পক্ষে ব্যয়বহুল এই চিকিৎসার ভার বহন করা সম্ভব হবে না। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। তরিকুল রাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী। তার মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী সেপ্টেম্বরে। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক। গত ২ জুলাই বিকেলে কোটা সংস্কার অন্দোলনকারীদের পতাকা মিছিলে ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় দৌড়াতে গিয়ে সড়কে পরে গেলে তরিকুলকে একা পেয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রামদা, হাতুড়ি, লোহার পাইপ ও লাঠি দিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। এতে তার ডান পায়ের হাঁটুর নিচের দুটি হাড় ভেঙ্গে যায়। এছাড়া মাথায় গুরুতর জখম হয়। ওইদিন বিকেলে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে তার চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই রামেক হাসপাতাল থেকে তরিকুলকে জোরপূর্বক ছাড়পত্র দেয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে তাকে নগরীর রয়্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তার সহপাঠীরা চাঁদা তুলে কোন রকমে তার চিকিৎসার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। তরিকুলের শারীরিক অবস্থা জানতে চাইলে তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, তাকে যেভাবে মারধর করা হয়েছে তার সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে। একটু নড়াচড়া করলেই সে কাতরে উঠছে। চিকিৎসা বিষয়ে তিনি বলেন, তরিকুলের সহপাঠী ও পরিচিতদের সহায়তায় চিকিৎসা চলছে। তাকে দিনে দুটি ইঞ্জেকশন দিতে হয় যার প্রতিটির দাম ১৫০০ টাকা। হাসপাতালের সিট ভাড়া, ডাক্তারের ফি, ওষুধপথ্য সবমিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়ে তৌহিদুল বলেন, দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার ব্যয়ভার কীভাবে বহন করব তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি। আমার দরিদ্র পরিবারের পক্ষে তার ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ বহন করা সম্ভব নয়। আমরা খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। আমার ভাইয়ের ভবিষ্যত অনিশ্চিতের মুখে। তরিকুলকে বাঁচাতে আমরা প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা চাই। তরিকুলের সহপাঠী মতিউর রহমান বলেন, রামেক হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই তাকে রিলিজ না দিলে এতটা খরচ হতো না। প্রতিদিন তরিকুলের চিকিৎসার টাকা যোগাড় করতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারা বন্ধু ও পরিচিতদের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে চিকিৎসা চালাচ্ছেন। কিন্তু এভাবে আর্থিক সহায়তা বন্ধ হয়ে গেলে তার পরিবারের পক্ষে চিকাৎসা করানো সম্ভব হবে না বলে জানান তারা। এতে তরিকুলের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
×