ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

সিডিউলভুক্ত ছাড়া হজে অতিরিক্ত ফ্লাইটের অনুমতি দেবে না সৌদি

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৪ জুন ২০১৮

সিডিউলভুক্ত ছাড়া হজে অতিরিক্ত ফ্লাইটের অনুমতি দেবে না সৌদি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এ বছর হজের জন্য সুনির্দিষ্ট করে দেয়া সিডিউলভুক্ত ফ্লাইট ছাড়া অতিরিক্ত কোন শ্লটের অনুমতি দেবে না সৌদি আরব। এতে বেসরকারী হজ এজেন্সিগুলো বেশ চাপের মুখে পড়েছে। আগামী ১৪ জুলাই হজ ফ্লাইট শুরু করার প্রস্তুতি নেয়া হলেও এখনও অনেক এজেন্সি সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি। বাড়ি ভাড়া না করা গেলে সৌদির চাপিয়ে দেয়া সিডিউল রক্ষা করা বেসরকারী হজ এজেন্সিগুলোর জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। এ অবস্থায় এবারও সৌদির দৃঢ় অবস্থান কিভাবে মোকাবেলা করা হবে সে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হাব। সংগঠনের মহাসচিব এ জটিলতার জন্য বাংলাদেশের ব্যাংকিং চ্যানেলের ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন। বলেছেন-সৌদিতে বাড়ি ভাড়ার জন্য সুনির্দিষ্ট সময়েই এজেন্সিগুলো ব্যাংকিং রেমিটেন্স জমা দিয়েছে। কিন্তু ব্যাংকিং চ্যানেলগুলো সেই টাকা এখনও সৌদিতে পাঠাতে পারেনি। এতে অনেক এজেন্সিই বাড়ি ভাড়া করতে ব্যর্থ। তিনি বলেন-আগামী দুতিন দিনের মধ্যে যে করেই হোক বাড়িভাড়ার বিষয়টি শেষ করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে না করা গেলে বড় ধরনের জটিলতা দেখা দিবে। যার দায় হাব নিতে পারে না। এ দিকে কেন হজ এজেন্সিগুলোর জমাকৃত টাকা সৌদি আরবে পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছে ব্যাংকিং চ্যানেলগুলো তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে হাব। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে- আগামী ৩০ জুনের আগে ব্যাংকিং চ্যানেলগুলো এ বিষয়ে খুব একটা তৎপর হওয়ার লক্ষণও নেই। জুনের শেষে বছরের হিসাব নিকাশ চরম ব্যস্ততায় কাটানো ব্যাংকগুলোর কাছে হজ ফ্লাইটের সিডিউলের বিষয়টি উপেক্ষিত। উল্লেখ্য, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সিদ্বান্তে জানা যায়- সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেড ও সৌদি এয়ারলাইনস ঘোষিত ২০১৮ সালের হজ ফ্লাইট সিডিউল অনুযায়ী এখনও হজযাত্রীদের অনুকূলে বিমান টিকিট ক্রয় করে ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা করেনি, তাদের অনতিবিলম্বে এ কার্যক্রম শেষ করে নিশ্চিত হতে বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে বলা হয়, এ বছর নির্ধারিত সিডিউলভুক্ত ফ্লাইটে হজযাত্রী পরিবহনে ব্যর্থ হলে সৌদি আরবে কোন অবস্থাতেই অতিরিক্ত শ্লট বরাদ্দ পাওয়া যাবে না। ফলে হজ এজেন্সির গাফিলতির কারণে কেউ হজে যেতে ব্যর্থ হলে এর দায়দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকেই নিতে হবে। এছাড়া ওই এজেন্সির বিরুদ্ধে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। হজ ফ্লাইটের সিডিউল বাতিলের পর নতুন শ্লট না পাওয়া গেলে কি ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে প্রশ্ন করা হলে ধর্মবিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুন দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, চেষ্টা চলছে যাতে এ ধরনের কোন জটিলতা দেখা না দেয়। প্রতি বছরই হজের শুরুতে এ ধরনের জটিলতার আশঙ্কা দেখা দেয়, কিন্তুু শেষ মুহূর্তে ঠিকই কোন না কোন ভাবে তার নিরসন ঘটে। সৌদি আরব প্রতি বছরই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে নতুন নতুন কিছু শর্ত জুড়ে দেয় যা প্রাথমিকভাবে কঠিন ও জটিল বলে মনে হয়। পরে দেখা যায় সেটার কিছু না কিছু বাস্তবে মানতে হয় হজ এজেন্সিগুলোকে। এভাবেই মূলত বছর বছর হজ ব্যবস্থাপনা বেশ সুশৃঙ্খল হয়ে উঠছে। সৌদি আরব সিডিউল বাতিলের বিপরীতে নতুন শ্লট বরাদ্দ না দেয়ার সিদ্বান্তে অটল থাকলে হজ এজেন্সিগুলোকে তাই মানতে হবে। উল্লেখ্য, এ বছর হজ কার্যক্রমে অংশ নিতে ৭৭৪টি এজেন্সিকে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। যেসব হজ এজেন্সি হালনাগাদ কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেনি এবং এর আগে বিভিন্ন অভিযোগে শাস্তি এবং জরিমানার মুখোমুখি হয়েছে তাদের প্রথম পর্যায়ে অনুমোদনের বাইরে রেখেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। গত বছরও হজ কার্যক্রমে অংশ নেয়া ১৯৩টি এজেন্সির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ও সৌদি আরব পর্বে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই-বাছাই করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে ৬৪টি হজ এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল ও জরিমানা করা হয়েছে। লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে ১৭টি এজেন্সির। এদের মধ্যে কয়েকটি জোর তদবির চালিয়ে শাস্তি এড়াতে সক্ষম হয়েছে।
×