ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

দাতাদের সহায়তায় ১৬৭ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প

দুর্যোগ মোকাবেলায় সাত জেলায় ২ লাখ ঘরবাড়ি প্রস্তুত করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ২৩ জুন ২০১৮

  দুর্যোগ মোকাবেলায় সাত জেলায় ২ লাখ ঘরবাড়ি প্রস্তুত করা হচ্ছে

আনোয়ার রোজেন ॥ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও ঝুঁকি মোকাবেলায় ১৬৭ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা ৭ জেলার বাসিন্দাদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সক্ষমতার উন্নয়ন করা হবে। জেলাগুলো হলো-কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এসব জেলায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় ২ লাখ ঘরবাড়িকে যথাযথভাবে প্রস্তুত করা হবে। প্রকল্পটিতে ইউএনডিপি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউএনসিডিএফ ও সিডা মোট ১৬১ কোটি টাকার সহায়তা দিচ্ছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জনকণ্ঠকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমরা দায়ী নই। অথচ সবচেয়ে বেশি ক্ষতি ও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি আমরাই। সর্বশেষ বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচকে বিশ্বের সবচেয়ে নাজুক ১০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশর অবস্থান ৬ নম্বরে। এক্ষেত্রে ঝুঁকি মোকাবেলায় জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত। যদিও ঝুঁকি মোকাবেলায় আমাদের নিজস্ব প্রস্তুতি রয়েছে। এক্ষেত্রে ঋণের বদলে উন্নয়নসহযোগীদের অনুদান সহায়তাকেও আমরা স্বাগত জানাই। জানা গেছে, লোকাল গবর্নমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ শীর্ষক প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষত ইউনিয়ন পরিষদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রস্তুত করা। এজন্য ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন পরিকল্পনায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিবেচনায় নেয়া, জলবায়ু পরিবর্তনসহনশীল পরিকল্পনা ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ুসহিষ্ণু কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এছাড়া প্রান্তিক পর্যায়ে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের জলবায়ু অভিযোজনে সহায়তাও প্রদান করা হবে। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রকল্প এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সংক্রান্ত বেজ লাইন সার্ভে পরিচালনা, ঝুঁকিগ্রস্ত ১৭ হাজার অতিদরিদ্র পরিবারকে অভিযোজন সহায়তা প্রদান এবং ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ১ লাখ ৮৩ হাজার পরিবারকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে। এলজিইডি সূত্র জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকার ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি প্রণয়ন করেছে। এরই অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাপানভিত্তিক সংস্থা জাইকাসহ অন্যান্য দাতা সংস্থাগুলো উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে বিভিন্ন খাতে সহায়তা করেছে। প্রকল্পভুক্ত সাত জেলার মধ্যে কুড়িগ্রাম ও সুনামগঞ্জ ছাড়া অন্য জেলাগুলো উপকূলবর্তী। এর মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলের বাঁধ নির্মাণ বা শক্তিশালীকরণ, পরিবর্তনজনিত সহনশীলতা অর্জনে ওই সব অঞ্চলের অবকাঠামোর উন্নয়ন চলমান রয়েছে।
×