বিডিনিউজ ॥ জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডায় যাওয়ার পর কুইবেকে দেশটির গবর্নর জেনারেল জুলি পায়াতের দেয়া নৈশভোজে অন্য নেতাদের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লা সেটাডেল ডি কুইবেকে শুক্রবারের এই নৈশভোজে জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে যোগ দিতে আসা সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। কমনওয়েলথ রাষ্ট্র কানাডায় ব্রিটিশ রানির প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন গবর্নর জেনারেল, তিনিই কানাডার রাষ্টপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, নৈশভোজে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নগুয়েন জুয়ান ফুক, হাইতির প্রেসিডেন্ট ও ক্যারিবিয়ান কমিউনিটির চেয়ারপার্সন জোভেনাশ মইসসহ অন্যান্য অতিথির সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন শেখ হাসিনা। নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।
কানাডার প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে যোগ দিতে শুক্রবার দুপুরে কুইবেকে পৌঁছান শেখ হাসিনা। এয়ার কানাডার একটি ফ্লাইটে স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা ২টায় কেব্যাক সিটির জিন লিসএজ বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান কানাডায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান ও কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক জনাথন সুভে। কেব্যাকে হোটেল শ্যাতো ফঁতেনেকে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ব অর্থনীতির সাত পরাশক্তির জোট জি-সেভেন সম্মেলনের পাশাপাশি আঞ্চলিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনার জন্য জোটের বাইরে থেকে বিভিন্ন দেশকে আলাদা বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। একেই বলা হয় জি-সেভেন আউটরিচ মিটিং।
এবার এই সম্মেলনে অংশ নিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধান ও কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কানাডা সরকার। শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে রওনা হয়ে দুবাই ও টরন্টতে যাত্রা বিরতির পর কেব্যাকে পৌঁছান।
জি-সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও জি টোয়েন্টি জোটের বর্তমান সভাপতি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ক্যারিবিয়ান কমিউনিটির চেয়ার হাইতির প্রেসিডেন্ট, জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট, মার্শাল আইল্যান্ডসের প্রেসিডেন্ট, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী, আফ্রিকান ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ার রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট, সেসেলসের প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের এমডি, অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) সেক্রেটারি জেনারেল, জাতিসংঘ মহাসচিব এবং বিশ্বব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অংশ নিচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে ২০১৬ সালে জাপানে এবং ২০০১ সালে ইতালিতে জি সেভেন আউটরিচ সম্মেলনে যোগ দেন। কানাডা ছাড়া জি সেভেনের বাকি ছয় সদস্য দেশ হলো ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। এবারের আউটরিচ সম্মেলনে সমুদ্রকে দূষণ থেকে রক্ষা করা এবং উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের প্রতিকূলতা মোকাবেলার সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় খুঁজতে আলোচনা হবে।
সফরের তৃতীয় দিন রবিবার সকালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠকের পর টরন্টো যাবেন শেখ হাসিনা। সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। টরন্টো থেকে প্রধানমন্ত্রী দেশের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে সোমবার সকালে কানাডার মিয়ানমার বিষয়ক দূত বব রে, কানাডার সাসকাচোয়ান প্রদেশের উপপ্রধানমন্ত্রী জেরেমি হ্যারিসন এবং কমার্শিয়াল কোঅপারেশন অব কানাডার প্রেসিডেন্ট মার্টিন জাবলোকি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। কানাডার স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে টরন্টো থেকে দেশের পথে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। দুবাইয়ে যাত্রা বিরতি করে মঙ্গলবার রাতে তার ঢাকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে।