ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চার সংগঠনের সংবাদ সম্মেলন

বাজেট তথ্যপ্রযুক্তিবান্ধব নয়

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১১ জুন ২০১৮

বাজেট তথ্যপ্রযুক্তিবান্ধব নয়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এবারের বাজেট তথ্য প্রযুক্তি বান্ধব হয়নি বলেই মত দিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। তাদের দাবি, দেশে উৎপাদিত হয় এমন বিদেশী সফটওয়্যার আমদানিতে শুল্ক কমানো, তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানো ও ইন্টারনেটের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার না করায় দেশীয় শিল্প ও আইটি খাত ক্ষতির মুখে পড়বে। একই সঙ্গে ইন্টারনেটের যন্ত্রপাতি (হার্ডওয়্যার) আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বড় প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করছে তারা। রবিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় আইটি খাতের সংশ্লিষ্টরা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার এ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতিসহ কয়েকটি সংগঠন এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানোর ফলে খাতটির উন্নয়নের গতি শ্লথ হবে। বিদেশী সফটওয়্যার আমদানির ক্ষেত্রে এইচএস কোডে ‘আদার’ সফটওয়্যার লেখা থাকায় দেশীয় সফটওয়্যার শিল্পে প্রভাব পড়বে। হার্ডওয়ারের ওপর ভ্যাট আরোপ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ইন্টারনেটের ভ্যাট না কমানো ও ডিভাইস আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর ফলের খাতটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ বেসিসের সিনিয়র সহসভাপতি ফারহানা এ রহমান বলেন, ২০২৪ সাল পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর মওকুফ রয়েছে। আবার নতুন করে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবার (আইটিইএস) ভ্যাট বাড়ানো একটি সাংঘর্ষিক বিষয়। আর সফটওয়্যার আমদানিতে শুল্ক কমানোর ফলে দেশীয় শিল্প নিরুৎসাহিত হবে। বাজেট পাস হওয়ার আগেই সরকারের এগুলো বিবেচনায় নেয়া উচিত। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘অপারেটিং সিস্টেমস, ডাটাবেজ, ডেভেলপমেন্ট টুলস ও সাইবার সিকিউরিটি আমদানির ওপর থেকে শুল্ক কমানোর জন্য বেসিস থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু ঢালাওভাবে এগুলোর পাশাপাশি ‘আদার’ কম্পিউটার সফটওয়্যার এর আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে এবং মূসক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় এমন সফটওয়্যারও বিদেশ থেকে আমদানি উৎসাহিত হবে। ফলে দেশীয় শিল্প মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। সুতরাং আদার কম্পিউটার সফটওয়্যার আমদানির ওপর শুল্ক ও মূসক যথারীতি ২৫ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ বহাল রাখার জোর দাবি জানাচ্ছি।’ এতে আরও বলা হয়, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর সেবার ওপর ভ্যাট ৪ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর সেবার ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার প্রস্তাব করছি। ইন্টারনেটের ওপর ভ্যাট ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের পরিপন্থী। তাই এটি প্রত্যাহার করা দরকার।’ সংগঠনের নেতারা বলেন, ভার্চুয়াল বিজনেস ও অনলাইনে পণ্য বিক্রয় নিয়ে যেহেতু ই-কমার্স উদ্যোক্তাগণের মধ্যে একটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনে এ বিষয়ের সংজ্ঞা স্পষ্টিকরণ করা প্রয়োজন। ইন্টারনেট যন্ত্রপাতি যেমন মডেম, ইথারনেট ইন্টারফেস কার্ড, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সুইচ, হাব, রাউটার, সার্ভার ব্যাটারির ওপর বর্তমানে ২২ দশমিক ১৬ শতাংশ ভ্যাট ও শুল্ক আরোপিত হয়েছে, যা এ শিল্পের প্রসারে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা এবং তা কমিয়ে শূন্য শতাংশ করার আবেদন করা হয়েছিল। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
×