ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জাতীয় নাট্যশালায় নিত্যপুরাণ নাটকের চৌদ্দতম মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২৯ জুন ২০১৮

জাতীয় নাট্যশালায় নিত্যপুরাণ নাটকের চৌদ্দতম মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাঝে রমজান ও ঈদের কারণে প্রায় মাসখানেক নিষ্প্রভ ছিল ঢাকার মঞ্চপাড়া। ঈদের ছুটির শেষে আবার সরব হয়েছে রাজধানীর নাট্যমঞ্চ। এখন প্রতিদিনই মঞ্চস্থ হচ্ছে বিভিন্ন নাট্যদলের বিভিন্ন প্রযোজনা। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলসহ বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নিয়মিত নাটকের প্রদর্শনী। সেই স্র্রোতধারায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হলো দর্শক সমাদৃত নাটক নিত্যপুরাণ। নাট্যদল দেশ নাটকের আলোচিত প্রযোজনাটির চৌদ্দতম প্রদর্শনী হলো এদিন। মহাভারতের একলব্যের আখ্যান অবলম্বনে নাটকটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা মাসুম রেজা। প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নাট্যকার মাসুম রেজা বলেন, মহাভারত পাঠকালে একলব্যকে আমার খুব কাছের মানুষ বলে মনে হয়েছে। মনে হয়েছে এ যেন আমি আমরা ও সাধারণ মানুষ। একলব্যকে আমার দেখতে ইচ্ছে হয়েছে অন্যভাবে, পা-ব কিংবা কৌরবদের চেয়েও কুশলী বীররূপে। তাই নিত্যপুরাণ লিখতে গিয়ে নাটকটিকে আমি সময়-নিরপেক্ষ নাটক হিসেবে দাঁড় করাতে চেয়েছি। অর্থাৎ আমি একইসঙ্গে মহাভারতের ভেতর থাকতে বর্তমান সময়কে উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছি। নাটকের কাহিনীতে উঠে এসেছে নিষাদরাজ হিরণ্যধনুর পুত্র একলব্যের কথা। নি¤œবর্ণের সন্তান একলব্যকে ঘিরেই প্রযোজনাটির বিস্তার ঘটেছে। পঞ্চপা-বের সঙ্গে অস্ত্রশিক্ষা লাভের জন্য শিক্ষাগুরু দ্রোণাচর্যের কাছে যায় একলব্য। তবে নিচু জাত বলে একলব্যকে শিষ্য হিসেবে গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় দ্রোণাচার্য। দ্রোণাচার্যের শিষ্য অর্জুন অর্থাৎ পঞ্চপা-ব একলব্যের কাছে পরাজিত হয় ধনুর্বিদ্যায়। অস্ত্র প্রতিযোগিতার শর্ত অনুসারে মৃত্যুর মুখোমুখি পঞ্চপা-ব। কিন্তু দ্রোণাচার্যের কুটিলতায় বেঁচে যায় পঞ্চপা-বের জীবন। এক সময় নিত্যপুরাণ নাটকে একলব্যের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকের হৃদয়ের দাগ কেটেছিলেন অভিনেতা দিলীপ চক্রবর্তী। এই অভিনেতার মৃত্যুর দীর্ঘদিন প্রযোজনাটির প্রদর্শনী বন্ধ থাকার নতুন আবার নবযাত্রায় ফিরে আসে নিত্যপুরাণ। নতুন অভিযাত্রায় একলব্য চরিত্রে অভিনয় করছেন মামুন চৌধুরী রিপন। আর দ্রৌপদী চরিত্রে রূপ দিয়েছেন বন্যা মির্জা। এছাড়াও প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন কামাল আহমেদ, ফিরোজ আলম, লরেন্স উজ্জ্বল গোমেজ, হোসাইন নিরব, মাইনুল হাসান মাঈন, সমাপন সরকার, সুষ্মিতা সাহা, জলি চৌধুরী, তামিমা তিথি, মেঘলা মায়া, ইসমেত জেরিন, কাজী লায়লা বিলকিস, সানজিদা লতা, সালমান লিমন ও আবিদুর রহমান আদর। মঞ্চসজ্জা পরিকল্পনা করেছেন কামাল উদ্দিন কবির। নাসির উদ্দিন শেখের সঙ্গীত পরিকল্পনায় আবহ সঙ্গীতে ছিলেন রশিদ খান। আলোক পরিকল্পনা করেছেন নাসিরুল হক খোকন। বাংলা একাডেমি ও নেপাল একাডেমি প্রতিনিধিদলের মতবিনিময় ॥ বাংলা একাডেমি ও নেপাল একাডেমির মধ্যে দুই দেশের সাহিত্য এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হলো বৃহস্পতিবার। এদিন সকালে একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে এই সভা হয়। একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় একাডেমির পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, কবি রুবী রহমান, অধ্যাপক ফকরুল আলম, কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, কবি আসলাম সানী এবং বাংলা একাডেমির পরিচালকবৃন্দ। নেপাল একাডেমির পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক দীনেশ রাজ পান্ট, অধ্যাপক জীবেন্দ্র দেও গিরি, ধ্রুব গোপাল মাধিকারমী, হরিপ্রসাদ তিমিলসিনা, কবি সুরেন্দ্র কাজী সিন্দুরাকার, লেখক শশী লুমুমৌ এবং কবি নর্মদেশ্বরী সাত্যাল। স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির সচিব ও ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। সভায় আলোচকরা উভয় দেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলেন। নেপালী ভাষায় স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন হরিপ্রসাদ তিমিলসিনা, কবি সুরেন্দ্র কাজী সিন্দুরাকার, লেখক শশী লুমুমৌ এবং কবি নর্মদেশ্বরী সাত্যাল। বাংলা ভাষায় স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন রুবী রহমান ও আসলাম সানী। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৬ সালে ঢাকায় বাংলা একাডেমি ও নেপাল একাডেমির মধ্যে দুই দেশের ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি-দর্শন ও সামাজিক বিজ্ঞান প্রভৃতি ক্ষেত্রে নানামাত্রিক গবেষণা, শিক্ষা ও উন্নয়ন সম্পর্কিত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। চারুকলার বকুলতায় আজ বর্ষা উৎসব ॥ সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আজ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে বর্ষা উৎসব। সকাল সাড়ে সাতটায় শুরু রূপময় ঋতু বর্ষা আবাহনের আয়োজনে। শখর ম-লের বর্ষার রাগ পরিবেশনার মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হবে। উৎসবে একক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ফাহিম হোসেন চৌধুরী, ড. লিনা তাপসী খান, সুমন মজুমদার, অনিমা রায় ও মামুন জাহিদ খান। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করবে নৃত্যজন, নটরাজ, স্পন্দন, বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস্, স্বপ্ন বিকাশ কেন্দ্রের শিল্পীরা। একক আবৃত্তি পরিবেশন করবেন নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি ও মাশকুর-এ-সাত্তার কল্লোল। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করবে স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র, বহ্নিশিখা, পঞ্চভাস্কর, সমস্বর ও সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। ধরিত্রীকে সবুজ করার লক্ষ্যে প্রতীকীভাবে শিশুদের মাঝে বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা বিতরণ করবেন বর্ষা কথনে অংশগ্রহণকারী অতিথিবৃন্দ। বর্ষা কথনে অংশ নেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান, সম্মিলিতি সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. নিগার চৌধুরী।
×