ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

আশা বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের

এসডিজি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৬ জুলাই ২০১৮

এসডিজি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এমডিজির মতো টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি বাস্তবায়ন করে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এসডিজি অর্জনের টার্গেট বাস্তবায়নে আমরা এ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। বৃহস্পতিবার ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসডিজি বাস্তবায়ন পর্যালোচনা বিষয়ক জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ প্ল্যানিং কমিশনের জেনারেল ইকোনমিক ডিভিশন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গবর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিটির উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী এসডিজি বাস্তবায়ন পর্যালোচনা বিষয়ক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক মোঃ আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান স্যার ফজলে হাসান আবেদ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান, প্ল্যানিং কমিশনের জেনারেল ইকোনমিক ডিভিশনের সিনিয়র সচিব ড. সামছুল আলম প্রমুখ। তোফায়েল আহমেদ বলেন, যথাসময়ে এমডিজি অর্জন করে বাংলাদেশ জাতিসংঘে পুরস্কৃত হয়েছে। জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য ১৭ লক্ষ্যমাত্রা, ১৬৯ টার্গেট এবং ২৪১ ইন্ডিকেটর নির্ধারণ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০১৫ সালে এসডিজি অর্জনে কাজ শুরু করে। প্রথম মেয়াদের কাজ শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। ২০১৮ থেকে ২০ সাল চলবে মধ্য মেয়াদের কাজ এবং ২০২০ থেকে ২০৩০ সাল চলবে দীর্ঘ মেয়াদের কাজ। এসডিজির মধ্যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সব ধরনের দারিদ্র্য দূরীকরণের মাধ্যমে সব শ্রেণীর মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে সুষম উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে যেসব টার্গেট নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে, সেগুলো সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ৩২তম অর্থনৈতিক শক্তি। এসডিজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ২৮তম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুটি লক্ষ্য নির্ধারণ করে সংগ্রাম করেছিলেন। একটি বাঙালী জাতির মুক্তি অর্থাৎ দেশের স্বাধীনতা, অপরটি অর্থনৈতিক মুক্তি অর্থাৎ দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করা। বঙ্গবন্ধু আমাদের দেশ স্বাধীন করে দিয়েছেন। আজ তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোনার বাংলা বিনির্মাণের কঠোরভাবে কাজ করে সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭ দশমিক ৬৫ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। মানুষের মাছাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৭৪৫ মার্কিন ডলার। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। আর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ এলডিসিভুক্ত হয়। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ১৯৭২-৭৩ সালে ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল। এ বছর ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। এক সময় ছিল বৈদেশিক সাহায্যের ওপর বাজেট প্রণয়ন করা হতো, আর এখন নিজস্ব অর্থেই বাজেট ঘোষণা করছে বর্তমান সরকার। শুধু তাই নয়, ১৯৭২-৭৩ সালে বাংলাদেশ মাত্র তিনটি পণ্য পাট, চা ও চামড়া রফতানি করে আয় করত ৩৪৮ কোটি টাকা। গত বছর বাংলাদেশ ৭৭২ পণ্য ১৯৯ দেশে রফতানি করে আয় করেছে প্রায় ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যারা বাংলাদেশকে এক সময় তলাবিহীন ঝুড়ি ও বিশ্ব দরিদ্র দেশের মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল, আজ তারাই বলছে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে দরিদ্র মানুষের হার ২৪ দশমিক ৮ ভাগ এবং হতদরিদ্র মানুষের হার ১১ দশমিক ৯ ভাগে নেমে এসেছে। এসডিজি অর্জনের মধ্য দিয়ে অতিদরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৩ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।
×