ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন

জামিন পেলেন নাজিব

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ৫ জুলাই ২০১৮

জামিন পেলেন নাজিব

জামিন পেলেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। মঙ্গলবার মালয়েশিয়ান এ্যান্টি করাপশন কমিশন (এমএসিসি) কুয়ালালামপুরের ব্যক্তিগত বাসভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করার পর বুধবার ১০ লাখ রিঙ্গিতে (৩ লাখ ৩৭ হাজার ডলার) মুচলেকায় জামিন পান। কুয়ালালামপুরের হাইকোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করে। এএফপি ও গার্ডিয়ান। এমএসিসির কর্মকর্তারা মঙ্গলবার নাজিবকে গ্রেফতার করার পর পুত্রাজায়ায় তাদের প্রধান কার্যালয়ে তাকে আটক রাখে। রাষ্ট্রীয় তহবিল ওয়ান এমডিবির সাবেক শাখা এসআরসি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি তদন্তের অংশ হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসআরসি ইন্টারন্যাশনালের ৪ কোটি ২০ লাখ ডলার নাজিবের ব্যক্তিগত ব্যাংক এ্যাকাউন্টে কিভাবে গেল তা নিয়ে এমএসিসি এখন তদন্ত করাছে। তহবিল তসরুফ, বিশ্বাস ভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহার - এই তিনটি ধারায় নাজিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বুধবার তার জামিন আবেদনে সম্মতি দিয়ে বিচারক মোহাম্মদ সুফিয়ান জামিনের এ অর্থ নির্ধারণ করেন। তিনি নাজিব রাজাককে তার দুটি কূটনৈতিক পাসপোর্ট জমা দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার তাকে তার দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। রাষ্ট্রীয় অর্থ তহবিল ওয়ানএমডিবি (ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বারহাদ) থেকে ৭০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দেশটিতে মে মাসে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নাজিবের হেরে যাওয়ার পেছনে দুর্নীতির অভিযোগ একটি বড় ইস্যু ছিল। ওই নির্বাচনে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে জেতেন ৯২ বছর বয়সী মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েই ওয়ানএমডিবির তহবিল তসরুফের ঘটনায় পুনরায় তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেন। তিনি বিশাল অঙ্কের এই অর্থ উদ্ধারের অঙ্গীকার করেন। নাজিব গ্রেফতার হওয়ার পর তার ও তার স্বজনদের বাসভবনে সরকারী দফতরের লোকজন তল্লাশি চালিয়ে মূল্যবান সামগ্রী উদ্ধার করেছে। নাজিবের বিলাসবহুল ভবন এবং মূল বাড়িসহ সংশ্লিষ্ট ছয়টি স্থানে অভিযান চালিয়ে নগদ অর্থ, গয়না, হাতব্যাগসহ ২৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার মূল্যের সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ৪০৮টি ব্যাংক হিসাব। এসব হিসাবে রয়েছে ১১০ কোটি রিঙ্গিত। ওয়ানএমডিবির তহবিল থেকে এসব ব্যাংক হিসাবে অর্থ পাঠানো হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে, যার মধ্যে ৮১ জন ব্যক্তি ও ৫৫টি কোম্পানি রয়েছে। ২০১১ সালের মার্চ থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসব এ্যাকাউন্টে প্রায় ৯০০ লেনদেন হয়েছে। ওয়ানএমডিবির অর্থ আত্মসাৎ ও তসরুফের সঙ্গে এ্যাকাউন্টগুলোর যোগসূত্র থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০০৯ সালে নাজিবের প্রতিষ্ঠিত ওয়ানএমডিবির তহবিল থেকে অর্থ আত্মসাত ও পাচারের অভিযোগের তদন্ত চলছে ছয়টি দেশে। কিভাবে ৪ কোটি ২০ লাখ রিঙ্গিত এসআরসি ইন্টারন্যাশনাল থেকে নাজিবের এ্যাকাউন্টে গেল তা খতিয়ে দেখছে এমএসিসি। ২০১১ সালে এসআরসি তৈরি করেছিলেন তৎকালীন নাজিব সরকার। পুত্রজায়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয় থেকে কুয়ালালামপুরের আদালত চত্বরে নাজিবকে নিয়ে আসার পুরো চিত্র সরাসরি সম্প্রচার করে মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বারনামা। সেশন আদালতে অভিযোগের শুনানিতে হাজির সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে একনজর দেখতে আদালত চত্বরে গণমাধ্যম ও জনসাধারণের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। নাজিবের ইউএমএনও দলের নেতাকর্মীরা সেখানে তাদের দলের শীর্ষ নেতার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বেশ কিছু প্ল্যাকার্ডও প্রদর্শন করেন।
×