ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে প্রবল বর্ষণে ফের নিচু এলাকা প্লাবিত

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ৪ জুলাই ২০১৮

চট্টগ্রামে প্রবল বর্ষণে ফের নিচু এলাকা প্লাবিত

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে প্রবল বর্ষণে আবারও তলিয়েছে নগরীর নিচু এলাকা। ম্যানহোলে পড়ে দুই ঘণ্টার জন্য নিখোঁজ থাকে এক কিশোর। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। টানা বর্ষণে জনজীবনে নেমে আসে স্থবিরতা। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। মঙ্গলবার দিনভর ছিল কখনও ভারি থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত। এর ফলে অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকার সড়কগুলো পানির নিচে চলে যায়। অনেক বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিচতলায় পানি ঢুকে যায়। যানবাহন চলাচলও বিপর্যস্ত হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে ব্যাহত হয় পণ্য লাইটারিং। তবে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায়। সেখানে মোশারফ হোসেন নামের ১৩ বছরের এক কিশোর ম্যানহোলে পড়ে নিখোঁজ হয়ে গেলে ব্যাপক উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম বন্দর থানার ওসি মইনুল জানান, নগরীর আগ্রাবাদ গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় বেলা ১২টার দিকে একটি খোলা ম্যানহোলে পড়ে যায় কিশোর মোশারফ। ভেতর থেকে নিখোঁজ এ ছেলেটির চিৎকার শুনে জড়ো হয় পথচারীরা। পরে তারা থানা এবং ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে দ্রুত উদ্ধার কাজ শুরু হয়। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। শিশুটির অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকগণ। গত সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় বৃষ্টিপাত। রাতভর প্রবল বর্ষণে প্লাবিত হতে থাকে নগরীর নিচু এলাকাগুলো। বিশেষ করে আগ্রাবাদ সিডিএ, ছোটপুল, বেপারিপাড়া, হালিশহর, মুরাদপুর, চকবাজার, কাপাসগোলা, চাক্তাই এলাকার অবস্থা হয় করুণ। সড়কে হাঁটু থেকে বুক পানি পর্যন্ত হয়ে যায়। এর ফলে নগরীর বড় একটি এলাকাজুড়ে যানবাহন চলাচল থমকে যায়। চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় পথচারী ও যাত্রীদের। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২৬৪ মিলিমিটার। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আরও দুয়েকদিন এ অবস্থা বিরাজ করতে পারে। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় এটি প্রকৃতির স্বাভাবিক আচরণ। সাগরে এখন কোন নি¤œচাপ কিংবা লঘুচাপ নেই। ফলে সমুদ্র বন্দরগুলোর জন্য কোন সতর্কতা সঙ্কেতও নেই। তবে বাতাস এবং ঢেউয়ের কারণে মাছ ধরার নৌকা ও ছোট ছোট জলযানগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে, ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবান এবং রাঙ্গামাটির যোগাযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পাহাড়ী ঢলের কারণে রাউজান এলাকায় রাস্তা ডুবে যাওয়ায় সকালে রাঙ্গামাটির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। একইভাবে সাতকানিয়ার বাজালিয়া এলাকায় সড়ক প্লাবিত হওয়ায় বান্দরবানের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে দুুপুরের পরে পরিস্থিতির উন্নতি হলে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
×